শুরু হচ্ছে ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত রমজান মাস। এসময় মুসলিমরা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যে কোনো ধরণের খাদ্য, পানীয় বা উপাদান গ্রহণ থেকে দূরে থাকে। গ্রহণ করা যায়না তামাকজাত দ্রব্য এবং অপ্রয়োজনীয় ওষুধও। তবে এখন বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন প্রদান চলছে। এই মুহূর্তে প্রশ্ন আসছে, মুসলিমদের কি ঈদের আগে দিনের বেলা ভ্যাকসিন গ্রহণ বন্ধ রাখা উচিৎ!
বেশিরভাগ ইসলাম গবেষকই জানিয়েছেন, রোজা চলাকালীন ভ্যাকসিন গ্রহণে কোনো সমস্যা নেই। তাই রমজান মাসে ভ্যাকসিন কার্যক্রম স্থগিত রাখার কোনো প্রয়োজনও নেই। তবে এমনিতেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যাপক দ্বিধা রয়েছে। ইবোলা মহামারির সময় ৮০ ভাগ ইসলাম বিশেষজ্ঞই রোজা চলাকালীন ভ্যাকসিন গ্রহণের পক্ষে সম্মতি দিয়েছিলেন।
মুসলিম ধর্মীয় নেতারা এবং বিজ্ঞানীরা যখন রমজান মাসে ভ্যাকসিন গ্রহণের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তখন একদল রাজনীতিবিদ চেষ্টা করছেন যাতে রমজান মাসে ইফতারির পরে ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ দেয়া হয় মুসলিমদের। নিউ ইয়র্কে দেখা গেছে, স্থানীয় নেতারা ভ্যাকসিন প্রদানের সময়কাল বৃদ্ধির আবেদন করেছেন।
এছাড়া আলোচনায় আসছে মসজিদ এবং মুসলিমদের কাছে পরিচিত স্থানগুলোর কাছে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা ভ্যাকসিন বুথ চালু রাখার বিষয়টিও। এটি করা হলে রমজান মাসেও ভ্যাকসিন কার্যক্রমের গতি বৃদ্ধি ধরে রাখা যাবে। কিন্তু শুধু সময় ও অবস্থানই একমাত্র ভাবার বিষয় নয়। মুসলিমদের মধ্যে যারা রেস্তোরায় কাজ করেন তাদেরকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে। এরকম যাদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হবে তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
আবার অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, মানুষ ভ্যাকসিনকে ভয় পাচ্ছে না, ভয় পাচ্ছে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকে। ইউটার একটি মুসলিম সংগঠনের পরিচালক লুনা বানুরি এপিকে বলেন, যখন রমজান শুরু হয় তখন সবার মধ্যে একটা আলাদা আমেজ সৃষ্টি হয়। তাই অনেকেই এই মাসে কোনো ধরণের আলাদা বাঁধা না পার করতে হয়। তাই, ভ্যাকসিন নিলেও যদি রোজা না ভাঙ্গে তারপরেও তারা রোজা রেখে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনুভব করতে চাননা।
ভ্যাকসিন নেয়ার পরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে না এমন নিশ্চয়তা দেয়া সম্ভব নয়। তাই মুসলিমদের জন্য রমজান মাসে জনসন এন্ড জনসনের ভ্যাকসিন দেয়া যেতে পারে। কারণ এটি একাধিকবার দিতে হবে না, এটি এক ডোজের ভ্যাকসিন। কিংবা অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনও প্রদান করা যেতে পারে। এটির দ্বিতীয় ডোজ রমজান শেষ হওয়ার পরে দিলেও সমস্যা নেই।