শান্তি, উন্নতি এবং সমৃদ্ধি আনতে দক্ষিণ সুদান সরকারের পাশে অব্যাহতভাবে থাকার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত। জাতিসংঘে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত এবং উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি নাগরাজ নাইদু নিরাপত্তা পরিষদ ইউএনএসসি’র এক বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এএনআই এ খবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, বৈঠকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত নাইদু বলেন, দক্ষিণ সুদানের জনগণের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘমেয়াদি সম্পর্ক রয়েছে। সুদানের শান্তি চুক্তি কম্প্রিহেনসিভ পিস এগ্রিমেন্ট (সিপিএ) সই হওয়ার পর এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে ২০০৭ সালে ভারত জুবায় কনস্যুলেট স্থাপন করে। দক্ষিণ সুদানের কৃষি, স্বাস্থ্য এবং জীবিকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে চলেছি। ভারতীয় তেল কোম্পানিগুলো দক্ষিণ সুদানে এরইমধ্যে ২৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। সক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে আমাদের প্রশিক্ষণগুলো দক্ষিণ সুদান সরকারের ভূয়সী প্রশংসা পেয়েছে।’
এদিকে কয়েকমাস অচলাবস্থার পর রিভাইটালাইজ পিস এগ্রিমেন্ট বাস্তবায়নে বিগত কয়েক সপ্তাহের অগ্রগতিকে ভারতের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়। রাষ্ট্রদূত নাইদু আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক ভুল-ত্রুটি, সর্বস্তরে আস্থার অভাব এবং ক্রমবর্ধমান আন্ত-সাম্প্রদায়িক সংঘাতের মতো বিষয়গুলো রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির দূর্বল দিককেই তুলে ধরছে।
শান্তি চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিক বিশেষ করে জাতীয় আইনসভার পুনর্গঠন এবং রাজ্য পরিষদ গঠনের মতো বিষয়গুলো এখনো কার্যকর হয়নি। তিনি আরো বলেন, ‘দেশব্যাপি বিস্তৃত পরিসরেই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। তবে সুসংগঠিত নিরাপত্তা কৌশল এবং তহবিলের অভাবে সামগ্রিক সুরক্ষা প্রণনয়ন করা যাচ্ছে না।’ এ পরিস্থিতিতে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী প্রতিটি দলকে বিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করে যেতে হবে, সংকীর্ণ রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা বাদ দিয়ে শান্তি প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এই উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি।
দক্ষিণ সুদানকে দেয়া সহায়তার কথাও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত নাইদু। তিনি জানান, সম্প্রতি দক্ষিণ সুদানে চাল, গম এবং চিনিসহ মোট ৭০ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা পাঠানো হয়েছে। আগামি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ১০ মেট্রিক টন চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
তিনি আরো বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীকে পরিস্থিতিতে মহাসচিবের অনুরোধের প্রেক্ষিতে দক্ষিণ সুদানের জুবা এবং মালাকালের হাসপাতালগুলোয় জাতিসংঘ মিশনের কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে।’ ভারতীয় শান্তিরক্ষীরা দক্ষিণ সুদানে সংঘর্ষ নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।