× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মুসা ম্যানশন যেন জীবন্ত বোমা

এক্সক্লুসিভ

সোলায়মান তুষার
৭ মে ২০২১, শুক্রবার

রাজধানীর পুরান ঢাকার আরমানিয়ান স্ট্রিটে অবস্থিত হাজী মুসা ম্যানশন। ছয়তলা বিশিষ্ট ম্যানশনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় এমন সব কেমিক্যাল ছিল যেন ভবনটি একটি জীবন্ত বোমা। কমপক্ষে ২০টি কক্ষে সংরক্ষিত ছিল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রাসায়নিক ও পাউডার জাতীয় কেমিক্যাল। এর জন্য ছিল না কোনো অনুমতি। ব্যবসায়ীদের বেশির ভাগ স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় আইন-কানুনকে তোয়াক্কা করেননি। মানেননি কোনো নিয়ম। তার ক্ষতচিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছেন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। কমপক্ষে ৭ বছর ধরে ওই ভবনের প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় চলে আসছিল অবৈধ কেমিক্যাল ব্যবসা।
অনেক কক্ষ ব্যবহার করা হয়েছে কেমিক্যালের গোডাউন হিসেবে। ওখান থেকে সরবরাহ করা হতো অন্যান্য জায়গায়। এগুলো অত্যন্ত বিষাক্ত কেমিক্যাল। যা মানুষের জীবন ও পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। গত ২২শে এপ্রিল রাত সোয়া ৩টার দিকে হাজী মুসা ম্যানশনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় হাজী মুসা ম্যানশনে লাগা আগুন ২৩শে এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময় চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরো দুজন মারা যান। হাসপাতালে এখনো ভর্তি আছেন অনেকে। ওই ঘটনায় ২৩শে এপ্রিল বংশাল থানার এসআই মোহাম্মদ আলী শিকদার মুসা ম্যানশন ভবনের মালিকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ১৫-২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা গেলেও মামলার প্রধান আসামি ভবন মালিক মোস্তফা আহম্মেদ এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে জেনেও লাভবান হওয়ার জন্য অবৈধভাবে আবাসিক ভবনে দাহ্য পদার্থ ও কেমিক্যাল সংরক্ষণ করেছেন। অবহেলার ফলে মৃত্যু ও ক্ষতিসাধন করে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৩০৪-ক/৩৩৭/৪২৭ ধারায় অপরাধ করেছেন। ঘটনার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে র‌্যাব, পিবিআই ও ডিবি পুলিশ। গত ২৬শে এপ্রিল ভোরে র‌্যাবের বিশেষ অভিযানে দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি মোস্তাফিজুর রহমানকে রাজধানীর উত্তরা থেকে ও তিন নম্বর আসামি মো. মোস্তফাকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র?্যাব-১০ ও গোয়েন্দা বিভাগ। রিমান্ড শেষে তারা এখন কারাগারে। জামিনের আবেদন করলেও আদালত তা মঞ্জুর করেননি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গেছে, অতিরিক্ত মুনাফা লাভের আশায় গোডাউনে বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল ও দাহ্য পদার্থ মজুত করেন ব্যবসায়ীরা। এ জাতীয় কেমিক্যাল মজুতের ব্যাপারে তাদের কাছে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি ছিল না। মোস্তাফিজুর রহমান মঈন অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী ও মোহাম্মদ মোস্তফা মেসার্স আরএস এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। প্রতিষ্ঠান দুটি হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় অবস্থিত। ওই ভবনেই পরিবার নিয়ে থাকতেন ভবন মালিক মোস্তফা আহম্মেদ। আগুনের রাতে পরিস্থিতি বুঝে মোস্তফা গ্রিল কেটে পালিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার সন্ধান নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ঘটনার পর ১৫ দিন অতিবাহিত হতে চললেও এখনো রয়ে গেছে আগুনের ক্ষতচিহ্ন। ছয়তলা ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলা সিলগালা করে দেয়া হয় ঘটনার পরপরই। বংশাল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মীর রেজাউল ইসলাম ওই ঘটনার তদন্ত করছেন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ঘটনার তদন্ত যথারীতি চলছে। তিনি বলেন, সব আসামিকে গ্রেপ্তার করলে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর