দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মথুরাপুর বাজারে আলু, পটল, মুলো, বেগুন বিক্রি করে ছেলেকে পড়িয়েছেন ব্রজেন্দ্রনাথ নাটুয়া। সেই ছেলে সুভাশিষ ১১ আর ১২ সেপ্টেম্বর কোয়েম্বাটুরে অনুষ্ঠিত হতে চলা ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাওয়ার্ড অফ সায়েন্স অ্যান্ড মেডিসিন পেতে চলেছে। করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড আবিষ্কারের অন্যতম রূপকার হিসেবে এই খেতাব পাচ্ছে মথুরাপুর কৃষ্ণচন্দ্র হাইস্কুল এর এই মেধাবী ছাত্র। একসময় যে খালি পেটে ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখতো। যার বাবা দুই ছেলে দেবাশীষ আর সুভাশিষকে মানুষ করতে প্রাণান্ত চেষ্টা করেছেন। মথুরাপুর হাইস্কুলের হেডমাস্টার চন্দন মাইতি সেদিন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে ২০১২ সালের উচ্চমাধ্যমিকের পাসআউট শুভাশিসের ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড সায়েন্স রিসার্চে পড়া সম্ভব হতো না এবং ৯ বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞানী হিসেবে করোনার মহাশত্রু কোভিশিল্ড গবেষণার সঙ্গে যুক্ত হওয়া সম্ভব ছিল না। ভোপালের আই আই এস ই আর সংস্থা কোভিশিল্ড গবেষণার জন্য দেশের সেরা বিজ্ঞানীদের যে প্যানেল তৈরি করেছিল তাতে জায়গা পায় শুভাশিস আর এন এ বিশেষজ্ঞ হিসেবে। সুভাশিসের গবেষণার বিষয় ছিল, করোনা ভাইরাস এর বিভিন্ন স্ট্রেইন এর জেনেটিক গঠন ও বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে এর প্রভাব।
শুভাশিসদের সফল গবেষণার পর কোভিশিল্ড আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় এবং ভারতে এখন এই ভ্যাকসিন মারণ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে বড় আয়ুধ। সুভাশিষ এখন আমেরিকায় ক্যান্সার নিয়ে গবেষণা করে। একসময় মথুরাপুর বাজারে বাবার সঙ্গে বসে সবজিও বিক্রি করেছে সুভাশিষ নাটুয়া। এখন সে বিশ্ববিখ্যাত আবিষ্কার কোভিশিল্ড এর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। মানুষের সেবায় নিয়োজিত হতে পেরে ধন্য সুভাশিষ। সুযোগ পেলেই মথুরাপুরে আসে। মথুরাপুর বাজারের সবজি বিক্রেতার আসন থেকে সে আজ বিশ্বের আসনে। তবু ভোলেনি তার প্রিয় মথুরাপুরকে।