আবারো মৃত্যু বাড়ছে। আগের দিনের চেয়ে ১১ জন বেড়ে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরো ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর মতো বেড়েছে শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৮৬ জন। তার আগের দিন শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৮৫ জন। নতুন করে মারা যাওয়া ৫৬ জনের মৃত্যু নিয়ে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১১ হাজার ৯৩৪ জন। নতুন শনাক্ত নিয়ে সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫১৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৩২৯ জন।
এ পর্যন্ত আক্রান্ত থেকে সুস্থ হলেন ৭ লাখ ১০ হাজার ১৬২ জন। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনার নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ১৯ দশমিক। এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ১৬ হাজার ৭৭৫টি এবং গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৬ হাজার ৯১৫টি। দেশে এখন পর্যন্ত মোট করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৬ লাখ ৩০ লাখ ৮৯৪টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৪১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৬২টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৫৩২টি। দেশে বর্তমানে মোট ৪৫৪টি পরীক্ষাগারে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআরের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ১২৮টি পরীক্ষাগারে, জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ৩৫টি পরীক্ষাগারে এবং র্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হচ্ছে ২৯১টি পরীক্ষাগারে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৫৬ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৮ জন এবং নারী ১৮ জন। দেশে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে পুরুষ মারা গেলেন ৮ হাজার ৬৫৩ জন এবং নারী মারা গেলেন ৩ হাজার ২৮১ জন।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ৬০ বছরের উপরে আছেন ৩০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ জন। বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২১ জন, রাজশাহী বিভাগে ৩ জন, খুলনা বিভাগে ৪ জন, বরিশাল ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে এবং সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে রয়েছেন ১ জন করে। তাদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে মারা গেছেন ৩৬ জন, বেসরকারি হাসপাতালে ১৫ জন এবং বাসায় মারা গেছেন ৫ জন।
টিকা বিতরণ ৯৩ লাখ ১৬ হাজার ডোজ: দেশে ২৪তম দিনে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৯৪ হাজার ৬৫৫ জন। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরে নিয়েছেন ২৩ হাজার ৪৯৪ জন। এ পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার ১৮৬ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় মিলে টিকা দেয়া হয়েছে ৯৩ লাখ ১৬ হাজার ৪৮ ডোজ। বিতরণ করা টিকা বাদ দিলে হাতে মজুত আছে মাত্র ৮ লাখ ৮৩ হাজার ৯১৪ ডোজ। ঘাটতি টিকার পরিমাণ ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৮০০ ডোজ। অন্যদিকে সারা দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরুর ৭৩তম দিনে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন ৪৪ জন। যদিও ২৬শে এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ টিকা গণহারে দেয়া বন্ধ রয়েছে। তবে কিছু সেন্টারে প্রভাবশালীদের চাপে প্রথম ডোজ কিছু টিকা বিতরণ চলছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এ পর্যন্ত দেশে মোট প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৯০০ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৩৬ লাখ ৮ হাজার ৯৭০ জন এবং নারী ২২ লাখ ১০ হাজার ৯৩০ জন। টিকা নেয়ার পর সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে মোট ৯৯৮ জনের। অন্যদিকে অনলাইনে নিবন্ধনও ২রা মে’র পর থেকে বন্ধ রয়েছে। এ পর্যন্ত মোট নিবন্ধন করেছেন ৭২ লাখ ৪৮ হাজার ৮২৯ জন। প্রসঙ্গত, গত ২৭শে জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে গণটিকাদান শুরু হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে। আর দ্বিতীয় ডোজ শুরু হয় ৮ই এপ্রিল থেকে। দেশে কেনা এবং উপহার পাওয়া মিলে এ পর্যন্ত টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ।