সরকারি ঘোষণা আমলে নিয়ে আগামীকাল থেকে টানা সাতদিন ব্যাংক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংকিং লেনদেন বন্ধের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপন অনুুযায়ী, ১৪ থেকে ২১শে এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব তফসিলি ব্যাংক বন্ধ থাকবে। আর এই খবরে বন্ধের খবরে ব্যাংকগুলোতে টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। টাকা উত্তোলনের চাপে গ্রাহকদের সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার রাজধানীর ইসলামপুর, পল্টন, সদরঘাটসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে বেশিরভাগ ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের উপচে পড়া ভিড়। ব্যাংকাররা বলছেন, সাত দিন বন্ধের খবরে আজকে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় গ্রাহকের অনেক চাপ। তবে টাকা জমা দেওয়ার চেয়ে উত্তোলন বেশি করছেন গ্রাহকরা।
ইসলামপুরের প্রায় সবগুলো ব্যাংকের ভিড় ঠেকেছে রাস্তা পর্যন্ত। এমনকি বুথগুলোতে দেখা যায় বিশাল বড় লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা তুলছে। ইসলামপুরের ডাচ বাংলা বুথে লাইন ধরে টাকা তুলছে বহু গ্রাহক। রোদে ঘেমে একাকার হয়ে গেছে। ক্ষোভ প্রকাশ করে শাহীনুর ইসলাম নামে এক গ্রাহক মমানবজমিনকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনা শনাক্ত হয়েছে প্রায় ১১ হাজার। সেখানে দৈনিক গড় মৃত্যুর সংখ্যা ১০০-এর বেশি। মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে দিল্লিীতে এ পর্যন্ত কয়েক দফায় কঠোর লকডাউন দেয়া হয়েছে। চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধও ছিল। এর পরও ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়নি ভারতের রাজধানী ও অন্যতম শীর্ষ এ মেট্রোপলিটনে। শুধু দিল্লিই নয়, গত ২৪ ঘণ্টায় গোটা ভারতে ১ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি মানুষের নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার মতো কঠোর বিধিনিষেধও দেয়া হয়েছে বেশ কয়েকবার। কিন্তু কোথাও এ পর্যন্ত ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ করেনি দিল্লি।
আব্রু বোরকা বাজারের স্বত্বাধিকারী রানা ভূইয়া বলেন, মহামারীর ছোবলে গত বছরের মার্চ-এপ্রিলে মৃত্যুর ঢলে পরিণত হয়েছিল জার্মানি, ফান্স, ইতালি ও স্পেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যেও। ব্রাজিল-মেক্সিকোর মতো আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোর পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ। পৃথিবীর শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোয় এখনো প্রতিদিন মৃত্যু হচ্ছে হাজারের বেশি মানুষের। প্রতিদিন নতুন সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে লাখে লাখে। মহামারীর বিস্তার ঠেকাতে কঠোর লকডাউন দেয়া হয়েছে পৃথিবীর দেশে দেশে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো দেশেই বন্ধ হয়নি ব্যাংকিং কার্যক্রম। দু-তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া বন্ধ হয়নি কোনো দেশের শেয়ারবাজারও।