× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

এখনো সক্রিয় করোনা সনদ জালিয়াত চক্র!

শেষের পাতা

শুভ্র দেব
১৮ এপ্রিল ২০২১, রবিবার

ঢাকায় এখনো সক্রিয় করোনা সনদ জালিয়াত চক্র। মেয়াদোত্তীর্ণ কিট ও নমুনা পরীক্ষা ছাড়াই এসব চক্র করোনার জাল সনদ দিচ্ছে। বিদেশগামী যাত্রীরা এসব জাল সনদ নিয়ে বিভিন্ন দেশে গিয়ে ধরা খাচ্ছেন। কারণ দেশের করোনা সনদে নেগেটিভ উল্লেখ থাকলেও বিদেশে গিয়ে এসব যাত্রীদের কেউ কেউ পজেটিভ হচ্ছেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের যাত্রীদের বেশ কয়েকটি দেশে পুনরায় পরীক্ষায় পজেটিভ এসেছে। মার্চ ও চলতি মাসের ১৫ দিনে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়া যাত্রীদের ৩৩ জনের করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। এই প্রেক্ষাপটে দেশটি বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। গত বছর জাল সনদ নিয়ে ইতালি যাওয়ায় পর দেশটি বাংলাদেশি যাত্রীদের প্রবেশ করতে দেয়নি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, সম্প্রতি বৃটেনে যেসব দেশ থেকে যাত্রীরা প্রবেশ করেছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশি যাত্রীরা রয়েছেন।

করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে পৌঁছার পর কিছু যাত্রীর টেস্ট রিপোর্ট পজেটিভ আসায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা করেছে দেশটি। ১৬ই এপ্রিল থেকে নিষেধাজ্ঞাটি কার্যকর হয়েছে। তবে দেশটিতে বাংলাদেশি ঠিক কতজন যাত্রীর রিপোর্ট পজেটিভ এসেছে সেটি প্রকাশ করা হয়নি। ১লা এপ্রিল থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত মোট ১৬ জন যাত্রী সেখানে গিয়ে টেস্ট করে কোভিড পজেটিভ রিপোর্ট পেয়েছেন। এর আগে মার্চ মাসেও অন্তত ১৭ জন যাত্রী করোনাভাইরাসের নেগেটিভ সনদ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে যাত্রা শুরুর পর সিউলে গিয়ে টেস্টে পজেটিভ হয়েছেন বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের মার্চ মাস থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনা পরীক্ষার অনুমোদন নিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান নমুনা পরীক্ষা না করেই জাল সনদ দিয়ে আসছিল। কিন্তু জেকেজি হেলথ কেয়ার ও রিজেন্ট হাসপাতাল করোনা সনদ জালিয়াতির ঘটনার পর এসব প্রতিষ্ঠান আড়ালে চলে যায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতে আবার কয়েকটি চক্র ফের সনদ জালিয়াতিতে সক্রিয় হয়েছে। বিশেষ করে বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষা না করেই তারা জাল সনদ দিচ্ছে। এছাড়া অনুমোদন ও মেয়াদোত্তীর্ণ কিট বিভিন্ন হাসপাতালে সরবরাহ করছে কিছু প্রতিষ্ঠান। এসব মেয়াদোত্তীর্ণ কিট দিয়ে নমুনা পরীক্ষার কারণে ভুল রিপোর্ট আসছে। পরবর্তী সময় অন্য জায়গায় পরীক্ষা করালে পজেটিভ রেজাল্ট আসছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছেন, জাল সনদ দেয়া হচ্ছে এমন অভিযোগ তাদের কাছেও আসছে। কিন্তু কারা কীভাবে দিচ্ছে এসব বিষয়ে প্রকৃত তথ্য তাদের হাতে নেই। তবে তাদের নজরদারি অব্যাহত আছে।

করোনা সনদ জালিয়াতি কাণ্ডের অভিযোগে গত বছর পুলিশ গ্রেপ্তার করে জেকেজি হেলথ কেয়ারের সিইও আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে। এ ছাড়া র‌্যাব গ্রেপ্তার করে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদকে। এই দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল করোনার নমুনা পরীক্ষা ছাড়া এই দুটি প্রতিষ্ঠান জাল সনদ দিয়ে আসছিল। এ ছাড়া বিনামূল্য পরীক্ষা করার কথা থাকলেও প্রতিষ্ঠানগুলো রোগীদের কাছ থেকে টাকা নেয়।  শুধুমাত্র রিজেন্ট হাসপাতালই ৬ হাজার জাল সনদ দিয়েছে রোগীদের। আর জেকেজি হেলথ কেয়ারের মাধ্যমে জাল সনদ দিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী ও সাবরিনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ছিল।

এদিকে, অনুমোদনহীন মেয়াদোত্তীর্ণ মেডিকেল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্ট জালিয়াত চক্রের মূল হোতাসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ২০১০ সাল থেকে বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল, এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস লিমিটেড এবং হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেড একাধিক নামে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া মানহীন ও স্বল্প মেয়াদের টেস্ট কিট এবং রি-এজেন্টসমূহ বিদেশ থেকে আমদানি, সংরক্ষণ ও দেশব্যাপী বাজারজাত করতো। যা সরবরাহ করার পর্যায়েই বস্তুত মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যেত। প্রতিষ্ঠান ৩টি ১০ বছর ধরে বিভিন্ন নামে ঢাকায় ব্যবসা চালিয়ে আসছিল।  এরা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এগুলো সাপ্লাই করতো। তারা চীন থেকে এগুলো আমদানি করতো। রি-এজেন্ট ও টেস্ট কিটের লেভেল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তৈরি করে পুনরায় টেম্পারিং করে লাগানো হতো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর