দুই ঘাটেই ঘরমুখো মানুষে চাপে ফেরি বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে দক্ষিণ অঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। তাই একটু বেশি ঝুঁকি নিয়ে কোস্টগার্ডকে ফাঁকি দিয়ে অনেকেই ৫শ’ টাকা ভাড়া দিয়ে ট্রলারে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে।
অন্যদিকে বিজিবি মোতায়েনের পরও গতকাল সকাল থেকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ায় ও শিবচরে বাংলাবাজার ঘটে বাড়িফেরা মানুষদের ঢল বেড়েই চলেছে। বিজিবির বাধা সত্ত্বেও এককিলোমিটার পথ হেঁটে ফেরি ঘাটে আসছে ঘরমুখো মানুষ। রাতে ফেরি চলাচল করলেও এখন পর্যন্ত কোন ফেরি শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসেনি। তবে বাংলাবাজার ঘাট থেকে ভোরে একটি ফেরি ছেড়ে গেছে।
তথ্য নিয়ে জানা যায়, অনেকেই গত রোববার সকাল থেকে ঘাটে থাকতে থাকতে একটু বেশি ঝুঁকি নিয়ে ঘাট শিমুলিয়া ঘাটের একটু দূরে গিয়ে ট্রলারে উঠছে এবং ভাড়া ৫শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে। যাত্রী কম নিলে ৬শ’ আর যাত্রী বেশি নিলে ভাড়া ৫শ।
একটি ট্রলারে কমপক্ষে ২০জন উঠতে পারলে সেখানে ৩০-৪০জন করে গড়ে তুলে পদ্মা পাড় করে শিবচর ও জাজিরার মাঝে দুর্গম চরে পাশে তাদের নামিয়ে দিচ্ছে। এরপর সেখান থেকে পায়ে হেঁটে ঘাট এলাকায় আসছে। অন্যদিকে পদ্মা নদীতে কোস্টগার্ডের সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। কিন্ত তারপর কিভাবে এই ট্রলারগুলো শিমুলিয়া থেকে আসছে সেদিকে কারো নজর নেই।
পটুয়াখালীগামী এক গৃহিণী রওশনারা জানান, গতকাল থেকে রোববার নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে বসে ছিলাম অনেকবার চেষ্টা করেছি ফেরিতে উঠতে। কিন্তু পরিবার নিয়ে উঠতে পারিনি। তাছাড়া ফেরিও মাত্র দুটি পেয়েছিলাম। রাতেও উঠতে পারিনি। তাই বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে ট্রলারে পদ্মা পার হলাম। ঝুঁকি ছিল বেশি আর আমিসহ আমার পরিবারের সবাই ভয়ে ভয়ে ছিলাম। যাই হোক এপারতো আসতে পারছি।
ফরিদপুরগামী এক যাত্রী বলেন, ট্রলারে আসবো না কি করবো বলেন, ফেরিতে তো উঠতে পারছি না। লকডাউন শুধু আমাদের জন্য। ভাড়া ৫শ নিছে তারপরও বাড়ি যেতে পারবো তাতেই খুশি।
খুলানগামী এক যাত্রী রহুল আমিন জানান, লকডাউন দিলে সব বন্ধ রাখবে। কিন্তু সবকিছু খুলে দিয়ে আমাদের বাড়ি যাওয়া ফিরাচ্ছে লঞ্চ ফেরি বন্ধ রেখে। এটা কি ঠিক বলেন? এখন যা হচ্ছে মানুষের দুর্ভোগ তাতে মানুষ আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাবে। সরকারের উচিত লঞ্চ চালু না করলেও ফেরি গুলো সব চালু করা।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের অবাধে যাতায়াত ঠেকাতে শিমুলিয়া ঘাটে রোববার সকাল থেকে টহল দিচ্ছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। তবে বিজিবি সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে নানা কৌশলে যাত্রীরা ঢুকে পড়ছেন ঘাট এলাকায়। এখনো ঘাট পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে হাজারো যাত্রী। যাত্রীদের পারাপার ঠেকাতে গতকাল শনিবার ভোর থেকে সকল প্রকার ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে ফেরি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তারপরও ওই দিনও কয়েকটি ফেরি শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যাত্রী নিয়ে আসে এবং বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
বাংলাবাজার নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান,যারা ট্রলারে পার করছে। তারা কিন্তু আমাদের ঘাটের আশপাশেও ভিড়ছে না। তারা জানে যেখানে কোন পুলিশ বা গার্ড নেই সেখানে ভিড়ছে। তাছাড়া এই ট্রলার যদি শিমুলিয়া থেকে না ছাড়তো তাহলেতো আমাদের এখানে আসতো না। এটা দেখা উচিত শিমুলিয়া ঘাট থেকে। তবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে কেউ ট্রলারে পার না হয়।