× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ম ত প্র কা শ /রাজনৈতিক অধিকার ও রাষ্ট্রের বাস্তবতা

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী

শহীদুল্লাহ ফরায়জী
২৬ মার্চ ২০২১, শুক্রবার

বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধিকারের চর্চা করা একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডম হাউস নামের একটি সংস্থার ২০২১ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বের ২১০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে ‘আংশিক স্বাধীন’ দেশগুলোর মধ্যে তলানিতে বাংলাদেশের অবস্থান।
অগণিত জীবনের আত্মদানের মাধ্যমে অর্জিত রক্তস্নাত স্বাধীন দেশের সুবর্ণ জয়ন্তীতে রাজনৈতিক অধিকারের প্রশ্নে এখন আমরা আংশিক স্বাধীন দেশের তলানিতে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধিকারের কথা বলাটাই বিপজ্জনক, ফলে সত্য সবসময় অনুচ্চারিত থেকে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক স্বাধীনতার যে দার্শনিক ভূমিতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল তা গত ৫০ বছরে একদিনের জন্যও সেই দর্শনের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়নি।
রাজনৈতিক অধিকারের প্রশ্নে নির্বাচনী ব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা, বহুত্ববাদ, রাজনীতিতে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ, সরকারের নীতিনির্ধারণী ব্যবস্থা এবং ক্ষমতার ব্যবহারসহ নানা বিষয় জড়িত।
বাংলাদেশে এখন কোনো নির্বাচনী ব্যবস্থা নেই। নির্বাচনের তারিখ হবে, মনোনয়ন হবে- শেষে পুলিশ আর প্রশাসনের ইচ্ছামাফিক ফল প্রকাশ হবে। এতে জনগণের অংশগ্রহণ করার সুযোগ নেই, প্রয়োজনও নেই।
বাংলাদেশ এখন জনগণের ইচ্ছা আকাঙ্ক্ষা ও সংকল্পের বিপরীতে নির্যাতনকারী রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। যে জনগণের আত্মদানের মাধ্যমে স্বাধীনতা, সেই জনগণকে রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘সর্বনাশা প্রক্রিয়া’ রাষ্ট্রকে চরম সংকটে ফেলেছে। বিদ্যমান কর্তৃত্বমূলক শাসন ব্যবস্থা গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক চেতনাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও আইনের শাসন- এসব মৌলিক প্রশ্নকে রাজনৈতিক এজেন্ডা বহির্ভূত করে দিয়েছে। জনগণকে প্রজাতন্ত্রের মালিকানা থেকে বিতাড়িত করেছে।
সরকার উন্নয়নের বয়ানে গণতন্ত্র, মৌলিক মানবিক অধিকার, আইনের শাসন ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বলপ্রয়োগে স্তব্ধ করার তথাকথিত অধিকারে পরিণত করেছে।
জনগণের ওপর অতিরিক্ত নজরদারি, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ এবং অতিরিক্ত বল প্রয়োগে সরকার রাষ্ট্রকে নিজস্ব সম্পত্তিতে রূপান্তর করেছে। রাষ্ট্রের কাছে এখন মুক্তিযুদ্ধ কোনো প্রাসঙ্গিক বিষয় নয়। ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’কে বক্তৃতায় সোপর্দ করা হয়েছে। নির্বাচন, সংবিধান, নৈতিকতার প্রয়োজন সরকারের কাছে ফুরিয়ে গেছে।
রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ কেবলমাত্র সরকারি দলের। তারা চাইলেই জনসভা, মিছিল, মানববন্ধনসহ যেকোনো রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এসব বিরোধী দলের জন্য নয়। সকল নাগরিকের জন্য ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে হয় এটা সরকারের বিবেচনায়ও নেই।
সরকার ন্যায্যতার শাশ্বত বিধান, সংবিধানের নির্দেশনা এবং গণতান্ত্রিক চেতনা অহরহ লঙ্ঘন করছে অথচ সংবিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে সরকারকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা যাচ্ছে না। কারণ রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে সাংবিধানিক শাসনবহির্ভূত বেআইনি অবৈধ কাজে সম্পৃক্ত করে তাদেরকে নৈতিকভাবে অক্ষম করে তুলেছে এবং বিরোধী রাজনীতিকে অভিযোগের সংস্কৃতিতে অভ্যস্ত করে তুলছে।
একটি রাষ্ট্র থাকে সবার কিন্তু বাংলাদেশ নামক প্রজাতন্ত্রটি এখন কারো কারো, সবার নয়। সরকার ক্ষমতা বলে কাউকে পদানত করছে আর কাউকে অনুগ্রহের দাস বানাচ্ছে।
জবাবদিহিতা বা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার কোনো প্রক্রিয়া সরকার অনুসরণ করছে না। উন্নয়নের নামে জনগণের করের টাকা যেভাবে অপচয় হচ্ছে তা বিশ্বে বিরল। মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ প্রকল্পের দম্ভ নিয়ে। ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাতে পৃথিবীর কোনো রাষ্ট্র এত অপচয় করার চিন্তাও করেনি। পায়রা সমুদ্র বন্দরও এযাবৎকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যয়বহুল প্রকল্প। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রও নাকি পৃথিবীর অন্যতম সর্বোচ্চ খরচের। রাস্তাঘাট, ব্রিজ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র বা সমুদ্র বন্দর যা-ই সরকার নির্মাণ করছে তাই পৃথিবীর যেকোনো দেশের চেয়ে ব্যয়বহুল। কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে, কয়েক কোটি শিক্ষিত বেকার, কয়েক কোটি শিশু অপুষ্টির শিকার তারপরও হাজার হাজার কোটি টাকার অপচয় হচ্ছে কার স্বার্থে! উন্নয়নের নামে জাতির সক্ষমতা বিনষ্ট করা হচ্ছে, দীর্ঘদিনের ঋণে জড়িয়ে ফেলা হচ্ছে, উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে দুর্নীতির জালে আটকে ফেলা কোনো ক্রমেই দেশপ্রেমের পরিচয় নয়। জনগণ অবশ্যই উন্নয়ন চায়, কিন্তু কোনোক্রমেই রাষ্ট্রের নৈতিকতা এবং সম্ভ্রমের বিনিময়ে নয়, গণতন্ত্র ও সংবিধানের বিনিময়ে নয়। জনগণ, মূল্যবান প্রাণ এবং প্রকৃতি যেন উন্নয়নের শিকারে পরিণত না হয়। একটি রাষ্ট্রকে যদি নীতি-নৈতিকতা, দায় এবং আইনের শাসনের বহির্ভূত প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে ফেলা হয়, সে রাষ্ট্র ক্রমাগত দুর্বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে উঠে। রাষ্ট্রের নাগরিকদের আত্মবিকাশের সুযোগ যখন রুদ্ধ হয়, নাগরিকের নিরাপত্তা যখন বিপন্ন হয়, তখন রাষ্ট্রের সঙ্গে নাগরিকের সম্পর্কের বন্ধন আলগা হতে থাকে, বিচ্ছিন্ন হতে থাকে। এই ধরনের পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংকট হলে তা মোকাবিলায় রাষ্ট্র ব্যর্থ হবে।
সরকার শুধুমাত্র ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য সকল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভঙ্গুর করে ফেলেছে। ফলে সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন মুখ থুবড়ে পড়বে এবং একটি মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার সকল সম্ভাবনা তিরোহিত হবে।
ক্ষমতার মোহ থেকে বাইরে এসে বাস্তবতার নিরিখে কতোগুলো বিষয় খেয়াল করা রাষ্ট্রের জন্য জরুরি।
আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি, বৃহৎ প্রতিবেশীদের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতির প্রবণতা ইত্যাদি বিবেচনায় বাংলাদেশের রাজনীতির গতি নির্ধারণ করা উচিত। ভূ-আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এই গুরুত্ব সরকারের জন্য নয়, এ গুরুত্ব পাচ্ছে ভূ-রাজনীতি ও বিশাল জনসংখ্যার বাজার বিবেচনায়।
এখন অনেকেই কৌশলগত স্বার্থে বাংলাদেশকে হাতে রাখতে চায়, তাদের বৃহত্তর স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।
ফলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র, আইনের শাসন জাতীয় ঐকমত্যের মাধ্যমে শক্তিশালী জাতি রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্নে আঞ্চলিক কোনো শক্তির কোনো আগ্রহ নেই। রাতের আঁধারে নির্বাচন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং মানবাধিকার লংঘন- এসব কারণে বাংলাদেশের সঙ্গে আঞ্চলিক রাষ্ট্রসমূহের বিশেষ কোনো সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে না। দুই বৃহৎ শক্তির প্রতিযোগিতাকে জাতির বৃহত্তর স্বার্থে কাজে না লাগিয়ে শুধুমাত্র ‘রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা’ রক্ষার স্বার্থে কাজে লাগালে তা হবে আত্মঘাতী। প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হলে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে গণতন্ত্র চর্চা অব্যাহত রেখে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে শক্তিশালী অবস্থানকে নিশ্চিত করতে হয়। জনবিচ্ছিন্ন সরকার বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারে না বা ভূকৌশলগত অবস্থানকে কাজে লাগাতে পারে না।
আমাদের আঞ্চলিক রাষ্ট্রসমূহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, জনমত এবং স্থিতিশীলতার প্রশ্নেও কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। এটাই দেশের জন্য ভয়ঙ্কর দুর্ভাগ্য।
অন্যদিকে গত ৫০ বছরে রাজনৈতিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করার জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইন, সন্ত্রাস দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো কালো আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হয়েছে। এসব কালো আইন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য নয়- সরকারকে নিরাপদ রাখার জন্য এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রের কাম্য হচ্ছে বাক-ব্যক্তির স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করে সত্যকে আড়াল করা। রাষ্ট্রীয় ভাবমূর্তি মূলত মুক্তচিন্তাকে নির্বাসনে দেয়ার বর্বর মাপকাঠি। সত্যকে গোপন রাখা, আড়াল করা বা সত্য থেকে রাষ্ট্রকে বিরত রাখা রাষ্ট্রের কাজ নয়। নাগরিককে গ্রেপ্তার করে এবং জামিন নাকচ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া জাতীয় লজ্জার বিষয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ভয়াবহ অপচয়, দুর্নীতির স্বর্গরাজ্য এবং নীতি- নৈতিকতাহীন ভোট চুরির অপসংস্কৃতি দিয়ে একটি রাষ্ট্রকে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করা যায় না।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ভোটের মর্যাদা রক্ষার লড়াই দিয়ে। জনগণ অকাতরে বুকের রক্ত দিয়ে ভোটের মর্যাদা রক্ষার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছিল। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ভোটের অধিকার এবং মর্যাদা দুটোকেই বিনষ্টকারী সরকার ক্ষমতাসীন। জনগণের আস্থা, সমর্থন ও সম্মতি ছাড়া নির্বাচিত হওয়া যে কতো বড় অপমানজনক তা ভোটারবিহীন নির্বাচনের অভিনেতাগণ বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ না থাকায় শাসকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়া ঠেকিয়ে রাখার কোনো পদ্ধতি নেই। একদলীয় শাসন, সামরিক শাসন বা এক ব্যক্তির শাসন মুক্তিযুদ্ধের রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের বিপর্যয়। রাজনৈতিক অধিকারহীনতা এবং মৌলিক মানবিক অধিকার হীনতা রাষ্ট্রের কোনো দর্শন হতে পারে না।
একটি জাতি ঐতিহাসিক প্রক্রিয়ায় গঠিত হয় এবং ঐতিহাসিক গতিধারায় বিকশিত হয়। বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার সবসময় উপেক্ষিত থেকেছে। ফলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের এই ধারা অনুসরণযোগ্য হয়ে ওঠেনি।
অমানবিক, অনৈতিক ও দস্যুবৃত্তির ‘যৌথ সংস্কৃতি’ কোনো রাষ্ট্র বিনির্মাণের সহায়ক হতে পারে না। পোশাকি উন্নয়নের নামে একনায়কতন্ত্র, ভিন্নমত ও পথকে নিধন করার সর্বগ্রাসী কাঠামো বাংলাদেশকে দীর্ঘস্থায়ী সংকটে নিপতিত করবে। এ থেকে উত্তরণের উপায় অপরাজনীতির বিপরীতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক রাজনীতির চর্চা এবং গণমুখী কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের জনগণকে অনুপ্রাণিত করে আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত করা। আর এটাই হওয়া উচিত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর মূল লক্ষ্য।

লেখক-  গীতিকার
[email protected]
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর