ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল বিজেপিকে পরাজিত করে ব্যাপক সাফল্য পাওয়ার পর নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী, তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে কংগেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তার পুত্র রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোট তৈরির লক্ষ্যেই ছিল ওই বৈঠক। কিন্তু তারপর হিসাব মেলাতে পারছিলেন না অনেকেই। প্রশ্ন উঠে, রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিরোধীদের বিক্ষোভে কেন সামিল হচ্ছে না তৃণমূল কংগ্রেস? রাহুল গান্ধী সক্রিয় হচ্ছেন বলেই কি দূরত্ব বাড়াচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস?
কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এসব প্রশ্নের উত্তরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে- কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে কোনো জোটের কথা ভাবা হচ্ছে না। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র সম্পাদকীয়তে এই বার্তা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ওই মুখপত্রে বার্তা দেয়া হয়েছে, কোনো তৃতীয় বিকল্প নয়, বিরোধী জোটই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত। তবে সেই জোট হবে কেন্দ্রীয় সরকারবিরোধী কার্যকলাপের নির্দিষ্ট নীতি মেনে। ‘আজ হঠাৎ মনে হল, একটা ফোনে বলে দিলাম আমরা মিছিল করছি, চলে আসুন' এটা তৃণমূল কংগ্রেসের ক্ষেত্রে চলবে না।
তৃণমূল কংগ্রেস যে কোনো জোট ছাড়াই বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে নিজেদের ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে সেটাও মনে করিয়ে দেয়া হয়েছে।
দলীয় মুখপত্রে কংগ্রেসকে বার্তা দেয়া হয়েছে, কংগ্রেস যদি বিগত লোকসভা নির্বাচনে উপযুক্ত বিকল্প হিসেবে লড়াই করতে পারতো তাহলে তো বিজেপি এতো আসন পেতো না। সুতরাং জোটকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।
এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘অতীতে যেভাবে জোট হয়েছে, তা থেকে সময় বদলেছে। এখন বাস্তবসম্মত বিরোধী জোট তৈরি করতে হবে। তৃণমূল কংগ্রেস জানে কিভাবে শীর্ষ নেতৃত্বকে পরাজিত করতে হয়। তৃণমূলনেত্রী সৌজন্যতা দেখিয়েছেন বলে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেছেন। সংসদের ভিতরে–বাইরে সাংসদরা একসঙ্গে কাজ করেছেন। এখানে কোনো জল্পনার প্রয়োজন নেই। কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়েই জোটবদ্ধ লড়াই হবে।
উল্লেখ্য, এই জল্পনা তৈরি হয়েছে কারণ সম্প্রতি সংসদ চত্বরের বাইরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে
রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে বিক্ষোভে কংগ্রেস থেকে শুরু করে শিব সেনা, আম আদমি পার্টি, ডিএমকে সহ সব বিরোধী দল অংশগ্রহণ করলেও দেখা যায়নি তৃণমূল কংগ্রেসের কোনো সাংসদকে। এমনকি যন্তর মন্তরে কৃষক আইন প্রত্যাহারের দাবিতে
বিরোধীরা বিক্ষোভ দেখালে সেখানেও তৃণমূল কংগ্রেসের অনুপস্থিতি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তবে 'জাগো বাংলা'র মাধ্যমে এসব প্রশ্নের জবাব তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব দিয়ে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক সচেতন মহল।