× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভাদ্রের গরম, পরাশক্তি ও পরাজিত শক্তি

মত-মতান্তর

শামীমুল হক
২৬ আগস্ট ২০২১, বৃহস্পতিবার

এখন ভাদ্র মাস। এ মাসের বৈশিষ্ট্য অনেক। ভাদ্র মাসের গরমে নাকি তাল পাকে। পাকা তালের রসের পিঠা খেলে শরীর নাকি তাল ফিরে পায়। না হয় শরীর বেতাল হয়ে থাকে। গ্রামে-গঞ্জে তাই এখনও ভাদ্র মাসে তালের বড়া খায় মানুষ। কেউ কেউ তালের পিঠা বানায়। কেউবা তালের রস দিয়ে পায়েসও বানায়।
কিন্তু তালের রস সংগ্রহ করা কিন্তু অনেক কষ্টের। কারণ তালের রস আসলে তিতা। এটাকে ফিল্টার করে তিতা অংশ ফেলে দিতে হয়। ছোট সময়ে দেখেছি মা-চাচীরা তালের ওপরের অংশ ফেলে দিয়ে সেটি একটি পাত্রে নিয়ে ভালো করে কচলাতেন। একসময় তালের মূল অংশ পাত্রে জমা হতো। আলাদা হয়ে যেতো তালের আঁটি। তারপর তাল থেকে তুলে নেয়া অংশ একটি সাদা কাপড়ে রেখে তা বেঁধে ফেলতেন। পরে ঘরের আড়ার সঙ্গে তা ঝুলিয়ে দিতেন। নিচে রাখতেন একটি পাত্র। সারারাত ঝুলিয়ে রাখা কাপড় চুয়ে ফোঁটা ফোঁটা সাদা পানি পড়তো নিচে রাখা পাত্রে। সকালে দেখা যেত পাত্রে অনেক পানি। আর সেই পানিই হলো তালের তিতা অংশ। কাপড়ে যা থাকতো তা মিষ্টি অংশ। তারপর ওই মিষ্টি অংশ নিয়ে কেউ বানাতেন পিঠা। কেউ বড়া। কেউবা নারিকেল মিশিয়ে বানাতেন পায়েস। তবে এখন বউ-ঝিয়েরা তালের বড়া বানাবে দূরে থাক- তালের তিতা অংশ কীভাবে ছাড়াবে তাই জানে না। আবার এই ভাদ্র মাসেই শীতের জন্ম। ভাদ্র মাসের ১৪ তারিখে শীত পৃথিবীর আলো দেখে। অর্থাৎ জন্ম নেয়। তারপর আস্তে আস্তে তা পরিপূর্ণ রূপ নিতে থাকে। কার্তিক মাসে এসে শীত পরিপূর্ণতা রূপ নেয়। আর অগ্রহায়ণ মাসে জেঁকে বসে। গ্রামে এখনও অগ্রহায়ণে নতুন ধান ওঠে। পিঠা-পুলির আয়োজন হয় এই অগ্রহায়ণ মাসে। বউ- ঝিয়েরা ব্যস্ত থাকেন পিঠা-পুলি বানাতে। নতুন জামাইকে দাওয়াত দেয়ার রেওয়াজও চালু ছিল একসময়। কিন্তু বর্তমান আধুনিক যুগে এসে ধীরে ধীরে গ্রামীণ এসব আচার হারিয়ে যাচ্ছে। মানুষ দিন দিন হয়ে পড়ছে যন্ত্রনির্ভর। শহরের উচ্চবিত্ত পরিবারে পিঠা-পুলি এখন আর ঘরে হয় না। তারা বিভিন্ন সুপার শপ থেকে পিঠা কিনে নিয়ে আসেন। রাজধানী ঢাকায় এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। যারা পিঠা-পুলি সহ গ্রামীণ নানান ঐতিহ্যের ব্যবসা করে। এগুলো চলেও বেশ। আসলে ভাদ্র মাসের গরম নিয়ে কথা বলতে গিয়ে এত কিছুর অবতারণা। যে গরম কাঁচা তালকে পাকায় সে গরমের আঁচ কত তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ভাদ্র মাসেই কুকুর বাচ্চা ধারণ করে। এরও নাকি মাজেজা আছে। কারণ ভাদ্রের গরম। এ গরমে কুকুর দিশাহারা হয়ে পড়ে। উত্তেজিত হয়ে ওঠে। আবার ভাদ্র মাসে কুকুরে কামড়ালে আর রক্ষা নেই। নাভির গোড়ায় ইনজেকশন নিতেই হবে। অবশ্য এখন বিজ্ঞান সহজ করে দিয়েছে। নাভির গোড়ায় এখন ইনজেকশন নিতে হয় না। স্বাভাবিক ইনজেকশনের মতো হাতে নিলেই হয়। এছাড়া আগের মতো ১০টিও নিতে হয় না। শীতের জন্মলগ্নের এ গরম গোটা বিশ্বকেই যেন ওলট-পালট করে দেয়। বর্তমানে আফগানিস্তান নিয়ে গোটা বিশ্ব অস্থির। পরাশক্তি আর পরাজিত শক্তি কেউই নিশ্চিন্ত নয়। পর্দার আড়ালে চলছে নানা খেলা। এ খেলায় সবাই জিততে চায়। কিন্তু সবাই কি জিততে পারে? কাউকে না কাউকে তো হারতেই হবে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর