ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার বৈলর ইউনিয়নের দেওয়ানীবাড়ি গ্রামের এক অসহায়, বিধবা মহিলার ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে জমি দখল করে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠেছে স্বামীর ভাতিজাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ত্রিশাল থানায় ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সুফিয়া আক্তার। গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের স্ত্রী ৭৬ বছর বয়সী সুফিয়া আক্তার তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালে তার স্বামী মারা যান। তাদের দু’জন কন্যা রয়েছে। স্বামীর জীবদ্দশায় অর্থাৎ বেঁচে থাকতেই মেয়েদের বিয়ে দেন এবং মেয়েদের নামে হেবা দলিলের মাধ্যমে জমি জমা লিখে দিয়ে যান। মেয়েরা উচ্চ শিক্ষিত। ফজলুর রহমানের মৃত্যু পর তার অর্থাৎ স্বামীর বাড়িতেই সুফিয়া আক্তারের বসবাস। স্বামীর ভিটায় পুকুরে মাছ চাষ আর জমি-জমা চাষাবাদ করে তার সংসার চলে।
সম্প্রতি তার সম্পত্তির ওপর নজর পড়ে স্বামীর ভাতিজাদের।
ফজলুর রহমানের ভাতিজারা হলেন, কামরুল ইসলাম উজ্জ্বল, রফিকুল ইসলাম পলাশ, তারিকুল ইসলাম বাবু, সারোয়ার ইসলাম সাগর, লুৎফর রহমান সেলিম, আব্দুর রহমান গং। তারা মৃত ইসমাইল হোসেন সরকারের ছেলে। সুফিয়া আক্তার ত্রিশাল থানায় লিখিত অভিযোগে বলেন, স্বামীর ভাতিজারা তাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, হুমকি-ধমকি দিয়ে ঘর থেকে জোপূর্বক বের করে দিয়েছে। বাড়িঘরে হামলা চালায় এবং তার জমি দখলের চেষ্টা করছেন। সুফিয়া আক্তার বলেন, আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকা সত্ত্বেও রাতারাতি সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখলের চেষ্টা করেন। বিবাদী গং আদালতে সিআর মামলা করেই তার রেফারেন্স লিখে সাইনবোর্ড টানিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। থানা পুলিশ আদালতের নির্দেশে সিআর মোকদ্দমায় আইনশৃংখলা রক্ষায় উভয়পক্ষকে নোটিশ করে। ওই নোটিশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সুফিয়ার স্বামীর ভাতিজারা আদালতের নাম উল্লেখ না করে জালিয়াতির মাধ্যমে তার বসতঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। এক পর্যায়ে তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করে। দুদিন ঘরে ঢুকতে না পেরে দরজার বাইরে বসে অঝোরে কান্না আর বিলাপ করে যাচ্ছেন সুফিয়া আক্তার। প্রতিবেশীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি কোথায় যাবো। কার কাছে যাবো। বাবারা মায়েরা তোমরা আমার ঘরের দরজা খোলার ব্যবস্থা করে দাও। তার গগনবিদারী বিলাপ শুনে গ্রামের মানুষজন দুইদিন ধরে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছেন। এ ব্যাপার কামরুল ইসলাম উজ্জ্বল জানান, জমি দখলে আদালতের কোনো আদেশ নেই, কিন্তু উকিল সাহেব বলেছেন। চাচার সম্পত্তিতে আমাদেরও ভাগ আছে। গতকাল সন্ধ্যায় ঘরের দরজার তালা খুলে দেবো। সাইনবোর্ডও খুলে দেবো। এটা আমাদের ভুল হয়েছে। ত্রিশাল থানার ওসি মাইন উদ্দিন জানান, সুফিয়া খাতুনের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ পাঠিয়েছি।