× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দেশের ৭০ শতাংশ ফৌজদারি মামলা হয় ভূমিকেন্দ্রিক বিরোধের জেরে

এক্সক্লুসিভ

রাশিম মোল্লা
৮ মে ২০২১, শনিবার

বাংলাদেশের আদালতে বিচারাধীন মামলার একটি বড় অংশ জমি-জমা সংক্রান্ত। দেওয়ানি আদালতে এমনকি ফৌজদারি আদালতে বিচারাধীন মামলার একটি বড় অংশ জমি-জমা সংক্রান্ত। জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে মামলার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. বিল্লাল হোসেন বিপ্লবের একটি লেখায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। এ ছাড়া, অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতের এক গবেষণায় উঠে এসেছে দেশের ৭০ শতাংশ ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয় ভূমিকেন্দ্রিক বিরোধের জেরে। ভূমিকে কেন্দ্র করেই দুই ধরনের মামলা হয়। একটি ফৌজদারি, অপরটি দেওয়ানি মামলা। ১৯৬৪ সালে নিবারণ প্রামাণিক ঢাকার নিম্ন আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা ও একটি ফৌজদারি মামলা করেন।
তার স্বজনরা জানান, ফৌজদারি মামলার আশা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু সম্পত্তি প্রাপ্তির আশায় এখনো লড়ে যাচ্ছেন মামলা। কিন্তু এর আগেই ১৯৯৩ সালে নিবারণ প্রামাণিক মারা যান। মামলায় বাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত হন তার ছেলে লক্ষ্মণ প্রামাণিক ও পরেশ প্রামাণিক। গত বছর বাদীর ছেলে লক্ষ্মণ প্রামাণিক মারা যান। এর ৪-৫ বছর আগে মারা যান মামলার বিবাদী আব্দুল জলিল। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি মামলাটি। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন। বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, এই মামলার বাদী নিবারণ প্রামাণিক মারা গেছেন। এরপর তার দুই ছেলে লক্ষ্মণ ও পরেশ এই মামলায় পক্ষভুক্ত হন।

নথি থেকে জানা যায়, নিবারণ প্রামাণিক পেশায় কৃষক। ১৯৫০ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে চলে যান যশোরে। যাওয়ার সময় নিজের ভাগ্নে গৌর চন্দ্র মণ্ডলকে ১০ একরের বেশি সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে যান। দুই বছর পর ফিরে এসে সম্পত্তি আর ফেরত পাননি। পরে আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি। ১৯৬৪ সালে নিম্ন আদালতে দায়ের করা হয় মোকদ্দমা। পাকিস্তান আমলে করা ওই মামলায় ১৯৮৩ সালে নিম্ন আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। যাতে মামলার বিবাদী (নিবারণের ভাগ্নে গৌর চন্দ্র মণ্ডল) জমি বিক্রি করতে না পারেন। তবে ১৯৯১ সালে ভাগ্নে বিনিময় দলিলের মাধ্যমে ৯৮ শতাংশ জমি আবদুল জলিল নামের এক ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করেন। এর দুই বছর পর ১৯৯৩ সালে মারা যান নিবারণ। মামলায় বাদী হিসেবে পক্ষভুক্ত হন নিবারণের ছেলে লক্ষ্মণ প্রামাণিক ও পরেশ প্রামাণিক। মামলার শুনানি শেষে ১৯৯৯ সালের ৩১শে জানুয়ারি তৎকালীন সাব জজ আদালত নিবারণের পক্ষে রায় দেন। কিন্তু নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে নিজের কেনা ৯৮ শতাংশ সম্পত্তি ফিরে পেতে জজ আদালতে আপিল করেন আব্দুল জলিল। আপিল আংশিক মঞ্জুর করে ২০০০ সালের ২৭শে এপ্রিল রায় দেন আদালত। নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে দুই পক্ষই ২০০০ সালে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। ২০১৪ সালের ৩রা জুন হাইকোর্ট রুল খারিজ করে রায় দেন। অর্থাৎ জজ আদালতের দেয়া সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে আপিল বিভাগে আবেদন করেন লক্ষ্মণ প্রামাণিক ও তার ভাই পরেশ প্রামাণিক। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালের ২৩শে অক্টোবর আপিল বিভাগ মামলাটি হাইকোর্টে পুনঃশুনানির জন্য পাঠান।

