× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

৫ বছরে ২৬ হাজার ৬৯৫ ধর্ষণ মামলা

দেশ বিদেশ

রাশিম মোল্লা
৪ মার্চ ২০২১, বৃহস্পতিবার

পাঁচ বছরে সারা দেশের থানাগুলোতে ২৬ হাজার ৬৯৫টি ধর্ষণ মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩৩১টি, ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৬৮৩টি, ২০১৮ সালে ৪ হাজার ৬৯৫টি, ২০১৯ সালে ৬ হাজার ৭৬৬টি ও ২০২০ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে ৬ হাজার ২২০টি মামলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চে পুলিশ মহাপরিদর্শকের পক্ষে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ধর্ষণের মামলা ১৮০ কার্যদিবসে বিরতিহীনভাবে নিষ্পত্তি করতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। ওই নির্দেশন বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম বা তার প্রতিনিধি (অতিরিক্ত সচিব পদমর্যদার নিচে নয়) ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব বা তার প্রতিনিধি (অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার নিচে নয়)। আদালতের নির্দেশে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদন গতকাল হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. রেজাউল করিম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনটি দাখিল করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান। প্রতিবেদনে ধর্ষণ সংক্রান্ত মামলার বিচারের সময়সীমা নিয়ে বিধান পালনে উচ্চ আদালতের আদেশ অনুসারে একটি মনিটরিং টিম গঠনের কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। প্রতিবেদন দেয়ার পর এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ২৩শে মে দিন রেখেছেন আদালত। পরে মানবাধিকার কর্মী ইয়াদিয়া জামান মানবজমিনকে বলেন, বহু ধর্ষণ মামলা রয়েছে, যেসব মামলার বিচার ১০-১২ বছরেও শেষ হয় না। একটা সময় আসামিরা জামিন পেয়ে যান। তবে মনিটরিং টিম গঠন করায় এখন থেকে ধর্ষণ মামলা কিছুটা হলেও গতি পাবে।
গত ১৪ই জানুয়ারি, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ) এর এক অনুসন্ধানে ২৫টি মামলার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হওয়া অন্তত ২৫টি ধর্ষণ মামলার বেশির ভাগ আসামি জামিন পেয়েছেন। যদিও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ অনুযায়ী তাদের জামিন পাওয়ার কথা নয়। এসব মামলার বেশির ভাগ আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার ২৪ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে জামিন পেয়েছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে মামলাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। ৭টি সহযোগী সংস্থার মাধ্যমে দেশের ১০টি জেলার ফলোআপকৃত ২৫টি ধর্ষণ মামলার বর্তমান অবস্থা এবং ধর্ষণ মামলা পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতা ও দীর্ঘসূত্রতার কারণগুলো খুঁজে বের করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন। এতে বলা হয়, বর্তমানে ২৫ আসামির মধ্যে মাত্র তিনজন কারাগারে আছেন, বাকিরা মুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং মামলাকে প্রভাবিত করছে। প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, থানা পুলিশ এবং বিচার প্রক্রিয়ায় ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীকেই নানাভাবে দোষারোপ করা হয়। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীর প্রতি ইচ্ছাকৃত খারাপ আচরণ করেন। এমনকি আইনে ধর্ষণের অপরাধ আপোস অযোগ্য হলেও, পারিপার্শ্বিক চাপে আপোস রফার ক্ষেত্রে আদালত অনেক সময় নির্লিপ্ত থাকেন।
এমজেএফ জানায়, ২৫টি ধর্ষণ মামলার মধ্যে অধিকাংশই বিচারাধীন ও সাক্ষ্যের পর্যায়ে আছে। মামলার পর থেকে ৬ মাসের মধ্যে চার্জশিট হয়েছে ২২টির। তবে ২০১৪-২০১৫ সালে চার্জশিট হয়েছে এ রকম ৯টি মামলার রায় এখনো হয়নি। ২০১৬-২০১৭ সালে চার্জশিট হয়েছে এ রকম ১২টি মামলার রায় হয়নি এবং তেমন কোনো অগ্রগতিও নেই। ৩টি মামলাতে এখন পর্যন্ত অভিযোগপত্র দাখিলই করা হয়নি। গত ২৫শে সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এক গৃহবধূ। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকা ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই রাতেই নারীর স্বামী ছয়জনের নামে ও অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে নগরীর শাহপরান থানায় মামলা করেন। ঘটনার পর সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে আট আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে মামলাটি নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এ ব্যাপারে কথা হয় এডভোকেট সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি মানবজমিনকে বলেন, আগামী ৮ই মার্চ মামলাটি সাক্ষীর জন্য রয়েছে। ইতিমধ্যে পাঁচ মাস শেষ হয়েছে। ধর্ষণ মামলার গতি আনতে গতকাল হাইকোর্টকে জানানো হয় ধর্ষণের মামলা ১৮০ কার্যদিবসে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা, তা মনিটরিং করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরকে প্রধান করে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করা হলো।

 
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর