× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ফেসবুক, টুইটার কর্মীদের জেলে পুরার হুমকি ভারতের

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৩ বছর আগে) মার্চ ৮, ২০২১, সোমবার, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

নিয়ম না মানলে ফেসবুক, টুইটার ও হোয়্যাটসঅ্যাপের কর্মীদের জেলের হুমকি দিয়েছে ভারত। বিদেশী এসব প্ল্যাটফর্মের স্বাধীনতা ভোগ করে অব্যাহত রাজনৈতিক আন্দোলন দমন ও এসব প্ল্যাটফর্মের ওপর প্রভাব ফেলতে এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। সামাজিক যোগাযোগ ও মেসেজিং অ্যাপ সেবাদাতা কোম্পানিগুলোর কর্মীদের জেলে ঢুকানোর এই হুমকির কথা জানিয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।

খবরে বলা হয়, পশ্চিমা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো ভারত সরকারের দাবি মোতাবেক বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ ও পোস্ট সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রেক্ষিতেই এই হুমকি দেওয়া হয়। কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, দাবি না মানলে ভারত-ভিত্তিক কর্মীরা গ্রেপ্তারের ঝুঁকিতে থাকবেন।

ভারতের বাজার অনেক বড় হওয়ায় মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো তাদের ইউজার সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশটির দিকে ঝুঁকছে। আর এই বিষয়কেই পুঁজি করতে চায় ভারত সরকার। ভারত সরকার যেসব ডাটা বা তথ্য চেয়েছে, তার অনেকখানিই হোয়্যাটসঅ্যাপ কেন্দ্রিক। এই অ্যাপ ভারতে ভীষণ জনপ্রিয়।
এই অ্যাপে এনক্রিপ্টেড প্রযুক্তি থাকায় অ্যাপের বাইরের কেউ এই অ্যাপের মাধ্যমে হওয়া যোগাযোগ দেখতে পারবেন না।

হোয়্যাটসঅ্যাপের এক মুখপাত্র বলেছেন, “মানবাধিকার ও আইনের শাসন সহ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ” অনুরোধ তারা গ্রহণ করে। ফেসবুকের মুখপাত্র বলেছেন, কোনো সরকার তাদের কাছ থেকে ডাটা চাইলে, তারা প্রযোজ্য আইন ও তাদের শর্তাবলীর ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেয়। টুইটার বলেছে, উন্মুক্ত ইন্টারনেটের মৌলিক নীতিমালা বজায় রাখার জন্য টুইটার কাজ করে যাবে। এসব নীতিমালার প্রতি হুমকি ক্রমেই বাড়ছে, যা খুবই উদ্বেগজনক বিষয়।

ভারত অনলাইন আলোচনায় প্রভাব বিস্তার করতে এখন সেসব নিয়ম তৈরি করছে তা আর কোনো গণতান্ত্রিক দেশে নেই। আইনানুযায়ী সরকারি অনুরোধের বিষয়ে কাজ করতে একজন নির্বাহী নিয়োগ করতে হবে এই সংস্থাগুলোকে যারা ভারতেই থাকবেন। এদের মধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে ২৪ ঘন্টা যোগাযোগ রাখতে পারবেন এমন কনট্যাক্ট পারসন। এছাড়া জাতীয় স্বার্থ, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা বা শ্লীলতা হানি ঘটায় এমন কনটেন্ট মুছে দিতে হবে। হোয়্যাটসঅ্যাপের মতো মেসেজিং প্ল্যাটফর্মগুলো বাধ্য হবে কোনো মেসেজের মূল উৎস খুঁজে দিতে।

আইন পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সরকারের এসব অনুরোধ আইনগতভাবে চ্যালেঞ্জ করার কোনো পথ খোলা রাখা হয়নি। আর এসবের জন্য আদালতের অনুমোদনেরও প্রয়োজন নেই সরকারের।

বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতে ফেসবুক ও হোয়্যাটসঅ্যাপের ইউজার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। গত বছর ফেসবুক জানায়, ভারতের একটি টেলিকম অপারেটরের সাথে যৌথভাবে ভারতে ৫৭০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে তারা। এটিই ভারতের বৃহত্তম বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগ। ভারতে টুইটারের ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে দ্রুতগতিতে বাড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ইতিমধ্যেই জানান দিয়েছে যে, সোশ্যাল মিডিয়া নিষিদ্ধ করতে দ্বিধা করবে না তারা। গত বছর টিকটক নিষিদ্ধ করে দেয় সরকার। ভারতে টুইটারের চেয়ে টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।

এর আগে ভারত সরকারের মতে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রকাশের জন্য বেশ কয়েকটি অ্যাকাউন্টকে টুইটার সম্প্রতি ব্লক করে, এরপর আনব্লক করে, আর এরপর আবারও ব্লক করে। তবে এরপর থেকে টুইটার বলেছে, সরকারি নির্দেশ এলেও আর কোনো অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নেবে না তারা।

গুগল, ফেসবুক ও টুইটারের উপাত্ত অনুযায়ী, তারা ভারত সরকারের ন অনুরোধ নিয়মিতই প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত সরকারের অর্ধেক অনুরোধ রেখেছে ফেসবুক, গুগল রেখেছে ৫৮ শতাংশ, আর টুইটার মাত্র ১ শতাংশ! কোম্পানিগুলোর বিশ্বব্যাপী গড় হারের চেয়েও এই হার কম। এভাবে অব্যাহত থাকলে ভারতের আইন ভঙ্গের ঝুঁকিতে পড়ে যাবে কোম্পানিগুলো। ভারত সরকারও থেমে যাওয়ার পাত্র নয়। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের আওতাধীন দিল্লি পুলিশ কয়েকজন ভারতীয়কে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, জুম, হোয়্যাটসঅ্যাপ ও গুগলের মাধ্যমে তারা প্রতিবাদরত কৃষকদের সহায়তায় টুলকিট তৈরি করেছে। পুলিশ বলছে, এগুলো তৈরি ও প্রচারের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহ সংঘটিত হয়েছে। এদের একজনকে গত সপ্তাহে একটি আদালত জামিন দিয়েছে। কিন্তু তারপরও এই বিষয়টি সতর্ক করে তুলেছে ভারতের ভিন্নমতালম্বী ও বিদেশী টেক কোম্পানিগুলোকে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর