× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সরজমিন / দেখে বুঝার উপায় নেই এটা করোনার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা

শেষের পাতা

আলতাফ হোসাইন
১২ এপ্রিল ২০২১, সোমবার

রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর’র তথ্য অনুযায়ী রাজধানীর মধ্যে করোনা রোগী শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি রূপনগর থানায়। ওই এলাকায় শনাক্তের হার ৪৬ শতাংশ। সে অনুযায়ী রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় রূপনগরকে। তা সত্ত্বেও এই এলাকায় নেই কোনো বাড়তি সতর্কতা। প্রশাসনেরও নেই কোনো নজরদারি। স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও। সবকিছু চলছে স্বাভাবিকভাবে। বরং বাজারে, দোকানে অনেক ঈদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
দোকানদার, সাধারণ ক্রেতা, রিকশাচালক অনেকের মুখে দেখা যায় না মাস্ক। এ অবস্থায় এই এলাকায় আরো ভয়াবহ আকারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মানুষ।
গতকাল সরজমিন রূপনগর আবাসিক এলাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্রভাবে চলছে সব দোকানপাট ও বাজার। অনেকের মুখে মাস্ক নেই, সচেতনতার বালাই নেই। মুখ খুলেই বাজার সদাই করাসহ সড়কে দাঁড়িয়ে চা কিংবা খাবার খাচ্ছেন তারা। নেই সামাজিক দূরত্বের বালাই। স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যম কর্মী নাজমুস সাকিব বলেন, আইইডিসিআর’র তথ্য অনুযায়ী শনাক্তের দিক থেকে এই এলাকা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়াও আশেপাশের অনেক মানুষকে আক্রান্ত হতে দেখছি। প্রতিদিন মৃত্যুর খবর শুনছি। এই অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দারা সতর্ক না থাকায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে আছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো প্রকার বাড়তি নজরদারি কিংবা কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখছি না। সারাদিন কিছুটা ফাঁকা থাকলেও বিকালের দিকে রাস্তার পাশ দিয়ে মানুষের মেলা বসে। অযথা রাস্তায় বসে শত শত মানুষ আড্ডা দেয়। মনে হয় যেন তাদের মধ্যে কোনো উৎসবের আমেজ লেগেছে। তিনি বলেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত বাস চলাচল করায় অনেকে বিকালের মধ্যে তাদের কাজ শেষ করে বাসায় ফিরেন। পরে তারা রাস্তায় বসে আড্ডা দেয়, দোকানে বসে চা খায়। সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম অসচেতনতা লক্ষ্য করা যায়। যা খুবই আতঙ্কজনক। স্থানীয় বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম বলেন, যেভাবে মানুষ সামাজিক দূরত্ব না মেনে বাইরে ঘোরাফেরা করছে, তাতে সামনে আরো ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে পারে। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। শত শত মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এই এলাকা রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনেরও কোনো প্রকার নজরদারি চোখে পড়লো না। মানুষ খুবই অসচেতন হয়ে বাইরে বের হচ্ছে। এটা খুবই শঙ্কার বিষয়। প্রশাসনের উচিত অন্তত যেসব এলাকা শনাক্ত ও মৃত্যুর হার বেশি, সেসব এলাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে লকডাউন দেয়া।
মুদি দোকানি মোক্তার হোসেন বলেন, প্রতিদিন মসজিদের মাইকে মৃত্যুর খবর শোনা যায়। প্রত্যেক ঘরে ঘরে করোনা রোগী আছে। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষই টেস্ট করান না। এমনকি করোনা নিয়েই তারা বাইরে বাইরে ঘুরছে, যা তারা নিজেরাও জানে না। অথচ তাদের অসচেতনতার কারণে অন্যরাও আক্রান্ত হচ্ছে। প্রশাসন থেকে কড়াকড়ি না করলে আরো ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে পারে।
ইস্টার্ন হাউজিং এলাকার ওষুধ ব্যবসায়ী আমিনুল ইসলাম বলেন, এলাকার প্রতি ঘরে ঘরে ভাইরাস আক্রান্ত রোগী আছে। সবাই সর্দি- কাশির ওষুধ নিয়ে যায়। যারা পরীক্ষা করায় তাদের অনেকের পজেটিভ আসে। তিনি বলেন, মানুষের চলাফেরা দেখে মনে হয় এই এলাকায় কোনো সংক্রমণ নেই। প্রশাসন বা পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি কোনো নজরদারি নেই।
দুয়ারিপাড়া মোড়ে সড়ক ফুটপাথ দখল করে বসে বাজার। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এখানে গাঁদাগাঁদি করে মানুষ মাছ, শাক-সবজিসহ নিত্যপণ্য কিনে। এখানে সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই।
আইইডিসিআর সূত্র জানায়, রূপনগরের পরের অবস্থানে রয়েছে আদাবর এলাকা। এই এলাকায় শনাক্তের হার ৪৪ শতাংশ। এ ছাড়া যেসব এলাকায় শনাক্তের হার ৩১ শতাংশের উপরে তার মধ্যে রয়েছে শাহ আলী, রামপুরা, তুরাগ, মিরপুর, কলাবাগান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, মুগদা, গেণ্ডারিয়া, ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, চকবাজার, সবুজবাগ, মতিঝিল, দারুস সালাম ও খিলগাঁও এলাকা। আর যেসব এলাকায় শনাক্তের হার ২১ থেকে ৩০ শতাংশের মধ্যে, সেগুলো হলো- শাহবাগ, বংশাল, লালবাগ, শাহজাহানপুর, রমনা, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর, বাড্ডা, বনানী, উত্তরখান, শেরেবাংলা নগর, সূত্রাপুর, যাত্রাবাড়ী, পল্লবী, কাফরুল, ডেমরা, ওয়ারী, ভাটারা, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, কদমতলী, উত্তরা পূর্ব থানা ও পল্টন। এ ছাড়া ১১ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে, তেজগাঁও, উত্তরা-পশ্চিম, ভাষানটেক, গুলশান, ক্যান্টনমেন্ট, তেজগাঁও শিল্প এলাকা ও বিমানবন্দর থানা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর