× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

কোন পথে হাঁটছে সিলেট বিএনপি

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
১ সেপ্টেম্বর ২০২১, বুধবার

কোন পথে হাঁটছে সিলেট বিএনপি- এ প্রশ্ন এখন সবার। জামানের পদত্যাগের পর একাংশে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। চলছে পদত্যাগের হিড়িক। অপরদিকে স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন ‘নিয়ন্ত্রক’ ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও আব্দুল আহাদ খান জামালের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের পদবিধারীরা। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিএনপি’র আরও কয়েকটি উপ-বলয়ের নেতাকর্মীরা। তারা কোনো দিকেই টলছেন না। ফলে অভ্যন্তরীণ এ বিরোধ নিয়ে টালমাটাল অবস্থা সিলেট বিএনপিতে। এই অবস্থায় গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সিলেটের আরেক শীর্ষ নেতা আব্দুর রাজ্জাক।
তার সঙ্গে জামান বলয়ের শতাধিক নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন। মূলত সিলেট বিএনপি’র কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ সিলেটে। এই বিরোধে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও  কেন্দ্রীয় সদস্য, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিএনপি’র সিনিয়র নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, তাদের দু’জনের বিরোধের কারণে সিলেট বিএনপিতে এই অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সিলেট-১ আসনে গত নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থী হয়েছিলেন খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির ও সিলেট সিটি করপোরেশনে প্রার্থী ছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী। নির্বাচনে দু’জনের পক্ষেই সিলেট বিএনপি ঐক্যবদ্ধ ভাবে মাঠে কাজ করেছে। এদিকে গতকাল সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে সিলেট বিএনপি’র ভেতরকার এই দ্বন্দ্বের কারণ উল্লেখ করেছেন কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জানিয়েছেন, সিলেট জেলা বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের বিভিন্ন কমিটি গঠনে অনিয়ম ও অসাংবিধানিক তথা রাজনৈতিক মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দেয়ার কারণে বর্তমান পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমেই ছাত্রদলের গঠন প্রক্রিয়ায় মেধাবীদের বাদ দিয়ে যারা অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কর্মী হত্যায় সম্পৃক্ত ছিল তাদের নেতৃত্বে আনা হয়েছে। সিলেটে যারা তিল তিল করে যুবদলকে সংগঠিত করেছিল তাদেরকে যুবদলের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়নি। পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের বাদ দেয়ার কারণে চারজন কেন্দ্রীয় নেতা মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাপের কারণে পদত্যাগ করেছিলেন। পরবর্তীতে মহাসচিবের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে তারা পদত্যাগ থেকে সরে দাঁড়ান। আব্দুর রাজ্জাক দাবি করেন- যারা রক্ত ও ঘামের বিনিময়ে স্বেচ্ছাসেবক দলকে বিএনপি’র ভ্যানগার্ড হিসেবে তৈরি করা হয়েছে তাদেরকেও কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন- ‘নব্য সুবিধাভোগী চক্র’র হাতে সিলেট বিএনপি জিম্মি হয়ে যাচ্ছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বলেছেন- ‘চক্ষু বন্ধ করলেও প্রলয় রোধ করা যায় না।’ সিলেটে সংবাদ সম্মেলনের আহ্বান করা হয়েছিল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে। এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন সিলেট বিএনপি’র সাবেক কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ মখন মিয়া চেয়ারম্যান। কিন্তু সংবাদ সম্মেলনে তার উপস্থিত না হওয়াকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে মখন মিয়া অসুস্থ থাকার কারণে উপস্থিত হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপি’র সাবেক উপদেষ্টা সেলিম আহমদ, জেলা বিএনপি’র সাবেক উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপি’র বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আহমেদুল হক চৌধুরী মিলু, মহানগর বিএনপি’র সহ-সভাপতি সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, মহানগর বিএনপি’র তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক ফয়েজ আহমদ দৌলত, সহ তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক হাজী শওকত আলী, জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন লস্কর, জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইশতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপি’র যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মিনহাজ উদ্দিন মুসা, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সদস্য ও সাবেক জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিক, জেলা বিএনপি’র সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা জাসাসের আহ্বায়ক জসিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আহমদ রানু, জেলা তাঁতীদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল হক প্রমুখ। এদিকে সিলেটে নবগঠিত স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়ে রোববার সন্ধ্যায় নগরীর চৌকিদেখি এলাকায় বৈঠক করেছেন দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও সিটি কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। বৈঠকে  জেলা আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল সহ পদবিধারী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আগামীর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল। তিনি জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবক দলকে সিলেটে শক্তিশালী করতে তারা কাজ করবেন। একই সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রামে তারা ভূমিকা রাখবেন বলে জানান। তবে- স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নিয়ে সিলেট বিএনপি’র রাজনীতিতে কোনো প্রভাব পড়ছে না বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম। তিনি জানিয়েছেন, ‘সিলেট বিএনপি তার নিজস্ব কক্ষপথেই রয়েছে। বিএনপি বড় দল। কেউ সেখান থেকে চলে গেলে দলের কোনো ক্ষতি হবে না। বরং নতুনরা দায়িত্ব নিয়ে কাজ করবে।’ তবে- সিলেট বিএনপি’র সাম্প্রতিক এই অবস্থা নিয়ে চরম হতাশ সিলেটের শীর্ষ নেতারা। তারা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলে চেইন অব কমান্ড স্থানীয় ভাবে না থাকলে সমস্যা তৈরি হয়। সেই সমস্যা এখন দেখা দিয়েছে। যারা ভোটকেন্দ্রিক রাজনীতি করছেন তাদেরকে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। দলের দ্বন্দ্ব কিংবা বিরোধ আগামী সিটি কিংবা জাতীয় নির্বাচনে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্য সিলেট বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে  কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি স্থানীয়দেরও এগিয়ে আসতে হবে। কারণ পদত্যাগ বা ক্ষোভ কখনোই দলকে শক্তিশালী করতে পারে না। বরং শক্তিহীন করে তোলে। সাম্প্রতিক এই বিরোধের কারণে সিলেটে প্রস্তুত থাকার পরও ঘোষণা করা হচ্ছে না মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটিও।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর