খুলনায় প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে প্রয়োজনীয় জনবল এবং কিটের অভাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসিআর ল্যাব নির্মাণের পরও কাজে আসছে না।
খুমেক হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, খুলনায় বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুক্রবার ভোর রাতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মুরাদ হোসেন (৭০) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া করোনার উপসর্গে আরো তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস শনাক্তে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসিআর ল্যাব নির্মাণ এবং আরটি-পিসিআর মেশিন ক্রয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে অনেক আগেই। তবে প্রয়োজনীয় জনবল এবং কিটের অভাবে এখনো শুরু করা যায়নি ভাইরাস শনাক্তের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল ল্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং সংশ্লিষ্ট ক্রয় কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. আশিষ কুমার দাস বলেন, কোভিড শনাক্তের জন্য আমাদের ল্যাবটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত।
তবে সমস্যা হচ্ছে কারা করবে কাজটা? করোনা টেস্ট করার জন্য সেন্ট্রাল ল্যাব থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ২ জন সায়েন্টিফিক অফিসার এবং ৮ জন মেডিকেল এসিস্টেন্ট নিয়োগের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, তার মধ্যে একজনও এখন পর্যন্ত নিয়োগ হয়নি। তিনি আরো বলেন, সরকার যদি কোভিড টেস্ট করতে এই ল্যাবটি ব্যবহার করে তাহলে যে রিএজেন্ট লাগে সরকারই তা সরবরাহ করে এবং প্রয়োজনীয় ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করে থাকে। তবে আমাদের একটাই উইকনেস আছে, জনবল নেই। নিয়োগ বোর্ড না হওয়ায় আমরা এখনো প্রয়োজনীয় জনবল পাইনি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস বলেন, বর্তমানে তো আমাদের পুরোপুরি উপাচার্যের দায়িত্বে কেউ নেই। নিয়োগ প্রক্রিয়া, সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এগুলো পূর্ণ মেয়াদের ভিসি নিয়োগ পেলে তখন এসব প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য আপাতত জনবল নিয়োগ দিতে পারছেন না। এদিকে খুলনাসহ পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে করোনায় সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে গাণিতিক হারে। খুমেক ল্যাবে কাগজে কলমে রয়েছে ২টি পিসিআর মেশিন। কার্যত পরীক্ষা করা যাচ্ছে একটিতে। ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় বাকি একটি মাঝে মধ্যেই অচল হয়ে পড়ছে। ফলে একটি পিসিআর মেশিন দিয়ে চলছে খুলনার অধিকাংশ জেলার মানুষের নমুনা পরীক্ষা। প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষার হার বৃদ্ধি পাওয়ায় চলমান মেশিনটিও যে কোনো সময় অচল হয়ে যেতে পারে। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ এবং করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়কারী ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, রোগ নির্ণয়ের জন্য খুলনায় আরেকটি পিসিআর মেশিন বসানো খুবই প্রয়োজন। আশেপাশের যেসব জেলা থেকে খুলনায় নমুনা আসে, সেগুলোর জন্যও মেশিনটি জরুরি হয়ে পড়েছে।