× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ইরাবের কলম ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন /জিপিএ দিয়ে শিক্ষার্থীদের মেধার মূল্যায়ন করা যাবে না

শিক্ষাঙ্গন

স্টাফ রিপোর্টার
(২ বছর আগে) আগস্ট ৭, ২০২১, শনিবার, ৭:৫২ অপরাহ্ন

শিক্ষার্থীদের জিপিএ দ্বারা তাদের প্রকৃত মেধান মূল্যায়ন করা যাবে না। এ কারণে জিপিএ ৫ পাওয়ার এই অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, সন্তানদের পরীক্ষায় পাসে জিপিএ বেশি পাওয়ার চাপ দেয়া যাবে না। শিক্ষার্থীদের যার যে ধরনের প্রতিভা রয়েছে সেটি বিকশিত করতে এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করে দেয়া হবে। জিপিএ বেশি পাওয়ার প্রবণতা থেকে সবাইকে বের করে আনা হবে। সে জন্য নতুন ধরনের পাঠ্যপুস্তক তৈরি করা হচ্ছে।

শনিবার শিক্ষাবিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইরাব) এর ‘কলম’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন। ইরাবের সভাপতি ও দৈনিক সমকালের বিশেষ প্রতিনিধি সাব্বির নেওয়াজের সভাপতিত্বে ও ইরাবের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম সুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম, গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি, বিশিষ্ট সাংবাবদিক শফিফুজ্জামান পিন্টু, স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির নেতা শাজাহান সাজু, ইরাবের যুগ্ম সম্পাদক ও ম্যাগাজিনের সদস্য সচিব মীর মোহাম্মদ জসিম প্রমূখ।


অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা কি শিখল সেটি বড় বিষয় হচ্ছে না।
কে কত জিপিএ পেয়েছে সেটি নিয়ে সবার উৎসাহ তৈরি হয়েছে। এই অসম প্রতিযোগিতা থেকে আমাদের শিক্ষার্থীদের বের করে আনা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ তৈরি করা হবে। তার মাধ্যমে যার মধ্যে যে ধরনের প্রতিভা রয়েছে সেটি বিকশিত করা হবে। এ জন্য উপযুক্ত কারিকুলাম তৈরি করা হচ্ছে।

দীপু মনি বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা শিখছে কিন্তু সে নিজে বলতে পারছে না। তার কারণ আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করা হচ্ছে। আগে ক্লাস শিক্ষকরা নিয়োগের তিন থেকে চার বছর পর বুনিয়াদি প্রশিক্ষণের সুযোগ পেত। বর্তমানে সেটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। কোনো শিক্ষক প্রশিক্ষণবিহীন অবস্থায় পাঠদানের জন্য ক্লাসে যাবেন না, সেটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।


সাবেক তত্ত্বাবধারক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষা সেক্টরে এমন কোন বাণিজ্য নেই যেটার কবলে আমরা পড়িনি। করোনায় শিক্ষা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ক্ষতি পোষাতে প্রণোদনা প্রয়োজন আছে। কারণ শিক্ষার সক্ষমতা বাড়াতে বিনিয়োগের বিকল্প নেই। রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমাদের ইন্টারনেটের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ সম্প্রতি ইন্টারনেটে সক্ষমতা নিয়ে যে রিপোর্ট এসেছে সেখানে বাংলাদেশ ১৩৭ টি দেশের মধ্যে ১৩৫তম। তিনি বলেন, ভ্যাক্সিনেশন কার্যক্রমে সকল শিক্ষকদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কারণ এখানে নগরায়নের শিক্ষকরা সুবিধা বেশি পাচ্ছেন। শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন খুবই জরুরি। আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক আইন দেখি। কিন্তু সেটির মনিটরিং এবং বাস্তবায়ন জরুরি। আমাদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী যে সমস্ত অর্জনগুলো রয়েছে সেগুলো পুনরুদ্ধারেও আমাদের সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে।

শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষায় কাঠামোগত পরিবর্তন নিয়ে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছিলাম। করোনা আমাদেরকে বাধাগ্রস্থ করেছে। এরপরও অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দুই-একটি ছাড়া বাকিগুলো কার্যক্রম আমরা করতে পেরেছি। আমাদের মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক ঘাটতি ছিল। আমরা ইতিমধ্যে সেটি পূরণ করার চেষ্টা করেছি। এসব স্কুলে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর বেসরকারি স্কুল কলেজ পর্যায়ে আমরা ৩৮ হাজার শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছে। পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষে তারা নিয়োগ পাবেন।

কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম বলেন, পিএসসির পক্ষ থেকে এক হাজার ২০০ শিক্ষকের নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তারা নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়া সাড়ে চার হাজার শিক্ষকের নিয়োগের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। পাঠ্যক্রম এবং শিক্ষাক্রম পরিবর্তনে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে এবং মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে আমাদের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।

দৈনিক সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি বলেন, আমরা চাই একটি সমন্বিত অসম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা। স্বাধীনতার এত বছর পরও বিভিন্ন ধারার শিক্ষাব্যবস্থা চলমান রয়েছে। আমাদের এখনই সময় সামাজিক পরিবর্তন সাধনের এ সমস্ত কার্যক্রম হাতে নেয়ার। করোনাকালীন সংকট নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রমের একটি সুস্পষ্ট রোড ম্যাপ দরকার।

স্বাধীনতা শিক্ষক সমিতির শাজাহান সাজু বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীরা ঝরে পড়ছে। এ ঝড়ে পড়া রোধে সবার অংশগহণ জরুরি।

শরিফুজ্জামান পিন্টু বলেন, করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে শিক্ষায় যে ঘাটতি তৈরি হয়েছে, ঝড়ে পড়ার হারও বাড়ছে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শিক্ষায় বড় আকারের প্রণোদনা প্রয়োাজন রয়েছে। এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে কাজ করতে হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর