সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে শিশু জান্নাতির। প্যাঁচ খাওয়া পেটের নাড়ি জটিলতা সেরেছে। এখন শিশুটি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১৮ নং ওয়ার্ডের শিশু বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শঙ্কামুক্ত জান্নাতি দ্রুত সেরে উঠবে আশা চিকিৎসকের। শনিবার শিশু জান্নাতিকে বাঁচাতে ৯ ঘণ্টা রিকশা চালিয়ে ১১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে এসেছিল বাবা তারেক ইসলাম। জান্নাতির অস্ত্রোপচারের ব্যয় নির্বাহের জন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও বিত্তবানরা এগিয়ে এসেছে। যে বাবার কাছে এম্বুলেন্সের ভাড়ার টাকা ছিল না, সেই বাবার হাতে লাখ টাকায় সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাত ছানি দিচ্ছে। সোমবার সকাল ১১টায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহফুজুল হক জান্নাতির সফল অস্ত্রোপচার করেন।
এরপর তাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। মঙ্গলবার সকালে জান্নাতিকে ওয়ার্ডে দেয়া হয়। এ ব্যাপারে ডা. মাহফুজুল হক বলেন, শিশুটির সফল অপারেশন হয়েছে। নাড়ির মধ্যে আরেকটি নাড়ি ঢুকে যাওয়ায় যেটি ধারণা করছিলাম সেটিই হয়েছে। আমরা অপারেশন করে তা ঠিক করে দিয়েছি। বর্তমানে শিশুটি ভালো আছে। জান্নাতির বাবা তারেক ইসলাম বলেন, আমার বাচ্চার শারীরিক অবস্থা এখন ভালো। চিকিৎসক অপারেশনের পর বের হয়ে আমাকে বলেছে বাচ্চার কন্ডিশন ভালো রয়েছে। আমার বাচ্চার খবরটি মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আমার কাছে ফোন আসছে। এছাড়া বাচ্চার চিকিৎসার ব্যয়ভার সুপার শপ স্বপ্ন নিয়েছে। রংপুর জেলা প্রশাসক আর্থিক সহযোগিতা করেছে, ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন। এখনও অনেকে আমাকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য আর কোনো অর্থের প্রয়োজন নেই, তবে কেউ বাচ্চার ভবিষ্যতের জন্য কিছু করতে চাইলে করতে পারেন। উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দক্ষিণ সালন্দর গ্রামের রামবাবুর গোডাউন এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক তারেক ইসলামের তৃতীয় কন্যা জান্নাতির ১৩ই এপ্রিল রক্তপায়খানা হলে রাতে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে একদিন চিকিৎসা দেয়ার পর চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য জান্নাতিকে রংপুরে রেফার্ড করেন। কিন্তু লকডাউন পরিস্থিতিতে কর্মহীন হওয়ায় এম্বুলেন্সের ভাড়া যোগাড় করতে না পেরে শনিবার রিরশা চালিয়ে ৯ ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জান্নাতিকে ভর্তি করেন।