মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগরে টিলা কেটে রিসোর্ট তৈরি করছে তাওসী গার্ডেন নামে একটি রিসোর্ট। এতে টিলাটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বারবার টিলা কেটে হোটেল-রিসোর্ট তৈরির কারণে পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদীরা।
গত মঙ্গলবার রাধানগর এলাকায় সরজমিন দেখা যায়, টিলার নিচের অংশ কেটে মাটি সরিয়ে নিচ্ছেন কয়েকজন শ্রমিক। টিলার নিচের অংশ এমনভাবে কাটা হয়েছে, সামান্য বৃষ্টি হলে ওপর থেকে টিলাটি ধসে পড়বে। এ ঘটনা আড়াল করতে কাটা অংশে আলগা ঘাস লাগানো হয়েছে। যেন কাটা অংশ বোঝা না যায়।
স্থানীয়রা জানান, নির্মাণাধীন রিসোর্টের ভূমি মালিক শুভাস পাল নুরুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তিকে জায়গাটি দীর্ঘমেয়াদি (লিজ) বন্দোবস্ত দেয়। নুরুল ইসলাম চৌধুরী লিজ-বন্দোবস্ত নিয়ে সেখানে তাওসী গার্ডেন নামে একটি রিসোর্ট নির্মাণকাজ শুরু করেন। এতে নির্মাণাধীন রিসোর্টের পেছনের একটি প্রাকৃতিক টিলার অংশবিশেষ কেটে মাটি ভরাট করা হয়।
তবে কৌশলে টিলার নিম্নদেশ কেটে গভীর গর্ত করায় যেকোনো সময় সম্পূর্ণ ধসে পড়ার উপক্রম হয়েছে। ভূমি মালিক শুভাষ পাল বলেন, টিলাটি আগেই কাটা ছিল। এখন আমরা সামান্য জায়গা কেটে সমান করেছি। এখানে রিসোর্টের কয়েকটি ইকো-ঘর হবে এবং একটি পানির ধারা তৈরি হবে। আমরা টিলার বেশি জায়গা কাটিনি। যে জায়গা কাটা হয়েছে সেখানে ঘাস লাগানো হবে। রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী পরিচয়দানকারী নুরুল ইসলাম চৌধুরী টিলা কাটার কথা অস্বীকার করে বলেন, পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে আমরা এই রিসোর্টটি তৈরি করছি। এখানে কোনো টিলা কাটা হয়নি। পাহাড় রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে আমরা বারবার অভিযোগ দেই কিন্তু প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান ছাড়া কিছুই করে না। গত পঞ্চাশ বছরে এখানকার প্রায় ৫০ ভাগ পাহাড়-টিলা কেটে ফেলা হয়েছে। এর ফলে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, যেহেতু পাহাড় বা টিলা কাটা অপরাধ, আমরা আশা করবো প্রশাসন এসব বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
প্রশাসনে যোগাযোগ করা হলে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, পাহাড় বা টিলা কাটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। আমি শিগগিরই বিষয়টি দেখছি। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।