সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। মহিলা এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে প্রধান অতিথি করায় তারা এ অনুষ্ঠান বর্জন করেন। ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে আয়োজন করা হয়েছিল এ অনুষ্ঠানের। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানটি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধার অংশগ্রহণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে পৃথক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে পরে এসে যোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল। অবশ্য তিনি বিলম্বের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সূত্র জানায়, এই প্রথম সরকারি সিদ্ধান্তে ৭ই মার্চ জাতীয় ভাবে পালিত হচ্ছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা হচ্ছে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলকে সম্পৃক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ ও আলোচনা সভা করার। উপজেলা প্রশাসন মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি করেন ৩১২ সংরক্ষিত আসনের এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে। বিষয়টি জেনে বেঁকে বসেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিল। কারণ ২০১৯ সালের ১৬ই ডিসেম্বরের অনুষ্ঠানে ইউএনও’র ঘোষণার পরও দুইজন মুক্তিযোদ্ধাকে উত্তরীয় পরাননি মহিলা এমপি। এ ঘটনায় অপমানিত বোধ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। ওই সময় থেকেই মুক্তিযোদ্ধারা মহিলা এমপি’র যেকোনো অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ৭ই মার্চের অনুষ্ঠান বর্জন করেছেন মুক্তিযোদ্ধারা। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় তারা উপজেলা চত্বরে না গিয়ে নবনির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনের বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। আর শহীদ মিনার চত্বরে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩ শতাধিক লোকের সমাবেশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইসমত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর। সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট আব্দুর রাশেদ, সরাইল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল, জেলা পরিষদ সদস্য মো. পায়েল হোসেন মৃধা, যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. মাহফুজ আলী প্রমুখ। ওদিকে একই সময়ে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ইউএনও’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম। সেখানে একমাত্র মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম গণমাধ্যমকে বলেন, আমি সরকারি অনুষ্ঠানে গিয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা আলাদা অনুষ্ঠান করেছেন এটা তাদের বিষয়। অনুষ্ঠান বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার সঙ্গে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমি নাকি ওই অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাকে উত্তরীয় পরিয়েছি।