বিশ্বজমিন

পরিবারকে হত্যার পর দুই ভাইয়ের আত্মহত্যা, যুক্তরাষ্ট্রে ৬ বাংলাদেশির লাশ উদ্ধার

মানবজমিন ডেস্ক

২০২১-০৪-০৬

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ডালাস শহরের উপকণ্ঠের একটি বাড়ি থেকে একই পরিবারের ৬ বাংলাদেশির মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির পুলিশ। সোমবার তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একটি কল পেয়ে ওই বাড়িতে যান পুলিশ সদস্যরা। সেখানে গিয়ে তারা পরিবারের মৃত অবস্থায় পরিবারের ৬ সদস্যকে পান। সবার মরদেহই গুলিবিদ্ধ ছিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, পরিবারের দুই ভাই অন্য চার সদস্যকে হত্যা করেন এবং তারপর নিজেরা আত্মহত্যা করেন। নিহতরা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থানান্তরিত হয়েছিলেন বলে জানানো হয়েছে। দুই ভাইয়ের একজন ফারহান তৌহিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ছিল বলে জানিয়েছেন তার এক বন্ধু। তাদের নানী যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাকেও হত্যা করা হয় ওই রাতে।

পুলিশ ধারণা করছে, শনিবার এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তবে সোমবার ফারহানের বন্ধুর কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ঘটনার আগে ফারহান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন যাতে তার আত্মহত্যার কথা লেখা আছে। ওই দুই ভাইয়ের বাবার এক বন্ধু ব্যবসায়ী শাহীন হাসান জানান, কোনো কারণে হয়তো ওই দুই পুত্র বিষন্নতায় আক্রান্ত ছিল। আত্মহত্যার সেই নোটে সে উল্লেখ করেছে- ২০১৬ সালে নবম গ্রেডে পড়াবস্থায় আমি বিষন্নতায় আক্রান্ত হয়েছি বলে চিকিৎসক জানায়। এ জন্য আমি পরীক্ষায় ফেল করেছি। আজ আমি নিজের শরীরে দু’বার কেটেছি। খুবই কষ্ট পেয়েছি। আমার মনে আছে ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট, কাঁচির মত ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরে কেটেছিলাম। অনুভব করেছি কতটা অসহনীয় যন্ত্রণা। এরপর প্রায় দিনই শরীরে রান্নাঘরের চাকু দিয়ে কেটেছি। বিষন্নতার দুঃখবোধ লাঘবের পথ খুঁজেছি। এ অবস্থায় আমার ঘনিষ্ঠ তিন বন্ধু আমাকে ত্যাগ করেছে। এমনি হতাশার মধ্যেই আমাকে ভর্তি করা হয় ইউনিভার্সিটি অব অস্টিনে কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টে। এরপর আমি ভেবেছি যে, এবার জীবনটা সঠিক রাস্তায় উঠেছে। বাস্তবে তা ঘটেনি। বিষন্নতায় জর্জরিত হয়ে পুনরায় আমি নিজের শরীর রক্তাক্ত করি এবং কাঁদতে কাঁদতে বিছানায় ঘুমাতে যাই। সান্ত্বনা খুঁজি যে, আমি সুস্থ হয়েছি। অন্যদের মতই স্বাভাবিক। কিন্তু সেটি সত্য বলে কখনোই মনে হয়নি।

এক পর্যায়ে সে লিখেছে, আমি যদি আত্মহত্যা করি তাহলে গোটা পরিবার সারাটি জীবন কষ্ট পাবে। সেটি চাই না। সেজন্যে পরিবারের সকলকে নিয়ে মারা যাবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে বড়ভাইকে সামিল করলাম। দু’ভাই গেলাম বন্দুক ক্রয় করতে। আমি হত্যা করবো ছোটবোন আর নানীকে। আমার ভাই করবে মা-বাবাকে। এরপর উভয়ে আত্মহত্যা করবো। কেউ থাকবে না কষ্ট পাবার।

মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, ওই দুই ভাই পড়তেন ইউটি অস্টিন কলেজে। আর তাদের বোন নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি নিয়ে পড়াশুনা করছিলেন।

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2025
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status