× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কলাপাড়ায় ঘর বরাদ্দে হরিলুট

বাংলারজমিন

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
১৩ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার

ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনকে পুনর্বাসনে গৃহীত প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পটি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। গৃহ প্রদান নীতিমালা অনুযায়ী ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল, অসহায় দরিদ্র পরিবারকে উপকারভোগী নির্বাচন না করে ৩০-৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এমনকি একই নামে দু’টি ঘর বরাদ্দ দেয়ার তথ্য রয়েছে তালিকায়। এছাড়া নিম্নমানের উপকরণ সামগ্রী ব্যবহার সহ রাজমিস্ত্রী, কাঠমিস্ত্রীর মজুরি এবং পরিবহন ও জ্বালানি খরচ উপকারভোগীদের প্রদানে বাধ্য করা হয়েছে। এতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ উঠেছে।
ঘরের নির্মাণ সামগ্রী পরিবহন ও জ্বালানি খরচের ২৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ৫৬০টি বরাদ্দকৃত ঘরের জন্য উপকারভোগী প্রতি ৩০-৪০ হাজার টাকা হারে প্রায় ২ কোটি টাকা উত্তোলন করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ নিয়ে প্রতিকার চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে আবেদন করেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী বাদল খান তার লিখিত অভিযোগে বলেন, ধূলাসার ইউনিয়নে ইউএনও’র নামে চেয়ারম্যান-মেম্বার ঘরপ্রতি ৩৫ হাজার টাকা করে মোট ২৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এছাড়া নিম্নমানের ইট, বালু, সিমেন্ট ব্যবহার করায় ইসমাইল হাওলাদার, বাদল, দুলাল ও রতন মোল্লার ঘর নির্মাণের পরপরই ভেঙে পড়ে, যা তড়িঘড়ি করে আবার কোনোরকম মেরামত করা হয়। পশ্চিম ধূলাসার গ্রামের মো. সুমন গাজীকে পশ্চিম চাপলি ও চরচাপলি গ্রামের বাসিন্দা দর্শাইয়া একই নামে দু’টি ঘর বরাদ্দ দিয়ে চেয়ারম্যান মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন, যা নামের তালিকার ২৭৮ ও ২৯৭ নম্বরে রয়েছে।
একই গ্রামের দুলাল হাওলাদারের স্ত্রী আমেনা বেগম (৩২) বলেন, ঘর পেতে দুই কিস্তিতে ২০ হাজার করে মোট ৪০ হাজার টাকা দিয়েছি। আঃ ছালাম সিকদারের মা রওশনারা (৫৫) বলেন, ঘর পেতে ৩৪ হাজার টাকা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি জসিম মোল্লার কাছে দিয়েছি। অভিযুক্ত জসিম মোল্লা টাকা উত্তোলনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, চেয়ারম্যান ও মোস্তাক মেম্বার আমাকে ঘরপ্রতি ৩০ হাজার টাকা খরচ বাবদ উত্তোলন করতে বলায় আমি টাকা উঠিয়ে তাদের দিয়েছি। তবে চেয়ারম্যান আঃ জলিল আকন ও মোস্তাক মেম্বার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।        
লতাচাপলী ইউনিয়নের থঞ্জুপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী আবুবকর খান (৩৮) বলেন, ঘর বরাদ্দ পেতে আমার ৩৫-৪০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। মেম্বার হারুন ভদ্র এ টাকা নিয়েছেন। অভিযুক্ত মেম্বার মো. হারুন ভদ্র বলেন, আমার ওয়ার্ডে ৩টি ঘর পেয়েছে। এসব ঘরের জন্য কিছু টাকা খরচ বাবদ নেয়া হয়েছে, তবে তারা যে অঙ্ক বলছে তা সঠিক নয়। লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনছার উদ্দিন মোল্লা বলেন, এসব লেনদেনের বিষয়ে আমার জানা নেই। উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম খান বলেন, ইউএনও কার্যালয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের নিয়ে গোপন বৈঠক করে ৪০-৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘর দেয়া হয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মণ্ডল বলেন, শুধুমাত্র খাস জমি বরাদ্দের আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে আমি ছিলাম। অন্য কোনো বিষয়ে মন্তব্য করা আমার এখতিয়ার বহির্ভূত। ইউএনও আবু হাসনাত মোহম্মদ শহিদুল হক বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ আমার কাছে আসেনি। তাছাড়া টাকা উত্তোলনের জন্য আমি কাউকে দায়িত্বও দেয়নি। যদি কেউ টাকা উত্তোলন করে তার নিজ দায়িত্বে করেছে। এজন্য তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর