× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ওয়েবিনারে বক্তারা /নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করছে সরকার

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার
(৩ বছর আগে) মার্চ ৭, ২০২১, রবিবার, ৭:২৭ অপরাহ্ন

করোনাকালে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। তবে সরকারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার নানা পদক্ষেপের কারণে সম্প্রতি সময়ে অনেকাংশেই কমে এসেছে। কোভিড-১৯ এর আক্রমণ মোকাবিলা, চ্যালেঞ্জসমূহ এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে করণীয় বিষয়ে মিউনিসিপাল এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ম্যাব), ইউএনডিপি’র এলআইইউপিসি প্রকল্প ও এফসিডিও- এর যৌথ আয়োজনে ওয়েবিনারে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন।

দুপুরে অনলাইনে ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানটির কারিগরি সহায়তা দেয় নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম বাংলাদেশ (ইউডিজেএফবি)।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে গেছেন। বর্তমান সরকার নারীর ক্ষমতায়ন, নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশে নারী অধিকার ও শিক্ষার মান উন্নয়ন হচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনা মহামারির শুরুতে দেশে নতুন সংকট দেখা দিয়েছিল। এ ভাইরাসটি নতুন থাকায় সব সেক্টরে স্থবিরতা নেমে আসে। এতে কর্মক্ষেত্রে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হন। পরিবারেও নারী নির্যাতনের ঘটনা কিছুটা বেড়ে যায়। আর্থিক সংকটে পড়া নারীদের সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের সহায়তা দেয়া হয়েছে। কর্ম হারানো নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। তাছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের উপযুক্ত পদক্ষেপের কারণে তা অনেকাংশেই কমে এসেছে।

ওয়েবিনারে জানানো হয়, করোনার কারণে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও জীবিকা অর্জনের ক্ষেত্রসমূহসহ সকল কিছুর ওপর প্রভাব পড়েছে। এ ভাইরাসের কারণে শহুরে দরিদ্রদের জীবন ও জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং নগর অর্থনীতি যথেষ্ট হ্রাস পেয়েছে। কোভিড-১৯ সংকটটি সবাইকে প্রভাবিত করেছে, তবে নারী ও মেয়েরা আলাদাভাবে অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং সামাজিক ঝুঁকির ক্ষেত্রে প্রভাবিত হচ্ছে যা বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যকে আরো বাড়িয়ে তুলছে। করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে নারীদের মারাত্মক ও সুদূরপ্রসারী অর্থনৈতিক পরিণতি হতে পারে যেহেতু মহিলারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি, বৃদ্ধ, শিশু এবং তাদের পরিবারের সুস্বাস্থ্য, এবং যতœ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে।

করোনার কারণে ২০২০ সালের মার্চে সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার পর থেকে নারীর প্রতি সহিংসতার সংখ্যা ও মাত্রা বাড়তে থাকে। একের পর এক নির্যাতনের ঘটনায় দেশের বড় বড় বেসরকারি সংস্থা থেকে শুরু করে মানবাধিকার সংস্থা সবাই দেশব্যাপী নানা গবেষণা করেন। গবেষণা তথ্য বলছে, করোনার এই সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। বেড়েছে প্রতারণাসহ নানা ধরনের অপরাধ ও বাল্যবিবাহ।

বক্তারা বলেন, নভেম্বরের শেষে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক কর্তৃক দেশের ৫৯ জেলার ১০ লাখ নারীর অংশগ্রহণে করা এক জরিপে দেখা যায়, এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪০ হাজার নারী পারিবারিক সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৪০ শতাংশ নারী প্রথমবারের মতো নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
সংস্থাটি জানিয়েছে, লকডাউন চলাকালে নারীর ওপর সহিংসতার মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। জরিপে দেখা গেছে, পারিবারিক সহিংসতার ক্ষেত্রে শারীরিক নির্যাতনের চেয়েও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা বেশি। স্কুল বন্ধ থাকায় বাল্যবিবাহও থেমে থাকেনি। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের তথ্যমতে, জানুয়ারি ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২৪৬ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্যমতে, জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১ হাজার ৩৪৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীদের মধ্যে শিশু-কিশোরীরাই বেশি যাদের বয়স ৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ গত মে মাসে একটি জরিপের ফল প্রকাশ করে। তারা জানায় দেশের ২৭টি জেলায় এপ্রিল মাসে চার হাজার ২৪৯ জন নারী এবং ৪৫৬টি শিশু পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছে।

ম্যাবের সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইউএনডিপি’র এলআইইউপিসি প্রকল্প পরিচালক আব্দুল মান্নান, ম্যাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম কতোয়াল, মহিলা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রাম চন্দ্র দাস, সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শেখ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্তের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন ম্যাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ হোসেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইউডিজেএফবি’র সহ-সভাপতি কামরুন্নাহার শোভা, সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল খান প্রমুখ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর