× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

হটস্পট বিবেচনা করে ‘স্মার্ট লকডাউনের’ দাবি হেলদি বাংলাদেশ-এর

অনলাইন

স্টাফ রিপোর্টার
(৩ বছর আগে) এপ্রিল ১২, ২০২১, সোমবার, ৯:৩১ অপরাহ্ন

করোনা সংক্রমণের হার ও মাত্রাভেদে সারা দেশকে এককভাবে লকডাউনের আওতায় আনার দরকার নেই। বরং ‘হটস্পটের’ (উচ্চ সংক্রমণ এলাকার) কথা বিবেচনা করে নির্দিষ্ট স্থানে লকডাউন দেয়া যেতে পারে। স্বাস্থ্য অধিকারসংক্রান্ত বিভিন্ন সংগঠন ও পেশাজীবীদের জোট হেলদি বাংলাদেশ। এ ব্যবস্থাকে ‘স্মার্ট লকডাউন’ উল্লেখ করেছে সংগঠনটি। এ ছাড়া দেশের চলমান ‘লকডাউন’ খুব বেশি কার্যকর হয়নি উল্লেখ করে কিছু গাইডলাইনও দাঁড় করিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

সোমবার করোনা সংক্রমণ কমাতে হেলদি বাংলাদেশের আহ্বায়ক, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে স্মার্ট লকডাউনসহ সরকারকে পাঁচটি করণীয় কার্যকর করার প্রস্তাব করেছেন। হেলদি বাংলাদেশের প্রধান কার্যালয় হিসেবে কাজ করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি)।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, স্মার্ট লকডাউন বিশেষণটি এখন জরুরি।
সারা দেশকে এককভাবে বিবেচনা না করে সংক্রমণের হার ও মাত্রাভেদে সারা দেশকে হটস্পটের দিক থেকে বিবেচনা করা জরুরি। তখন লকডাউন কাজে দেবে।

এ ক্ষেত্রে দেশকে তিনটি স্তরে ভাগ করার কথা উল্লেখ করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ঢাকাকে এপিসেন্টার (প্রধান সংক্রমণকেন্দ্র) হিসেবে রেখে, চট্টগ্রাম ও উচ্চ সংক্রমণের অন্যান্য শহুরে এলাকাকে পৃথক এলাকা এবং উপজেলা ও গ্রামাঞ্চলগুলোকে আলাদা করে বিভাজিত করতে হবে।

এসবের পাশাপাশি স্মার্ট লকডাউন কার্যকর করতে পরিবহন শ্রমিকদের আয়ের বিকল্প ব্যবস্থা করে আন্তজেলা গণপরিবহনে বিধিনিষেধ কঠোর করা, মার্কেট সার্বিকভাবে বন্ধ না করে দিনের নির্দিষ্ট সময় খোলা রাখা, শহুরে বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে নিষেধাজ্ঞা কঠোর করা, যে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাসায় থেকে কাজের সুযোগ আছে, সেগুলোতে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালু করা।

পাঁচটি করণীয়র একটিতে হেলদি বাংলাদেশ বলছে, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিধিনিষেধসংক্রান্ত বার্তা দেয়া দরকার, যার দুটি দিক থাকবে—বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুস্পষ্টতা। এ ক্ষেত্রে সচেতনতার ভার শুধু জনসাধারণের ওপর ছেড়ে না দিয়ে তাদের উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব সরকারকে নেয়ার প্রস্তাব করা হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, (এ ক্ষেত্রে) তৃণমূলের লোকজনকে নিয়োজিত করা জরুরি। বিশ্বাসযোগ্য করতে বার্তাটি সরাসরি সরকারপ্রধানের কাছ থেকে আসা দরকার।

করোনার এই কঠিন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়বদ্ধতা আছে উল্লেখ করে হোসেন জিল্লুর বলেন, তাদের বিশ্বাসযোগ্যতার সংকট আছে। সেগুলো নানা কারণে হয়েছে, সেটা বিশ্লেষণ করা জরুরি। এ ক্ষেত্রে ২০২০ সালে আইনটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের কথা খুব একটা আমলে নেয়া হয়নি দাবি করে হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, আমলাতান্ত্রিক কারণে তাঁরা পিছিয়ে ছিলেন। এ ছাড়া এসব পরামর্শক কমিটির (কোভিড–১৯–বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি) ভূমিকা টোকেন পর্যায়েই পড়ে রয়েছে।

কমিটির দায়িত্ব সঠিকভাবে তাদের হাতে ন্যস্ত করার পাশাপাশি মাঠপর্যায়ে কী ঘটছে, তা জানতে ‘উচ্চ পর্যায়ের’ একটি তদারকি কমিটির কথা বলেন। পাশাপাশি দু–তিন হাজার বেসরকারি হাসপাতাল তিন মাসের জন্য কিনে নিয়ে তা করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়। সংক্রমণ রোধে নাগরিক সমাজকে সচেতন ও দায়িত্ববান হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার কথাও বলা হয়।

সংক্রমণ রোধে পাঁচটি করণীয় ছাড়াও হোসেন জিল্লুর রহমান তিনটি সত্যকে স্বীকার করা জরুরি বলে মনে করেন।

প্রথমত, এক বছর করোনার ছায়ায় থাকতে থাকতে জনগণ ও সরকারের মধ্যে ক্লান্তি চলে এসেছে। এমনকি কোভিড নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সরকারের বিভিন্ন নীতির মধ্যে গুরুত্বের দিক দিয়ে নিচের দিকে চলে এসেছে বলেও মন্তব্য হোসেন জিল্লুর রহমানের।

দ্বিতীয়ত, ২০২০ সালে সংক্রমণের শুরুতে ভাইরাস সম্পর্কে জ্ঞান কম থাকার কারণে দুশ্চিন্তা হলেও এবার ‘সক্ষমতার ঘাটতি’র কারণে দুশ্চিন্তা কাজ করছে। হোসেন জিল্লুর বলেন, হাসপাতালে শয্যা, অক্সিজেনের জন্য হাহাকার। এগুলোতে প্রস্তুতি দুর্বল পর্যায়ের। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপরও এর দায় বর্তায়। এখনো স্বাস্থ্য খাতে নানা দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠে আসছে।

তৃতীয় সত্য হিসেবে বলা হয়, দেশের ৫০ বছরের স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতিতে স্থানীয় পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তি থাকলেও কোভিড নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটির লোকজনের অন্তর্ভুক্তির চেয়ে ‘আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাপনা’ বেছে নেয়া হয়েছে। হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘এটা খুবই দুঃখজনক। মন্ত্রণালয়গুলোই সিদ্ধান্ত নেয়ার জায়গায় থেকেছে। যে সংক্রামক ব্যাধি আইন করা হয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপকদের ক্ষমতা দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, সংক্রামক ব্যাধি আইন, ২০১৮ একপাশে ফেলে রাখা হয়েছে। তবে এসব স্বীকার করে কার্যকর নতুন পন্থা নিতে হবে।’
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর