× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

করোনা আক্রান্ত শিউলি বেগমের অন্যরকম যুদ্ধ

প্রথম পাতা

শুভ্র দেব
১৯ এপ্রিল ২০২১, সোমবার

করোনার চিকিৎসা নিয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৬ দিন আগে বাড়ি ফিরেছিলেন নোয়াখালী সদরের শিউলি আক্তার (৩৫)। কিডনি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালটিতে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বাড়ি ফেরার কয়েকদিনের মাথায় তার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট ও কিডনির সমস্যা শুরু হয়। ফের নেয়া হয় নোয়াখালী সদর হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসকরা ভর্তি না নিয়ে ঢাকায় আনার পরামর্শ দেন। তারপর মহাখালী কিডনি হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্বাসকষ্ট থাকায় তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। শিউলির স্বজনরা তাকে নিয়ে যান শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে। শয্যা সংকট থাকায় সেখান থেকে নেয়া হয় বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে।
একই কারণে সেখানেও তাকে ভর্তি নেয়া হয়নি। এদিকে ধীরে ধীরে শিউলির শ্বাসকষ্ট বিপদসীমায় নেমে আসছিল। স্বজনরা উপায়ন্তর না পেয়ে তাকে নিয়ে যান মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে ভাগ্যের জোরে একটি শয্যার ব্যবস্থা হয়। কিন্তু ততক্ষণে তার অক্সিজেন লেভেল নেমে আসে পঞ্চাশের নিচে। আইসিইউ চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে সাধারণ শয্যায় তাকে ভর্তি করা হয়।
গতকাল দুপুরে মুগদা হাসপাতালে শিউলি আক্তারের বড় ভাই মেহেরাব হোসেন মানবজমিনকে বলেন, বছরখানেক ধরে আমার বোনের কিডনির সমস্যা। ঢাকার কিডনি হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছিল। কিডনির সমস্যার কিছুটা উন্নতি হলে তাকে বাড়ি নিয়ে যাই। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পর হঠাৎ করেই তার কাশির সঙ্গে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তড়িঘড়ি করে তাকে নিয়ে যাই নোয়াখালী সদর হাসপাতালে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা দেখে মুগদা হাসপাতালে আনার পরামর্শ দেয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে এখানে এসে দেখি কোনো শয্যা খালি নাই। অনেক কষ্টে দীর্ঘ অপেক্ষার পর একটি শয্যার ব্যবস্থা হয়। ১০-১২ দিন এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠে আমার বোন। এখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শেই তাকে বাড়ি নিয়ে যাই। কিন্তু বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কয়েকদিনের মাথায় তার আবার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাই আমরা তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে আবার ঢাকায় নিয়ে আসি। নোয়াখালীসহ ঢাকার আরো ৩টি হাসপাতাল ঘুরে শয্যার ব্যবস্থা করি।  মেহেরাব বলেন, আমার বোনের অবস্থা দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছিল। অথচ তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিতে পারছিলাম না। নোয়াখালী থেকে যে এম্বুলেন্স নিয়ে এসেছিলাম সেটার সিলিন্ডারের অক্সিজেন কিছুক্ষণ চলার পরই শেষ হয়ে যায়। তারপর থেকে অক্সিজেন ছাড়াই আমরা একের পর এক হাসপাতাল ঘুরছিলাম। যেসব হাসপাতালে গিয়েছি ওইসব হাসপাতালে একটু অক্সিজেন সাপোর্ট দেয়ার জন্য অনেক কাকুতি মিনতি করেছি। কিন্তু ভর্তি হবে না বলে তারা কোনো সাপোর্ট দেয়নি। ভোরবেলা রওয়ানা দিয়েছিলাম নোয়খালী থেকে। তারপর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা অক্সিজেন ছাড়াই যুদ্ধ করেছে আমার বোন।
মুগদা হাসপাতালের দায়িত্বরত এক চিকিৎসক জানান, শিউলি আক্তারের একদিকে কিডনির সমস্যা। অন্যদিকে তার করোনা সমস্যা। বেশ কয়েকদিন ধরেই তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। অক্সিজেন লেভেল এতো বিপদ সীমায় নামছিল আর কিছুক্ষণ অক্সিজেন ছাড়া থাকলে তাকে আর বাঁচানো যেতো না। এখন তার যে অবস্থা আইসিইউ ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। কিন্তু আইসিইউ খালি না থাকায় সাধারণ ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর