× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সাংগঠনিক পুনর্গঠনে নজর হেফাজতের

দেশ বিদেশ

শাহনেওয়াজ বাবলু
২২ জুন ২০২১, মঙ্গলবার

সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে মামলা, গ্রেপ্তার আতঙ্ক এড়াতে অনেকটাই নীরব হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। তবে সংগঠনটির নেতারা দাবি করেছেন, করোনার ভয়াবহতার কারণে সশরীরে না হলেও ভার্চ্যুয়ালি তারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সারা দেশে কমিটি গঠনসহ সংগঠনের কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

হেফাজত সূত্রে জানা যায়, নতুন কমিটি গঠন করার পর সংগঠনের কর্মপন্থা নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। আপাতত নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মাদ্রাসা খোলার বিষয় নিয়েই ভাবছে হেফাজত। মাদ্রাসা খুললে বা দেশের চলমান করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এদিকে সারা দেশে হেফাজতের ইউনিটগুলো আগের কমিটি দিয়েই চলছে। সর্বশেষ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সারা দেশে তাণ্ডব চালানো হয়েছে।
এরই রেশ ধরে গত কয়েক মাসে সারা দেশে বেশ কয়েকজন নেতা পদত্যাগ করেছেন। এর মধ্যে বয়সের কারণে অনেকেই সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় রয়েছেন। এসব নিয়ে খুব শিগগিরই বৈঠকে বসবে হেফাজত। এদিকে সারা দেশে নেতাকর্মীদের নামে মামলা বন্ধ করা, কারাবন্দি আলেমদের মুক্তি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বেশ কয়েকবার বৈঠক করেন হেফাজতের নেতারা। আর এসব বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।   

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হেফাজতের দুইজন শীর্ষ নেতা মানবজমিনকে বলেন, আমরা ইতিমধ্যে সরকারকে আমাদের দাবিগুলোর বিষয়ে অবগত করেছি। সরকার এতে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে। ইতিমধ্যে সারা দেশে নোয়াখালী, নেত্রকোনা, লক্ষ্মীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকজন কারাবন্দি নেতা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এ ছাড়া এতদিন আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা এখন স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।

এদিকে সারা দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার দাবিতে গত সপ্তাহে বৈঠকে বসে কওমি মাদ্রাসার সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলুয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ। এ সময় সরকারের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার বিষয়ে বোর্ডের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটি খুব শিগগিরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাদের দাবিগুলো জানাবেন। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী বরাবর একটি লিখিত বক্তব্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পেশ করার কথা রয়েছে।

জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী মানবজমিনকে বলেন, আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের দাবি-দাওয়া সরকারের কাছে জানিয়েছি। সরকার যদি দাবি না মানে আমাদের তো কিছু করার থাকে না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনার কারণে আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম কিছুটা স্তিমিত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কেন্দ্রীয় কমিটি বসে সারা দেশের কমিটি গঠনের বিষয়ে আলোচনা করা হবে।     

গত ৭ই জুন ৩৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করেন মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী। এই কমিটি থেকে বেশ কয়েকজনের পদত্যাগের গুঞ্জন রয়েছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে জিহাদী বলেন, আমার কাছে লিখিতভাবে কেউ কোনো পদত্যাগপত্র জমা দেয়নি। এসব খবর আমি পত্র-পত্রিকা এবং ফেসবুকের মাধ্যমে জেনেছি। পদত্যাগ করলে তো অফিশিয়ালি লিখিত আবেদন করতে হবে।    
হেফাজতের সর্বশেষ ১৫১ সদস্যের কমিটি ভেঙে ৩৩ সদস্যের করা হলেও এই কমিটিতে স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক নেতাদের স্থান দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির প্রয়াত আমীর আল্লামা আহমদ শফীপন্থি নেতারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আগের কমিটির একজন যুগ্ম মহাসচিব মানবজমিনকে বলেন, আমরা হেফাজতের এই কমিটি মানি না। সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এখন তাদের কমিটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবো। তাদের কার্যক্রম দেখেই আমাদের কমিটি সংস্কার করা হবে। আমাদের কমিটি তো গঠন করা আছেই। এখন শুধু এটা সংস্কার করবো। মূলত কিছু কৌশলগত কারণে আমরা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছি।
তিনি বলেন, এর মধ্যে বাবুনগরীর কমিটির পাঁচজন পদত্যাগ করেছেন। আরও বেশ কয়েকজন পদত্যাগের সম্ভাবনা রয়েছে। আর এভাবে যদি ওই কমিটি ভেঙে যায় তাহলে তো আমাদের জন্যই সুবিধা। মূলত এসব কারণেই আমাদের কমিটির সংস্কারের কাজ বিলম্ব করেছি।

আল্লামা আহম্মদ শফীর কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দীন রুহি বলেন, আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। বিগত সময়ে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কয়েক দফা সরকারের সঙ্গেও আলোচনা করেছি। আমরা সর্বশেষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সারা দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া, আলেম ওলামাদের মুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছি। ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে একটা সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর