মুক্ত, উদার, সর্বব্যাপি এবং নীতিমালাভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুর্নব্যক্ত করেছে ভারত, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া। লন্ডনে সম্প্রতি এই তিনদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। এটি ছিলো ইন্ডিয়া-ফ্রান্স-অস্ট্রেলিয়া ট্রিলেটারাল মিনিস্ট্রিয়াল ডায়ালগের প্রথম কোন বৈঠক। তবে এ বৈঠকটি চীনের জন্য সুখকর নাও হতে পারে। কারণ ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলোর সঙ্গে নাজুক সম্পর্ক সত্ত্বেও নিজেদের আগ্রাসী মনোভাব অব্যাহত রেখেছে চীন।
লন্ডনে আয়োজিত জি-৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের এক ফাঁকে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস.জয়শংকর, ফ্রান্সের ইউরোপ বিষয়ক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেন-ইভস লে দ্রিয়ান এবং অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিনেটর মেরিস পেন।
বৈঠক শেষে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারত, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া নিজেদের মধ্যে বিনিময় করে আসা মূল্যবোধকে আরো এগিয়ে নিতে বদ্ধপরিকর।
পাশাপাশি একটি মুক্ত, উদার, সর্বব্যাপী এবং নীতিমালাভিত্তিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গঠনে আমরা একত্রে কাজ করবো। মন্ত্রীরা আইনের শাসন, নৌচালনার স্বাধীনতা, বিভিন্ন বিবাদের শান্তিপূর্ণ সমাধান, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘আসিয়ানের কেন্দ্রীয়তা রক্ষা এবং আসিয়ান আউটলুক অন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিকে সমর্থন অব্যাহত রাখা নিয়ে দেয়া প্রতিশ্রুতি নিয়ে আবারো নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া মেরিন রিসোর্স পিলারের নেতৃত্ব দিয়ে আইপিওআইয়ে যোগ দেয়া নিয়ে ফ্রান্সের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন তারা এবং মেরিন ইকোলজি পিলারে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বকেও স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।’
আলোচনায় করোনা মহামারীতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সকে ধন্যবাদ জানানো হয়। মহামারীর কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জসমূহ মোকবিলা করতে ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে মত দিয়েছেন মন্ত্রীরা। তারা উচ্চমান সম্পন্ন, নিরাপদ, কার্যকর এবং সাশ্রয়ী মূল্যে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বব্যাপী কোভিড ভ্যাকসিন সরবরাহে ভারতের ইতিবাচক ভূমিকারও স্বীকৃতি দিয়েছেন তারা।
মন্ত্রী পর্যায়ে এই আলোচনা চলাকালে তিন দেশ ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে কৌশলগত, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এসব বিষয় নিয়ে একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন, দ্য ইন্ডিয়ান নাভাল সিম্পোসিয়াম, আসিয়ান, ইস্ট এশিয়া সামিট এবং প্যাসিফিক আইল্যান্ড ফোরামের মতো আঞ্চলিক সংগঠগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টি তারা আবারো উল্লেখ করেন।
সূত্র: জাস্টআর্থ নিউজ