× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ছেলের মৃত্যুশোককে শক্তিতে পরিণত করে মানবতার সেবায় মা রুমা

দেশ বিদেশ

কাজী সোহাগ
৮ মে ২০২১, শনিবার

দারুন সাজানো সংসার ছিল। স্বামী, স্ত্রী, এক ছেলে আর এক মেয়ে। ২০১৯ সালের ২৮শে জুন এক দুর্ঘটনায় চারজনের সাজানো সংসার দাঁড়ায় তিনজনে। ১৯ বছরের টগবগে তরুণ রাফী মৃত্যুবরণ করেন। গভীর শোক নেমে আসে সুখী ওই পরিবারে। ছেলের অকাল মৃত্যুর শোককে এখন শক্তিতে পরিণত করেছেন মা রুমা ইসলাম। সঙ্গে রয়েছেন স্বামী গিয়াস উদ্দিন ও একমাত্র মেয়ে রিয়াকা ইসলাম। ২০২০ সালে ছেলের জন্ম তারিখ ৪ঠা সেপ্টেম্বরে তারা গড়ে তোলেন আর রাফী ফাউন্ডেশন।
প্রায় দুই বছর ধরে ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গরিব ও অসহায় মানুষদের সহায়তা করে আসছেন তারা। এ পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার পরিবারকে নানাভাবে সহায়তা করেছেন। শুরুতে ঢাকার মধ্যে তাদের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকলেও এখন রাজধানীর বাইরেও অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন তারা। প্রায় প্রতিদিনই আর রাফী ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রুমা ইসলামের ফোনে আসে অসহায় ও অভুক্ত মানুষের ফোন। অবস্থা বিবেচনা করে বিকাশ, নগদ কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে তাদের কাছে পাঠিয়ে দেন নগদ টাকা। করোনা মহামারির কারণে অনেক এতিমখানার অবস্থা শোচনীয়। খুঁজে খুঁজে বের করে সেসব এতিমখানায়ও নিজেদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন আর রাফী ফাউন্ডেশন। আজ শনিবার উত্তরার বালুরমাঠ এলাকায় অবস্থিত কাদিমুল মাদ্রাসায় শিশুদের সহায়তা করতে যাবে ওই ফাউন্ডেশন। সেখানে ৩৫  থেকে ৪০ জন এতিম শিশু খাবার সংকটে রয়েছে এমন তথ্য পাওয়ার পরই তাদের পাশে দাঁড়াতে যাচ্ছে ফাউন্ডেশনটি। গত বৃহস্পতিবার ৪০০টি পরিবারের মাঝে ৭ দিনের সমপরিমাণ অতি প্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ে তাদের সহযোগিতা করেন তারা। কোনো রকম অনুদান ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে চলছে ফাউন্ডেশনটি। এতে তাদের প্রতি বছর খরচ হচ্ছে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রুমা ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, মানুষকে নানাভাবে সহায়তা করতে গিয়ে বুঝেছি আমাদের একক আর্থিক সামর্থ্যে কুলাবে না। প্রতিবন্ধী একজন শিশুর মা যখন তার বাচ্চার খাবারের সংকটের কথা বলেন, বিশ্বাস করেন তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়। মনে হয় সবকিছু উজাড় করে দিয়ে তাদের পাশে থাকি। এরইমধ্যে কয়েকজনকে সহায়তা করতে পেরেছি। ভবিষ্যতে আরো করবো। প্রথমদিকে শুধু রাজধানী কেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও এখন আর রাফী ফাউন্ডেশন দেশের বিভিন্ন জেলার অসহায় মানুষদের সহায়তা দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত পটুয়াখালী, সাভার, বগুড়া, চট্টগ্রামসহ আরো কয়েকটি জেলার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তারা। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস উদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের মতো আর রাফি ফাউন্ডেশনকে ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। প্রসঙ্গত বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন একটি বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা যা শিশুদের নিয়ে কাজ করে। সংগঠনটি পথশিশু, সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র ও অসচ্ছল শিশুদের মৌলিক শিক্ষা, আহার, চিকিৎসা এবং আইন সেবা প্রদান করে থাকে। এটি শিশুদের নিয়ে কাজ করে। বিদ্যানন্দ ২০১৩ সালের ২২শে নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত। নিজেদের ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রায় একই মন্তব্য করেন  ট্রাস্ট্রি বোর্ডের অন্যতম সদস্য রিয়াকা ইসলাম। তিনি বলেন, ভাইয়ের অকাল মৃত্যু আমাদের সবাইকে ব্যথিত করেছে। ৪ঠা সেপ্টেম্বর তার জন্মদিন। এদিন আমরা আর কখনই উদযাপন করতে পারবো না। তাই ভাইয়ের জন্মদিনেই আমরা আর রাফী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত করেছি। হাজারো মানুষের পাশে দাঁড়ানোর তৃপ্তি নিয়ে এখন থেকে আমরা দিনটি উদযাপন করতে চাই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর