একটি স্বপ্ন। নতুন কিছু করা। মানুষের জন্য কিছু করা। আর সেই স্বপ্ন একেবারেই অন্যরকম। বিশেষত যখন মানুষ শহরমুখী। হাতে হাতে মোবাইল ফোন। ডিজিটাল ওয়েবে আক্রান্ত ছেলে বুড়ো সকলেই। ঠিক সেই সময় একজন মানুষ এগিয়ে গেলেন শহর ছেড়ে দূরে।
রাজধানী ছেড়ে কিছুটা শহরতলীতে। এলাকাটি নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের পাঁচগাঁও। যেখানকার ছেলেমেয়েরা দিন শেষে রাস্তার মোড়ে বা বাজারে দাঁড়িয়ে ক্যারম খেলায় অভ্যস্ত। কোথাও কোথাও মোবাইল হাতে চলছে পাবজি। অভিভাবকরা যখন সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। ঠিক এমন একটি হতাশ সময়ে একজন মানুষ ঢাকা থেকে পরিচিত বন্ধু আর স্বজনদের সহায়তা নিয়ে গড়ে তুললেন একটি পাঠাগার। নিজের বাড়ির সামনে একটুকরো জমিতে ছোট এক কক্ষে চালু করলেন সেই পাঠাগার। তাতেও রয়েছে ভিন্নতা। তিনি কোনো ব্যক্তির নামে এটি করলেন না। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে এই পাঠাগারের নাম দিলেন ‘স্মৃতি ৭১’ পাঠাগার। একেবারেই অনাড়ম্বরভাবে এই পাঠাগারের সূচনা হলো ২রা এপ্রিল শুক্রবার। পাঁচগাঁও-এ অসাধারণ সুন্দর ও নান্দনিক স্থাপত্য নকশার এই পাঠাগারটির সূচনা করেছেন ভ্রমণ লেখক ও সমাজকর্মী মিতালী হোসেন। নিজের সঞ্চয় থেকে এই পাঠাগারটির যাত্রা শুরু করেছেন তিনি। আর তার আহ্বানে পরিবার পরিজন ও আশেপাশের বন্ধুবান্ধবরাও এগিয়ে এসেছে। সকলেই তাদের সাধ্যমতো বই নিয়ে দাঁড়িয়েছে ‘স্মৃতি ৭১’ পাঠাগারের পাশে। প্রথমদিকে শুধুমাত্র ছেলেমেয়েরা বই নিয়ে পড়ার সুযোগ পাবে। পরবর্তীতে এখানেই গড়ে তোলা হবে একটি ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্র। এলাকার ছেলেমেয়েদের দেয়া হবে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে প্রশিক্ষণ। ভবিষ্যতে একটি সেলাই কেন্দ্র চালুরও পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন মিতালী হোসেন। একেবারেই ঘরোয়াভাবে পাঠাগারটির সূচনায় ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার মোজাম্মেল হক ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার। এতে ইউনিকর্প প্রটেকশন লিঃ-এর নির্বাহী পরিচালক আফসারুল হক, সহজডটকমের ভাইস প্রেসিডেন্ট (টেকনোলজি) খন্দকার অমিতাভ নোবেল, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাব্বির আহমদ, নৃত্যশিল্পী মৌটুসী খন্দকার, ফারহানা সরকারসহ পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন।