ফেনীতে আবাসিক ভবনের ৫ তলায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যরাতে শহরের শহীদ শহিদুল্লাহ কায়সার সড়কে হলি ক্রিসেন্ট স্কুলের পেছনের শফি ম্যানসনের ৫ তলায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তছনছ হয়ে গেছে ঘরের দরজা-জানালাসহ সব আসবাবপত্র। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছে ওই ফ্লোরের বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী মাহবুব ইসলামের স্ত্রী মেহেরুন নেছা লিপি এবং তার দুই মেয়ে মরিয়ম ইসলাম ও হাফসা ইসলাম। মরিয়ম সরকারি জিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ও হাফসা স্থানীয় হলি ক্রিসেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণিতে পড়ে। রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুর্ঘটনায় দগ্ধ নারী মেহেরুন নেছা লিপি জানায়, প্রতিদিনের মতো রাতে নিজের রুমে বসে কানে হেডফোন লাগিয়ে মোবাইলে ভিডিও দেখছিলেন। হঠাৎ পাশের রুমে বিস্ফোরণ এর শব্দ পাই। এরপর আর কিছুই জানি না কি হয়েছে।
ওই ফ্ল্যাটের প্রতিবেশী ভাড়াটিয়া নার্গিস জানায়, রাতের খাবার খাওয়ার সময় হঠাৎ বিকট শব্দে চারিদিক কেঁপে ওঠে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়ে দরজা খুলে দেখতে পাই পাশের ফ্ল্যাটে আগুন জ্বলছে। ওই ফ্ল্যাটের প্রতিটি রুমের দরজা, বারান্দার গ্রিল ও দেয়াল ভেঙে গেছে। আমাদের
ফ্ল্যাটেরও কয়েকটি দরজা ও জানালার কাঁচ ভেঙে গেছে। তবে দুর্ঘটনার পর ৩ জন নারী যখন তাদের ঘর থেকে বের হচ্ছিলেন তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে গিয়েছিল।
ফেনী জেনারেল হাসপতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইএমও) ডা. নয়ন দেবনাথ জানান, বিস্ফোরণে এক মহিলা ও তার দুই মেয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। নারীর দুই পা, হাত ও শরীরের কিছু অংশ পুড় গেছে। ৩ জনের মধ্যে দু’জনের শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে গেছে। রোগীদের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ফেনী জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছে।
ফেনী পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কি কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। ঢাকা ও কুমিল্লা থেকে পুলিশের এক্সপার্ট টিম সিআইডি ও পিবিআই’কে খবর দেয়া হয়েছে। তারা এসে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করলে বিস্ফোরণের বিষয়টি ক্লিয়ার করে বলা যাবে।