মা, ওমা, মাগো। ১৩টা বছর ধরে তোমায় ডাকি। উচ্চস্বরে, আবার নিম্নস্বরে। কোনো সাড়া নেই। জানি আর কখনো সাড়া পাবোও না। তারপরও ডেকে যাচ্ছি অবিরত। কতো মুখ দেখি তোমার মতো খুঁজে পাই না। কেমন আছো? আমি কেমন আছি? কোনো প্রশ্নোত্তরের লেনদেনও নাই। শুধু তুমি থাকো আমার হৃদ মাঝারে।
বেশ কিছুদিন হলো আব্বাও আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন পরপারে। আর তারও অনেক আগে মেজোভাই রেজাউল দাদাও। ছোট আপু আবিদা সুলতানা এখনো কথা বলতে পারে না। যে আবিদার কথা তুমি বলতে- আল্লাহ্ চাইলে ও আবারো কথা বলতে পারবে। কারণ, ও তো ১২ বছর বয়স পর্যন্ত কথা বলতো। একদিন হঠাৎ জ্বরের পর থেকেই কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। তুমি তো সবসময়ই আবিদা আর মরহুমা সেজো আপার জন্য মোনাজাতে কাঁদতে। মা, বড় হয়ে তোমাকে নিয়ে ঝালকাঠির কাঁচাবালিয়া গ্রামে নানা বড়িতে বেড়াতে যাওয়ার আমার ইচ্ছা ছিল অনেক। কারণ তুমিই বলতে, তোকে নিয়ে অন্য সবার মতো তোর নানা বাড়িতে তেমন বেড়ানো হয়নি। আর আমার এখন গ্রামীণ পরিবেশ আর প্রকৃতি দেখতেও বেশ ভালো লাগে। তাই শুধু তোমার সঙ্গে নানা বাড়ি যেতে এখনো কেন যেন ইচ্ছা করে। ছারছীনা মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় তোমার অসুস্থতার কথা শুনি গভীর রাতে। পরদিন বরগুনা এসে দেখি তুমি আর বেঁচে নেই। সেদিন থেকেই খুব অসহায় হয়ে পড়ি। দোয়া করি সবসময় মোনাজাতে, কবরের পাশে দাঁড়িয়ে, সৃষ্টিকর্তা তোমাকে পরম যত্নে রাখুক।
ইতি
তোমার ছোট ছেলে
চরকলোনী সড়ক, বরগুনা সদর।