এভাবেই বছরের পর বছর যায়। কিন্তু মামলা শেষ হয় না। এক সময়  বিচারপ্রার্থীরা হতাশ হয়ে রায়ের আশা ছেড়ে দেন। একপর্যায়ে বিচারপ্রার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবীর সঙ্গে। তবে এমন ঘটনা শুধু সাধারণ বিচারপ্রার্থীদের সঙ্গেই ঘটে তা কিন্তু নয়। আইনজীবীর নিজের মামলাতেও এমন ঘটনা ঘটে। ফলে, কয়েক যুগ পার হলেও মামলা শেষ হয় না। ঢাকা জজ কোর্টে স্বয়ং আইনজীবীর মামলায় ২০ বছরেও মামলাটি এখন যুগ্ম জেলা জজ ও পরিবেশ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বর্তমানে মামলাটি যুক্তিতর্ক ও দরখাস্ত শুনানির জন্য ছিল। এই মামলার বাদী-বিবাদী চারজন মারা গেছেন। বর্তমানে মামলার পক্ষভুক্ত হয়েছেন উভয়পক্ষের ওয়ারিশগণ। কবে মামলাটি শেষ হবে? সঠিকভাবে বলা যায় না। তবে জজ কোর্টে রায় হলে যে পক্ষেই রায় যাক না কেন, উভয়পক্ষই হাইকোর্টে আপিল করবে। ওখানেও বেশ কয়েক বছর সময় লাগবে। এরপর মামলাটির চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে। ক্ষোভের সঙ্গে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট শ্রেষ্ঠ আহমেদ রতন। তিনি মানবজমিনকে বলেন, ক্লায়েন্টরা মনে করেন আইনজীবীরা ইচ্ছা করেই মামলা শেষ করেন না। অথচ তারা বুঝতে চান না আইনজীবীর মামলাও বছরের পর বছর লেগে যায়। মামলা শেষ হয় না। তিনি জানান, ২০০০ সালে আমার পিতা ও চাচারা বাদী হয়ে ১০১ শতাংশ জমির স্বত্ব ও খাস দখল পুনঃউদ্ধারে মামলা করেন। ইতিমধ্যে বাদীপক্ষের দুইজন মারা গেছেন। বিবাদী পক্ষেরও দুইজন মারা গেছেন। কিন্তু এখনো মামলাটি শেষ হয়নি। মোকদ্দমাটি শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে এডভোকেট শ্রেষ্ঠ আহমেদ রতন বলেন, একটি আদালত প্রতিদিন ৪-৫টি মামলার শুনানি করেন। কেননা, তার অধীনে প্রতিদিন মামলা থাকে শতাধিকেরও বেশি। পরিতাপের বিষয় হলো, এই মামলার বাদী আমার দাদি আকলিমা বেগম মামলার রায় না দেখেই ইন্তেকাল করেছেন। নথি থেকে জানা যায়, ২০০০ সালে বসতবাড়ির জমি উদ্ধারে ঢাকার ৫ম সাব জজ (যুগ্ম জেলা জজ) আদালতে মামলা করেন। এখন পর্যন্ত বাদীপক্ষের মাত্র দু’জনের সাক্ষী জেরা শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ জন বাদী আকলিমা বেগম ও তিন বিবাদী জোনাব আলী, মোন্নাফ ও নাসির উদ্দিন ইন্তেকাল করেছেন। এখন পর্যন্ত এই মামলায় বেশ কয়েকজন আইনজীবী নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু কারো পক্ষেই মামলা শেষ করা সম্ভব হয়নি। কবে নাগাদ মামলাটি শেষ হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একটি মামলার তারিখ পড়ে কমপক্ষে দুই থেকে তিন মাস পর। এরমধ্যে আবার মামলার কার্যতালিকায় অনেক মামলা থাকায় আদালত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বেশি সময় দিতে পারেন না।

সূত্র জানায়, দেশের ৭০ শতাংশ ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয় ভূমিকেন্দ্রিক বিরোধের জেরে। জমি মালিকানা শনাক্তে সিএস, আরএস, এসএ এবং বিএস খতিয়ান রয়েছে। এসব খতিয়ানের মধ্যে সর্বশেষ করা বিএস ভুলেভরা। একজনের জমি রেকর্ড হয়েছে আরেকজনের নামে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মালিকের নাম ও জমির পরিমাণ ভুল উল্লেখ করা হয়েছে। কোথাও কোথাও আবার জমির দাগ নাম্বারও ভুলভাবে রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে খতিয়ানে ভুল থাকায় জমি কেনা-বেচায় নানা রকম জটিলতা দেখা দিচ্ছে। অন্তহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে জমি মালিকদের। কিন্তু এসব জটিলতা নিরসনে সরকার ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও পদে পদে রয়েছে বিড়ম্বনা। নানা প্রকার হয়রানিতে দিশাহারা ভূমি মালিকরা। ভুল ঠিক করতে লাখ লাখ রেকর্ড সংশোধনের মামলাও চলমান। তবে এসব মোকদ্দমা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ঝুলে আছে যুগের পর যুগ ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালে। মূলত সরকারি কর্মকর্তাদের অসহযোগিতা, আদালতে দীর্ঘসূত্রিতা সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় বিচারকের অভাবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ২০১২ সালে ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনাল হলেও ১০ বছরেও গঠন হয়নি আপিল ট্রাইব্যুনাল। এতে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে প্রতিকার চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা। এমনই একজন রাজধানীর কুড়িল এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমিন ২০০৯ সালে ঢাকার ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। ১০ বছর ধরে চলছে মামলা। এখনো নিষ্পত্তি হয়নি। রুহুল আমিন বলেন, তার পৈতৃক জমি অন্যের নামে রেকর্ড হয়ে গেছে। মামলা এখন সাক্ষী পর্যায়ে। ১০ বছর ধরে দৌড়াদৌড়ি করছি, ভোগান্তির শেষ নেই। মামলা থাকায় জমি নিয়ে কিছু করাও যাচ্ছে না। এ অবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু জরিপ ট্রাইব্যুনালই নয়, সেইসঙ্গে আপিল ট্রাইব্যুনাল থাকাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু আপিলের সুযোগ না থাকা চরম হয়রানিমূলক বিষয়। দ্রুত আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করা উচিত। এ ছাড়া বিদ্যমান আইনে ট্রাইব্যুনালের রায়ে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে আপিল করার জন্য হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করার কথা বলা হয়। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতাসহ নানা কারণে ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনাল আর স্থাপন করা হয়নি। ফলে ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালের রায়, ডিক্রি এবং আদেশে কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকার পেতে বিচারপ্রার্থীদের হাইকোর্টে রিট করতে হয়। এ ছাড়া এক-একটি মামলা শুনানির তারিখ ধার্য করতে হচ্ছে ছয় মাস থেকে এক বছর পরপর। এতে মামলা নিষ্পত্তিতে দেরি হচ্ছে। বিচারপ্রার্থীদের দুর্ভোগও বাড়ছে। এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এই প্রতিবেদন দেয়া হলেও কোনো কাজ হয়নি।

সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গত জুন পর্যন্ত সারা দেশের ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালগুলোয় বিচারাধীন মামলা ৩ লাখ ১৪ হাজার ৪০৯টি। এরমধ্যে পাঁচ বছরের ওপরে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৮০৭টি। উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ১৯৩টি মামলার বিচার। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আইন হওয়ার দীর্ঘ ১৬ বছর পর আপিল ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জেলা জজ পদমর্যাদার বিচারকদের এ আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারিক এখতিয়ার দিতে আইন সংশোধনের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এদিকে ২০০৪ সালের আইন অনুযায়ী দেশে ৪৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। এসব ট্রাইব্যুনালে গড়ে ৭ হাজারের ওপর মামলা ঝুলছে। বর্তমানে সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের মোট ৩৮ লাখের বেশি মামলা বিচারাধীন। কিন্তু এর মধ্যে ভূমি জরিপ সংক্রান্ত মামলার অবস্থা সবচেয়ে করুণ। কারণ অন্য মামলাগুলোর ক্ষেত্রে বেশির ভাগই একটি বা দুটি স্তরের আপিল অতিক্রম করেছে। কিছু মামলার নিষ্পত্তি ঘটেছে। কিন্তু ভূমি জরিপ মামলাগুলো প্রায় প্রাথমিক ধাপেই পড়ে আছে। অধিকাংশ মামলার শুনানিই শুরু হয়নি। ২০১৫ সালে এক রিটের শুনানিকালে হাইকোর্ট দেশে কোনো ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনাল না থাকার বিষয়টি লক্ষ্য করেন। পরে ওই বছরের ৩রা মার্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। এরপর চূড়ান্ত শুনানি করে হাইকোর্ট গত বছর রায় দেন। গত ১২ই অক্টোবর ওই রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে তিন মাসের মধ্যে ভূমি জরিপ আপিল ট্রাইব্যুনাল স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়। হাইকোর্টে দেয়া ওই রায়ের পর্যালোচনায় বলা হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছরে ভূমি মন্ত্রণালয় আপিল ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করতে না পারায় লাখ লাখ মানুষ ‘চরম ও সীমাহীন দুর্ভোগে’ নিমজ্জিত হয়েছেন। সরকার নিজের আইন নিজে যথাযথ এবং দ্রুত সময়ে বাস্তবায়ন করবে, এটাই সকলের কাম্য। রায়ে আরো বলা হয়, ‘গত ১৫ বছর ভূমি মন্ত্রণালয় এ দেশের মালিক জনগণকে তার আইনসম্মত প্রাপ্য (তথা আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল মামলা দায়েরের) অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চলেছে। ফলে জনগণের মৌলিক অধিকার যেমন লঙ্ঘিত হচ্ছে, তেমনি জনগণ সুবিচার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবরা আপিল ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিয়োগ না করে জনগণের সঙ্গে অমানবিক, নিষ্ঠুর এবং ক্ষমার অযোগ্য আচরণ করেছেন। ১৫ বছর ধরে আপিল ট্রাইব্যুনাল গঠন করায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করা মন্ত্রী-সচিবদের কৈফিয়ত চাওয়ার কথা বলা হয়েছে রায়ে।

এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল বলেন, ভূমি জরিপ ট্রাইব্যুনালে মামলাজট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আসলে সংক্ষুব্ধদের আপিল করার সুযোগ না থাকায় জট দিনদিন বাড়ছে। মামলাজট নিরসনে পদক্ষেপ নেয়াও সম্ভব হচ্ছে না। ট্রাইব্যুনালে মামলা হারলেই উচ্চ আদালতে আসতে হয়। এতে উচ্চ আদালতেও বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়। সেইসঙ্গে বিচারপ্রার্থীদের চরম হয়রানির শিকার হতে হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর