১০ রান হলেই টেস্ট ক্যারিয়ারে তার সেঞ্চুরির সংখ্যাটা স্পর্শ করতো দুই অঙ্কে। হ্যাঁ, ঝুলিতে জমা পড়তো ১০ম সেঞ্চুরি। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় তার ১০১ বলের ইনিংসটি হয়ে রইলো তামিম ইকবালের আরো একটি পাওয়া না পাওয়ার গল্প! ৬২ ম্যাচে ৯ সেঞ্চুরি। তার সঙ্গে ২৯ ফিফটি। যেখানে ৭০ এর উপরে ছয়বার আর ৮০ রান করে পাঁচবার আউট হয়েছেন বাংলাদেশের এই সেরা ওপেনার। গতকালসহ ২ বার ৯০’র ঘরে পৌঁছেও তিন অঙ্ক ছুঁতে ব্যর্থ। বলতে গেলে ১৩টি ইনিংসে সেঞ্চুরির আশা দেখিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লিখেছেন হতাশার গল্প।
কখনো ভালো বলে আউট আবার কখনো বাজে শটে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। গতকালও এমনই এক ভুলে দারুণ সব শটে সাজানো ৯০ রানের ইনিংসটি থেমে যায়। তামিমের সেঞ্চুরি যখন সময়ের ব্যাপার ঠিক তখনই মনোযোগ হারান তিনি। বিশ্ব ফার্নান্ডোর অফ স্টাম্পের বাইরের বলে সহজ ক্যাচ তুলে দেন স্লিপে। ১৫টি চার ছাড়া তার ইনিংসে নেই কোনো ছক্কার মার। বোঝা যায়, কতটা বুঝেশুনে খেলেছেন তিনি। হ্যাঁ, দলকেও দারুণভাবে পথ দেখিয়েছেন অভিজ্ঞ এই ওপেনার। দলীয় ৮ রানে তরুণ ওপেনার সাইফ হাসান নিজের নামের পাশে ০ নিয়েই ফিরে গেছেন সাজঘরে। সেখান থেকে আরেক তরুণ নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে তামিম গড়েন ১৩৪ রানের জুটি।
তামিম ইকবাল যখন হতাশ করে আউট হন তখন দলের স্কোর বোর্ডে ১৫২ রান ২ উইকেট হারিয়ে। সেখান থেকে শান্তর সেঞ্চুরি ও অধিনায়ক মুমিনুল হক সৌরভের ফিফটিতে দারুণ একদিন শেষ করে বাংলাদেশ। বলার অপেক্ষা রাখে না তামিমের সাহসী ইনিংসটা দলের অন্যদের ওপর দারুণ প্রভাব ফেলেছে। যাতে ভর করে মুমিনুল ও শান্ত ক্রিজে অবিচ্ছিন্ন থেকেই দিনের খেলা শেষ করেন। দল দারুণ অবস্থানে থাকলেও তামিম হয়তো ফের আক্ষেপ করবেন এমন একটা ইনিংস নিয়ে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫০টি ফিফটি হাঁকিয়েছেন। ক্রিজে একটু ধৈর্য দেখালে সেঞ্চুরির সংখ্যাটা আরো বেশি হতো এমন আক্ষেপ তিনি প্রায়ই করেন। টেস্টেও সেই আক্ষেপ বাড়ছে। এর আগে ২০১৩ তে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৫ রানে আউট হন তিনি।
টেস্ট ক্যারিয়ারের অভিষেক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ফিফটি হাঁকিয়ে শুরু করেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। মাত্র ১৬ রান দূরে থাকতে সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। এরপর ২০১০-এ চট্টগ্রামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছেন ৮৬ রানের ইনিংস। সেই সিরিজে একই দলের বিপক্ষে ঢাকায় ৮৫ রানে আউট হন। পরের বছর ২০১১তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফের খেলেছেন ৮৩ রানের ইনিংস। সবশেষ ২০১৭ তে এই শ্রীলঙ্কার মাটিতেই তার ব্যাট থেকে আসে ৮২ রানের ইনিংস। টেস্ট বলে কথা। যথেষ্ট সময় নিয়েই তিনি হয়তো সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে পারতেন। কিন্তু হঠাৎ অধৈর্য হয়ে বিলিয়ে দিয়েছেন উইকেট। ৭০ থেকে ৯০-ঊর্ধ্ব ১৩ ইনিংসে মাত্র ২টিতে বোল্ড আউট হয়েছেন তামিম ইকবাল। বাকি ১১টিতে বাজে শটে ক্যাচ দিয়ে ঘটিয়েছেন দারুণ ইনিংসের অপমৃত্যু।