× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কি মর্মান্তিক!

ফেসবুক ডায়েরি

অনলাইন ডেস্ক
৯ জুলাই ২০২১, শুক্রবার
প্রতীকী ছবি

করোনা হাসপাতালে আমার অন্তরকে কাঁদানো একটা হৃদয় বিদারক কাহিনী বলি। আমার মায়ের পাশের বেডে খুলনা সদরের একটা ছেলে তার মাকে ভর্তি করিয়েছে গত পরশু। তার মায়ের শ্বাসকষ্ট তীব্র ছিল। অক্সিজেন লেভেল ৭০-এর কাছাকাছি। গতকাল তার বাবারও তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বাড়িতে। সে ছিল তার বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। তাই হসপিটালে মুমূর্ষু মাকে একা রেখেই বাধ্য হয়ে ছুটে যেতে হয়েছে বাসায় তার বাবার কাছে। সেখানে যাওয়ার পর তার মা কয়েকবার কষ্টে অক্সিজেন মুখ থেকে টেনে খুলে ফেলেছিল।
তখন আমার ছোট বোনটি তার মুখে আবার লাগিয়ে দেয়। যাহোক বাবাকে বাড়িতেই একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে আবার ছুটে আসে মায়ের কাছে। কি অসহায় মুহূর্ত!! রাত ৩টার দিকে তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ শুনে ছুটে যায় বাবার লাশের কাছে। তারপরে আজ সকালে আবার আসে মায়ের কাছে। সেখানে আমি দেখি ওই ছেলেটি তার মায়ের বেডের ওপর মাথা দিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। আমি এগিয়ে গিয়ে উনার গায়ে হাত দিয়ে ডেকে একটু সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করলাম। লাভ হলো না। হওয়ার কথাও না। এরপর যেটা হলো সেটা আরো হৃদয় বিদারক। উনি আমাকে বললেন ভাই, আমার মায়ের পাশে আপনি যদি একটু বসতেন তাহলে আমি একটু আমার বাবার জানাজাতে যেতাম। সত্যি বলছি, সহ্য করার মতো ছিল না সেই মুহূর্তটা। যাহোক, আমি উনাকে বললাম ভাই আপনি যান, আমি ও আমার ছোট বোন দুজনেই আপনার মাকে দেখে রাখবো ইনশাল্লাহ। উনি আমাকে বললেন, ভাই আপনি আপনার বোনও অসুস্থ হয়ে গিয়েছে, সেটা আমি জানি। তাই আপনিই যদি একটু আসতেন। আমি বললাম ঠিক আছে ভাই আমি আসবো ইনশাল্লাহ। উনি আমাকে বলেন, জোহরবাদ বাবার জানাজা। আমি তখন যাবো, আপনি একটার দিকে আসিয়েন। আমি রীতিমতো ১২.৩০ এর দিকে গেলাম। গিয়ে দেখলাম সেখানে একটা ১৩-১৪ বছরের ছোট্ট ছেলে বসা। আমার ছোট বোনের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম তখন বললো ওই ছেলেটিকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে রেখে গেছে লোকটা। কি সাংঘাতিক বিষয়!!! কিন্তু সব থেকে মর্মান্তিক হলো, ওই ভাইটা বাবার জানাজা শেষ করে আসার ৫-৭ মিনিট পূর্বে তার মাও না ফেরার দেশে চলে গেলেন। তারপরে যেটা ঘটলো সেটা বলার মতো আমার ভাষা নাই।

সোলাইমান হোসাইন মিন্টুর (শিক্ষক, বশেমুরবিপ্রবি ও জেলা সমন্বয়ক, গোপালগঞ্জ: সিসিএস স্বেচ্ছাসেবী) ফেসবুক থেকে নেয়া
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর