ড. নাজনীনের বক্তব্য ছিল, 'প্রচলিত ধারা অনুযায়ী দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় সবসময়ই সাধারণত বড়সড় ইস্যুগুলোতে মনোনিবেশ করা হয়। তবে স্থানীয় বিষয়গুলোকেও প্রাধান্য দেয়া দরকার যেগুলো হয়তো সংবাদের শিরোনাম হয় না, কিন্তু সীমান্ত অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে। এই ছোটখাটো উদ্যোগগুলো ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে স্থিতিশীল সম্পর্ক গঠনে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখতে পারে।'
তিনি সীমান্ত বাণিজ্যে স্থানীয় সুবিধার বিষয়টি তুলে ধরে সেগুলোকে করণীয় তালিকার উপরের দিকে রাখতে বলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সীমান্ত হাট (বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য বাজার) অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে করা উচিৎ যাতে স্থানীয় পণ্যের বাজার বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, উভয় দেশের লোকদের মেলামেশার এবং কেনাকাটা করার জন্য গত বছর পর্যন্ত এমন চারটি সীমান্ত হাট ছিল। পণ্য প্রদর্শনীর জন্য সীমান্ত হাট এবং বাণিজ্য মেলার ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো দরকার বলেও মনে করেন ড. নাজনীন।
'কানেক্টিভিটি বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়াবে এবং উভয় পক্ষের লোকেরা একবার ব্যবসার সুযোগ খুলতে দেখলে পারস্পরিক আস্থার এবং বন্ধুত্বের পরিবেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে গড়ে উঠবে। বুঝতে চেষ্টা করুন যে, অর্থ রাজনীতির চেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। কানেক্টিভিটি প্রসারিত হওয়ার সাথে সাথে নতুন ব্যবসার সুযোগ তৈরি হবে এবং এটি বিদ্যমান বিভ্রান্তিগুলোর সমাধান করবে', তিনি যোগ করেন।
ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের হালদিবাড়ি এবং বাংলাদেশের চিলাহাটির মধ্যে প্রায় ৫৫ বছর পর আবার রেল যোগাযোগ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সেন্টিনেল এর রিপোর্টে ঢাকা-শিলিগুড়ির মধ্যে এ বছরই বাস রুট উদ্বোধন হবার কথা এবং রেল ও সড়ক পথে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহজ যোগাযোগের জন্য বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল ইনেশিয়েটিভ (বিবিআইএন) দ্রুত চালু করতে ভারতের আগ্রহের কথা জানানো হয়।
রিপোর্টে বলা হয়- যদিও নাজনীন উল্লেখ করেছেন যে, নদীর পানিবন্টন সংক্রান্ত (বিশেষত তিস্তা) সমস্যাসহ দুই প্রতিবেশীর মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় সমস্যা রয়ে গেছে কিন্তু তিনি মনে করেন, দুই নেতাকে অবশ্যই সেসব দিকে মনোনিবেশ করতে হবে যেগুলোতে উন্নতি হচ্ছে।
গত বছর হুট করে বাংলাদেশে পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার ভারতীয় সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, 'এটা হয়তো তেমন বড় কিছু না। কিন্তু অনেক সময় এমন ছোট ইস্যুগুলোই তিক্ত স্বাদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এগুলো ত্যাগ করলে সম্পর্ক মজবুতই হবে।'