মেয়ে সুমাইয়া বেগমের ঢাকায় চিকিৎসা করাতে এসে মেয়ের সামনেই বাসের চাপায় মারা গেছেন পারভীন বেগম (৪০)। পারভীন বেগমের মেয়ে সুমাইয়া দুই সপ্তাহ ধরে বাতজ্বরে ভুগছিলেন। স্থানীয় চিকিৎসকদের চিকিৎসায় তিনি ভালো না হওয়ার কারণে ঢাকায় এসেছিলেন উন্নত চিকিৎসা করাতে। চিকিৎসা শেষে পারভীন বেগমের আর নিজ বাড়িতে ফেরা হলো না। নিজ গ্রামের বাড়িতে ফিরলেন লাশ হয়ে। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে রাজধানীর গোলাপ শাহ মাজার এলাকায়। দুর্ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ বাসটিকে আটক করলেও বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর ১টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজারের সামনে মা ও মেয়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় মল্লিক পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস পারভীন বেগমকে চাপা দেয়।
বাসের চাকা পারভীন বেগমের বুকের ওপর উঠে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিজের সামনেই মা বাসের চাপায় আহত হওয়ায় তার মেয়ে ঘটনাস্থলে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় ঘটনাস্থলে পথচারীরা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। তখন সেখানে মানুষের জটলা বেঁধে যায়। চৌরাস্তার সড়কে সব ধরনের যান চলাচল কিছুটা সময় থমকে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নিহতের মেয়ে সুমাইয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে ঢামেক হাসপাতালে সাংবাদিকদের জানান, আমার বাতজ্বর। নিজ এলাকায় চিকিৎসায় ভালো না হওয়ার কারণে ঢাকায় চিকিৎসা করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। তারই প্রেক্ষিতে ডাক্তার দেখাতে মায়ের সঙ্গে আজ মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এসেছিলাম। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বাতজ্বরের একটি ইনজেকশন নিয়েছি।
তিনি আরো জানান, ফেরার পথে গুলিস্তান থেকে মুন্সীগঞ্জের গাড়িতে ওঠার জন্য রাস্তা পার হচ্ছিলাম। এ সময় মল্লিক পরিবহনের চাপায় মা গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। খবর পেয়ে নিহতের স্বামী আব্দুল বাসেদ হাসপাতালে ছুটে আসেন। তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি জানান, আমাদের সংসারটি তছনছ হয়ে গেল। তাদের গ্রামের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ জেলার রাজদিয়া এলাকায়। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাসটি পুলিশ জব্দ করেছে।