ইরাকের সবথেকে প্রভাবশালী ইসলামি নেতা গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ আলি আল-সিস্তানির সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। ইরাকে থাকা সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের নিরাপত্তা নিয়ে দুই ধর্মীয় নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এটিকে বলা হচ্ছে পোপ ফ্রান্সিসের জন্য একটি যুগান্তকারী সফর। গত দুই দশক ধরে ইরাকের চলমান সহিংসতার অন্যতম প্রধান টার্গেট ছিল দেশটির খ্রিস্টানরা। আল-সিস্তানি জানিয়েছেন, এই আলোচনার মধ্য দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা আরো জোরদার হয়েছে।
গ্রান্ড আয়াতুল্লাহ আল-সিস্তানি বিশ্বের সবথেকে প্রভাবশালী ইসলামি নেতাদের একজন। শিয়া মুসলিমদের প্রধান নেতাদের একজন তিনি। তার রয়েছে কোটি কোটি অনুসারি।
মুসলিমদের কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত নাজাফ শহরে পোপের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তিনি। মহামারি ছড়িয়ে পরার পর এটিই পোপের প্রথম বিদেশ সফর। আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ৮৪ বছর বয়সী ক্যাথলিক নেতা। তিনি বলেন, 'খ্রিস্টানদের সুরক্ষা নিয়ে ভাবা তার দায়িত্ব'। ইরাকের সুন্নি জঙ্গি সংগঠনগুলো প্রায়ই খ্রিস্টানদের টার্গেট করে হামলা চালায়। বিবিসি জানিয়েছে, শিয়াপন্থী কিছু উগ্র গোষ্ঠীও খ্রিস্টানদের ইতিবাচকভাবে দেখে না দেশটিতে। এমন সময় আল-সিস্তানির শান্তির পক্ষে এমন অবস্থান ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
আলোচনায় আল-সিস্তানি বলেন, ইরাকের অন্য নাগরিকদের মতো একই নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়েই বাঁচার অধিকার রাখেন খ্রিস্টান নাগরিকরা। সংবিধান তাদেরকে কোনোভাবেই আলাদা করে দেখে না। ইরাকে জঙ্গি সংগঠনগুলো যখন একের পর এক সহিংসতা ঘটিয়ে চলছিল তখন সংখ্যালঘুদের রক্ষার জন্য শিয়া ধর্মীয় নেতাকে ধন্যবাদ দেন পোপ। আল-সিস্তানি আবারো পোপকে আশ্বাস দেন সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের সুরক্ষায় কাজ করার। তিনি ধর্ম মত নির্বিশেষে ইরাকি জনগণের একতায় জোর দেন। আল-সিস্তানি সাধারণত কারো সঙ্গে দেখা করেন না। তবে পোপের সঙ্গে তিনি প্রায় ৫০ মিনিট কথা বলেন।
আলোচনা শেষে পোপ ফ্রান্সিস ইরাকের প্রাচীন নগরি উর-এ যান। ধারণা করা হয়, এই শহরেই ইহুদি, খ্রিস্টান ও ইসলামের নবী আব্রাহামের জন্ম হয়েছিল। পোপকে নিরাপত্তা দিতে সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি ইরাকি সেনা সদস্যকে।