বাপরে আপনারা আমারে একখানা ঘরের ব্যবস্থা কইরা দেন। দেহেন না কত কষ্টে এই ঝুপড়ি ঘরের মধ্যে আছি। প্রধানমন্ত্রী কত মানুষেরে ঘর দিছে আমার ভাগ্যে একখানা ঘর জুটলো না। চেয়ারম্যান মেম্বররে কত কইছি, তারা কেউ আমার কথা শুনলো না। বিষ্টি অইলে সারা রাইত কাথা গুছাইয়া এক কোনে বইসা থাকি। না খাইয়া থাকি তাইতে দুঃখ নাই। রোদে পুইররা আর বিষ্টিতে ভিইজ্জা দেহটা শেষ হইয়া গেল। মরার আগে যদি একখানা ঘর পাইতাম তাইলে শান্তিতে মরতে পারতাম।
এভাবেই আকুতি জানিয়ে কথাগুলো বলছিলেন স্বামী পরিত্যক্তা ৬৫ বছর বয়সী রিজিয়া বেগম। তিনি উপজেলার হিরন গ্রামের লোকমান খানের মেয়ে। গত শনিবার ওই গ্রামে তথ্য সংগ্রহের জন্য সাংবাদিকরা উপস্থিত হলে তিনি আকুতি জানিয়ে এ কথাগুলো বলেন। জানা গেছে হিরন গ্রামের লোকমান খানের মেয়ে রিজিয়া বেগম বিবাহের পর একটি সন্তান জন্ম নিলে স্বামী তাকে তালাক দিয়ে অন্যত্র বিবাহ করে। সেই থেকে তিনি পিত্রালয়ে আশ্রয় নেন। বাবার আশ্রয়ে বেশ কয়েক বছর খেয়ে পড়ে ভালোই ছিলেন রিজিয়া বেগম। পিতার মৃত্যুর পর তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। গরিব ভাইয়েরা যার যার সংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটে তার। জীবিকার প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে সে কাজ নেয় দিন মজুরের। আজ বয়সের ভারে সে কাজও তার বন্ধ হয়ে গেছে। ভাইদের ঘরে আশ্রয় না পেয়ে বাড়ির অদূরে পুকুরপাড়ে হোগলা ও তালপাতা দিয়ে একটি খুপড়ি ঘর তুলে তার মধ্যে তিনি বসবাস করছেন। চেয়ারম্যান ও মেম্বরের কাছে ধর্ণা দিয়েও তার ভাগ্যে জোটেনি একখানা ঘর। তাই তিনি একখানা ঘর পাবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই গ্রামের ইউপি সদস্য লিটু খানের কাছে জানাতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মেম্বর হিসাবে কোনো ঘর বরাদ্দ পাই নাই, তাই তাকে ঘর দেয়া সম্ভব হয়নি। হিরন ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়া জানান- এর আগে যেসব ঘর বরাদ্দ পেয়েছি তা বণ্টন করা হয়েছে, পরবর্তী সময়ে বরাদ্দ পেলে তাকে একটা ঘর দেয়ার চেষ্টা করবো।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অবদান টিআর কাবিটা কর্মসূচির আওতায় উপজেলায় যেসব ঘর বরাদ্দ হয়, তা জনপ্রতিনিধিরা যেভাবে তালিকা দেয় সেভাবে বিতরণ করে থাকি। আমার ব্যক্তিগতভাবে কিছুই করা সম্ভব নয়।