২০১২ ওয়ানডে দলে অভিষেক এনামুল হক বিজয়ের। সেই থেকে তিনি জাতীয় দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন টানা ৩ বছর। কিন্তু ২০১৫ অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে ফিল্ডিংকালে ইনজুরি নিয়ে হঠাৎ করেই জাতীয় দল থেকে ছিটকে পড়েন এই ওপেনার। ইনজুরির কারণে সেই আসর থেকে মাঝ পথেই দেশে ফিরে আসেন তিনি। এরপর অপেক্ষা করতে হয় টানা ৩ বছর। ২০১৮তে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাকে দলে সুযোগ দেয়া হয়। এরপর ২০১৯ এর ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলার সুযোগ পান জাতীয় দলের হয়ে। কিন্তু সব মিলিয়ে তার সংগ্রহ মাত্রই ১০২ রান।
সর্বোচ্চ ইনিংসে ৩৫। এক কথায় দারুণ সুযোগ পেয়ে তা কাজে লাগাতে পারেননি একেবারেই। এর কারণ কী! এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অবশ্য দুষলেন নিজেকেই। জানালেন অদৃশ্য চাপেই তিনি ভেঙে পড়েছেন। তিনি বলেন, ‘চাপ অনুভব করেছি অবশ্যই, এটা সত্যি কথা। একটা জায়গা থেকে আমি চলে গেলাম। দুই-তিন বছর খেললাম না, আবার কামব্যাক করলাম তখন তো একটু চাপ থাকেই। নিজের চাপ, অন্য কেউ দেয় বিষয়টা এমন না। নিজের প্রতি চ্যালেঞ্জ থাকে আরও ভালো করতে হবে। আমি নার্ভাস ছিলাম বা এরকম কিছু।’ সামনেই জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল) মাঠে ফেরার সম্ভাবনা। তবে আগেই ইনজুরির শিকার বিজয়। গত সপ্তাহে অনুশীলনের সময় কব্জিতে বল লেগে হাড়ে চিড় ধরে। গতকাল বিজয় জানান তার ইনজুরি সারতে আরো কমপক্ষে ১০ দিন লাগবে।
দেশের হয়ে ৩৮ ওয়ানডে খেলে এনামুল হক বিজয় করেছেন তিন সেঞ্চুরি ও সমান সংখ্যক ফিফটিতে ৩০.৫ গড়ে ১০৫২ রান। এর মধ্যে ২০১৫ এর পর এই ব্যাটম্যান যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলেন। বিশেষ করে শেষ যে সুযোগগুলো পেয়েছিলেন তাতে নিজেকে মেলে ধরতে ব্যর্থ বলেই মনে করেন তিনি। বিজয় বলেন, ‘আমি যতটুকু সুযোগ পেয়েছি ততটুকু যদি মেলে ধরতে পারতাম তাহলে কিন্তু খুব সুন্দর হয়ে যেত। কোন ঝামেলা থাকতো না। নিজেকে আমি মেলে ধরতে পারিনি মানে বড় রান পাইনি। যেরকম প্রত্যাশা ছিল আর কি। আরও ভালো খেলতে পারতাম। আমার আরও ভালো করা উচিত ছিল। আমি খেলতে পারিনি মানে পারবোনা যে তা না। আবার সুযোগ আসলে আমি হয়তো নিজেকে মেলে ধরতে পারবো।’ সুযোগগুলো কেন কাজে লাগাতে পারছেন না বিজয়। চাপ, টেকনিকের অভাব নাকি টিম ম্যানেজম্যান্টের প্রেসার? এ বিষয়ে বিজয় বলেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই খুব সাহায্য করে এটা নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। এটা নিয়ে আমি অস্বস্তিতে নেই। আমি নিজেই নিজের উপর একটা চাপ নিয়ে ফেলেছিলাম। যেহেতু আমি অনেকদিন পর এসেছি জাতীয় দলে স্বাভাবিকভাবেই একটা চাপ ছিল। আর আমার মোট সেঞ্চুরির সংখ্যা কিন্তু আল্লাহর রহমতে অনেক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অবশ্যই বোলাররা অনেক ভালো হয়, বলে সুইং থাকে সেখানে আপনার একটু ঘাটতি থাকলে আপনাকে মানিয়ে নিয়ে চলতে হবে। আমাদের তামিম ভাইয়েরই ১০ হাজার রান হয়ে গেছে, মুশফিক ভাইয়ের ১০-১২ হাজার রান, সাকিব ভাইয়ের হয়েছে। আমাদের হয়তো সমস্যা হয়েছে। আমাদেরও হবে। কিন্তু আমাদের খেলতে খেলতে শেখা হবে। অনেকদিন পর এলে কিন্তু আপনার এই জিনিসটা হয়। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন টেকনিক ভালো হলে এখন টেকনিক কেন খারাপ হয়ে যাবে? টেকনিক ঠিকই থাকে মাইন্ডের এদিক সেদিক হয়। আপনার যদি মাইন্ড স্ট্রং থাকে আপনি কম স্কিল দিয়েও অনেক বড় তারকা হতে পারবেন।’