সিপিডি’র ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, চলতি অর্থবছরে করোনাকালীন বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। হয়তো এবারেও অন্যান্য বারের মতোই ৬-৭ মাস অতিবাহিত হলে বাজেট রিভাইস হবে এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে। তিনি বলেন, বাজেট বাস্তবায়ন হতে হবে গুণগত ও মানসম্পন্ন। ব্যয় বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ দীর্ঘায়িত করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাজেটে বার বার কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ রাখা হচ্ছে তা দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। কালো সাদা করার পরেও প্রতি বছর প্রায়ই গড়ে ৫০ থেকে ৬০ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে।
গত শনিবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘করোনা প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট’ নিয়ে ছায়া সংসদে সিপিডি’র ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, কর আহরণ প্রক্রিয়া উন্নয়নের ডিজিটাল প্লাটফর্মের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অপ্রত্যক্ষ করের পরিবর্তে প্রত্যক্ষ করের ওপর গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, সুশাসন, রাজনৈতিক স্বদিচ্ছাই পারে গুণগতভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করতে। করোনাকালে সারা বিশ্বই অর্থনৈতিক ঝুঁঁকি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও খাদ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়লেও বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত খাদ্য ঝুঁকিতে পড়েনি। তবে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য ঝুঁকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও সামাজিক সুরক্ষায় কোনো অবদান রাখছে না। এই ধারাবাহিকতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন নজরদারি খবরদারি প্রতিষ্ঠান ও আইনের মাধ্যমে অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, এবারের বাজেটে করোনার কারণে যারা নতুন দরিদ্র হয়েছেন, যারা কাজ হারিয়েছেন তাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা খাতে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা নেই। অতিদরিদ্রদের জন্য নগদ প্রণোদনার পরিমাণ ও আওতা বাড়িয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে বণ্টন নিশ্চিত করতে হবে। এবারের বাজেটে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর চাপ তৈরি করবে। করোনার এই অতিমারির সময় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর ভ্যাট প্রত্যাহারের বিষয়টি সরকারের বিবেচনা করা উচিত। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ থাকলেও এবারের বাজেটে অভিবাসীদের প্রেরিত অর্থের ২ শতাংশ প্রণোদনা বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করার বিষয়ে কিছু উল্লেখ ছিল না। প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের ওপর প্রণোদনা বাড়ালে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের এই খাতটি আরও বেশি গতিশীল হবে। একই সাথে প্রবাসী আয়ও বৃদ্ধি পাবে। প্রতিযোগিতায় ঢাকা কমার্স কলেজকে পরাজিত করে সরকারি বাঙলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, সাংবাদিক সবুজ ইউনুস, ড. সাকিলা জেসমিন, কাবেরী মৈত্রেয় ও আবুল বশির খান। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মাঝে ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।