× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কিশোরগঞ্জে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুর দুষ্কৃতিকারী গ্রেপ্তার

দেশ বিদেশ

স্টাফ রিপোর্টার, কিশোরগঞ্জ থেকে
৩১ জুলাই ২০২১, শনিবার

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের আখড়াবাজার সেতু এলাকায় সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বর সংলগ্ন স্থানে আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নবনির্মিত ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। দুষ্কৃতিকারীরা ম্যুরালটিতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজের উদ্বোধনী নামফলক এবং সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরালে ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় গতকাল কিশোরগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা (নং-২৮) দায়ের করেছেন। গত বুধবার রাত ১০টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার মধ্যে ভাঙচুরের এ ঘটনা ঘটে বলে মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেছেন। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মামলা দায়েরের পর গতকাল বিকালে অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পারভেজ (৪০) নামে এক দুষ্কৃতিকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিকাল ৪টার দিকে ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পারভেজ জেলার ইটনা উপজেলার রায়টুটী পশ্চিমপাড়ার মৃত শাহজাহান চৌধুরীর ছেলে। সে শহরের চরশোলাকিয়া বনানী মোড় এলাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকে।
পুলিশ জানায়, ম্যুরাল ভাঙচুরের বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) এর নির্দেশনায় মাঠে নামে পুলিশ। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম এর নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক টিম এ নিয়ে কাজ শুরু করে। একপর্যায়ে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. মোখলেসুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীন, এস আই আলমাস আল রাজী ও সঙ্গীয় ফোর্স গতকাল বিকাল ৪টার দিকে আখড়াবাজার সেতু এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুষ্কৃতিকারী পারভেজকে গ্রেপ্তার করে। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মো. আবুবকর সিদ্দিক পিপিএম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে সে বড় পাথর দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে ম্যুরালটিতে ভাঙচুর চালায়। ম্যুরালের স্থানটিতে বসে সে আগে মোটরসাইকেলের স্টিকার বিক্রি করতো। কিন্তু উচ্ছেদের পর জায়গাটিতে ম্যুরাল স্থাপন করায় তার আয় রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। এ ক্ষোভ থেকে সে এই অপকর্মটি করে। এ ছাড়া এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নয়ন নামে এক নির্মাণ শ্রমিক ঘটনার সময় পারভেজকে বাধা দিলে তাকে মারতে উদ্যত হয়েছিল পারভেজ। নয়নও পুলিশের কাছে এ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান ওসি আবুবকর সিদ্দিক।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার), জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এম এ আফজল, পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল কাদির মিয়া।
এ সময় পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম (বার) বলেন, ম্যুরালটিতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের নামফলক এবং ম্যুরালে কে বা কারা কোনো এক সময় আঘাত করার চেষ্টা করেছে এবং কিছু অংশ ভাঙচুরও করেছে। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাহেবের ম্যুরালের ওপরও আঘাত করা হয়েছে। এটা ন্যক্কারজনক কাজ হয়েছে। এটার জন্য আইনি যে প্রক্রিয়া আমরা গ্রহণ করবো।
পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলামের সুযোগ্য পুত্র বাংলার রাজনীতির অন্যতম নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম স্যারের ম্যুরাল যেটি কিশোরগঞ্জ পৌরসভা নির্মাণ করেছে, সেখানে কিছু দুষ্কৃতিকারী নামফলক এবং ম্যুরালের দুয়েকটি অংশের ক্ষতিসাধন করেছে। খবরটি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ সুপার মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেছি এবং এ ব্যাপারে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে বলেছি এবং মেয়র সাহেবকেও বলেছি। এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় যে বা যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাবো।
এদিকে গতকাল বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের চাচাতো ভাই জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম প্রমুখ। এ সময় তারা সেখানে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুরের প্রতিবাদে নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চ আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধনে এডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, অজয় কর খোকন, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা মঞ্চের আহ্বায়ক শেখ সেলিম কবিরসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বক্তব্য রাখেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর