× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

রিমান্ডে মামুনুল হক

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২০ এপ্রিল ২০২১, মঙ্গলবার

হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ২০২০ সালের রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা এলাকায় ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে করা একটি মামলায় এ রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সকাল ১১টা ১০ মিনিটে তাকে ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাজেদুল হক। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মাওলানা মামুনুল হককে আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত করার আগেই আদালত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত পুলিশ।
রায় সাহেব বাজার থেকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোড় পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে পুলিশ। আদালতে সব দর্শনার্থীদের দেহ তল্লাশি করে ভেতরে ঢোকানো হয়।  বিশেষ  কোনো প্রয়োজন ছাড়া লোকজনকে কোর্ট এলাকায় যেতে দেয়া হয়নি। মামলার শুনানির সময় শুনানি কক্ষে বেশি আইনজীবীকে ঢুকতে দেয়নি পুলিশ।

যে মামলায় মামুনুলকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে ওই মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ৬ই মার্চ মোহাম্মদপুর সাতমসজিদ এলাকায় সাত গম্বুজ মসজিদে রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামি মাওলানা মামুনুল হক ও তার ভাই মুহতামিম মাহফুজুল হকের নির্দেশে জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার ছাত্র আসামি ওমর এবং ওসমান, বাদী ও তার সঙ্গে থাকা অন্যদের মসজিদের ভেতর আমল করতে নিষেধ করে। ধর্মীয় কাজে আঘাত করে তাদেরকে আসামিরা মসজিদ থেকে বের হয়ে যেতে বলে। বাদী তার প্রতিবাদ করলে মাওলানা মামুনুল ও তার ভাইয়ের নির্দেশে ওই মাদ্রাসার আরো ৭০/৮০ জন ছাত্র মাদ্রাসা  থেকে বের হয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করে। ওমর ও ওসমান তাদের হাতের লাঠি দিয়ে বাদীকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে তিনি গুরুতর আহত হন।
এরপর আসামিরা বাদীর কাছে থাকা একটি স্যামসাং মোবাইল, নগদ ৭ হাজার টাকা,  ২০০ ডলার ও ব্র্যাক ব্যাংকের একটি ডেবিড কার্ডসহ বাদীর মানিব্যাগ নিয়ে যায় এবং  পুনরায় মসজিদে প্রবেশ করতে দেখলে তাকে হত্যা করবে বলে হুমকি দেয়। মামলার এজাহারে বলা হয় যে, মামুনুলের বিরুদ্ধে অত্র মামলায় জড়িত থাকার সাক্ষ্য প্রমাণ প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়। তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ধর্মভীরু মুসলমান ও মাদ্রাসার ছাত্রদেরকে উস্কে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে।
রিমাণ্ড শুনাতিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আজাদ রহমান আদালতকে বলেন, যে মামলায় পুলিশ তার রিমান্ড আবেদন করেছেন ওই মামলা আইনের মধ্য দিয়েই হয়েছে। আসামি মামুনুলের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে বিধায় তার রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। আসামি মসজিদে ইবাদত করতে বাধা দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন।  তার এ কথা বলার সময় দুই পক্ষের আইনজীবীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে সিনিয়র আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। অপরদিকে  রিমান্ড বাতিল করে আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, আসামির বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। তাকে গ্রেপ্তার করার পর দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সেজন্য তাকে আর রিমান্ডে নেয়ার প্রয়োজন নেই।
তার কাছে ইতিমধ্যে অনেক তথ্য নিয়েছে পুলিশ। তিনি তার রিমান্ড বাতিল দাবি করেন। মামুনুলের জামিন আবেদন করেন তিনি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে কাঠগড়ায় থাকা মাওলানা মামুনুল দাঁড়িয়ে আদালতের উদ্দেশ্যে কিছু কথা বলতে চান। আদালত তাকে কথা বলার অনুমতি প্রদান করেন। মামুনুল হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারীর উদ্দেশ্যে বলেন, আমি প্রতি রমজানে নিয়মিত ইবাদত করি। রোজা রাখি। রোববার আমাকে যে জায়গায় রাখা হয়েছিল সেটা বসবাস ও ইবাদতের অনুপযোগী। তিনি ইবাদত করার উপযোগী জায়গায় তাকে রাখার আবেদন জানান। মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী তাকে বলেন, ‘আপনাকে ইবাদতের উপযোগী জায়গায় রাখা হবে। আপনার কোনো কষ্ট হবে না। ইবাদতের বিঘ্ন হবে না।’ পরে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আবদুল্লাহ আবু সাংবাদিদের জানান, মসজিদ থেকে বাদীকে বের করে দিয়ে মামুনুল ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে। তার রিমান্ড যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ সাংবাদিকদের জানান, আমার মক্কেল মামুনুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। এমন অভিযোগে রিমান্ডও নজিরবিহীন। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তিকে বের করে দেয়ার সময় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে  নেয়া হয়েছে।
মূলত এ ধরনের কোনো ঘটনাই ওই ব্যক্তির সঙ্গে ঘটেনি। তিনি আরো জানান, তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তার বিরুদ্ধে রিমান্ড কোনো যুক্তিযুক্ত নয়। আদালতে তার অনেক সহকর্মী ও সাংবাদিকদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। এটা ক্যামেরা ট্রায়াল। এতে দেশের আইনের শাসন ও বিচার ব্যবস্থা হুমকির মধ্যে পড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।  
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ডিসি (প্রসিকিউশন) মো. জাফর হোসেন জানান, মামুনুলকে আদালতে নিয়ে আসায় আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর