শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সিরিজ হেরে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। এবার ঘরের মাঠে তাদের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ ওয়ানডে সিরিজে। নিজেদের মাটিতে হলেও প্রতিপক্ষ লঙ্কানদের ছোট করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। টেস্টে টাইগারদের হারিয়ে তারা বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে। অন্যদিকে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটেই একের পর এক হার মানসিকভাবে পিছিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ দলকে। কঠিন এই বাস্তবতা মানেন খালেদ মাহমুদ সুজনও। বিসিবির এই পরিচালক এবার শ্রীলঙ্কা সফরে টিম লিডার হিসেবে ছিলেন দলের সঙ্গে। সামনে থেকে দেখেছেন টিম টাইগারদের পিছিয়ে পড়া।
তবে পরিস্থিতি যাই হোক নিজেদের মাটিতে বেশ আত্মবিশ্বাসী সুজন। তিনি বলেন, ‘নবীন হলেও শ্রীলঙ্কা বেশ শক্ত দল হবে। অবশ্যই আমরা ঘরের মাঠে সিরিজ জিততে চাই। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের সামর্থ্য আছে সিরিজ জেতার। যদিও বেশ কিছু খেলায় হেরে আমরা ব্যাকফুটে, কিন্তু আমি মনে করি এই ফরম্যাটে আমরা বেশ দুর্দান্ত দল। আমি মনে করি আমাদের কন্ডিশন, যদিও শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের কন্ডিশনে খুব বেশি ফারাক নেই তবুও আমাদের হোম গ্রাউন্ড আমরা চেষ্টা করবো নিজেদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে। আমি বিশ্বাস করি সিরিজটা আমরা জিতবো।’
শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফিরে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা ছিল টেস্ট দলে থাকা ক্রিকেটারদের। তবে গতকাল থেকে সেই নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই অনুশীলনে হাজির হয়েছিলেন লঙ্কা ফেরতদের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। এর মধ্যে ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল না থাকলেও ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহীম, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিঠুন ও লিটন দাস। যদিও এই অনুশীলনে সুযোই পাওয়ার কথা ছিল না তাদের। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘আসলে আমাদের এই ট্রেনিংটা করার কথাই ছিল না। ১৭ তারিখ কোয়ারেন্টিন শেষ হলে ১৮ তারিখ আমরা নামতে পারতাম। শ্রীলঙ্কায় বসেই চিন্তা করেছি ঢাকায় যারা আছে ওয়ানডে দলের তাদের কথা। তাদের জন্যই মূলত অনুশীলনের ব্যবস্থা করা। এর বাইরে শ্রীলঙ্কা ফেরতদেরও একটা বড় গ্যাপ হয়ে যায়। তাই ৭, ৮ ও ৯ তারিখ অনুশীলন করে একটা বিরতিতে যেতে চেয়েছি। তো সেভাবেই অনুশীলনের পরিকল্পনাটা। আর ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে এমনটা জানতাম না। আসার দিন আমরা শুনতে পাই অন্তত হোম কোয়ারেন্টিন করতে হবে। আসার আগে জানলে প্ল্যান হয়তো ভিন্ন হতো। তো যাইহোক সরকারের বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানতে হয়েছে। তবে এরপরও আমরা যে এখন সুযোগ পাচ্ছি, তাসকিন আজ বোলিং করলো, মুশফিক ব্যাটিং করলো এসব আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
২৩ সদস্যের ক্যাম্প ঘোষণা করলেও প্রথম পাঁচ দিন মাত্র ৬ জনই অনুশীলনে অংশ নেন। তবে গতকাল প্রধান কোচসহ প্রায় ১৫ জনের বেশি ক্রিকেটার নিজেদের প্রস্তুত করতে মাঠে নামেন। তবে পুরোটাই ছিল ঐচ্ছিক অনুশীলন। এ বিষয়ে সুজন বলেন, ‘অনুশীলন ঐচ্ছিক ছিল, যেহেতু আমরা সরকারের অনুমতি পেতে দেরি করেছি। অনেকে টিকিট করে ফেলে, অনেকে চলে গিয়েছে। তারপরও আজকে অনেকগুলো ছেলে কাজ করেছে। এক্সাক্ট কতজন সেটা আমি বলতে পারবো না। তাও ১৫-১৬ জন হবে। আগামীকালও ঐচ্ছিক অনুশীলন রাখা হয়েছে।’
সবশেষ নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কা সফরে দলের বাজে ফিল্ডিং ছিল আলোচনা-সমালোচনার বড় কারণ। তাই এই বিভাগে উন্নতির বেশ তাগিদ অনুভব করছেন খালেদ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘অনেক সচেতন। ফিল্ডিংতো অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আপনি যদি বোলার হন ১০ ওভার বল করতে পারবেন কিন্তু ৪০ ওভার তো ফিল্ডিং করতে হবে। আপনি যদি ভালো ফিল্ডার না হন ব্যাপারটা কঠিন। আপনি ১০ ওভার শুধু বল করলেন, আপনার কাছে তো দল আশা করে না আপনি রান করবেন। টিম ম্যানেজমেন্টের আশা তো একজন বোলার ভালো ক্যাচ ধরবে, ফিল্ডিং করবে। এসব বোলারদের মাথায় না শুধু সবার মাথায়ই আছে। ফিল্ডিং তো আমাদের নিয়মিত চর্চার একটা ব্যাপার। নিজের ইচ্ছেরও ব্যাপার আছে যে আমি কতটুকু কষ্ট করতে পারি। ফিল্ডিংতো প্রতিদিনই হবে সে যাই হোক না কেন আমার কাছে মনে হয় মানসিক ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি কতটুকু নিজেকে এপ্লাই করছি বা অ্যাপ্রোচ করছি। শ্রীলঙ্কাতেও কথা হয়েছে ছেলেদের সঙ্গে, আজকেও কথা হলো ফিল্ডিং নিয়ে। আমি বিশ্বাস করি তারা চেষ্টা করছে, ভালো করার জন্য মুখিয়ে আছে তারা।’