× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পুলিশের হস্তক্ষেপে বন্ধ হলো হাদারপাড়ে বালু লুট

এক্সক্লুসিভ

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, শনিবার

উজানের ঢলে জাফলংয়ের প্রায় সব নদীতেই নামছে বালু। আর এতে চোখ পড়েছে চিহ্নিত বালুখেকো সিন্ডিকেটের। মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে তারা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে লুটপাট করছে কোটি কোটি টাকার বালু। পরিবেশ অধিদপ্তরে কয়েকটি অভিযানে জাফলংয়ের পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা- ইসিএ জোনে বালু লুটপাটে বাধার মুখে পড়েছে বালুখেকো সিন্ডিকেটরা। জরিমানার ভয়ে আগের মতো আর নৌকা ঢুকছে না। এ কারণে বালুখেকো সিন্ডিকেট সুভাস, মুজিব ও রাসেলের নেতৃত্বে হানা দেয়া হয়েছিলো হাদারপাড় এলাকায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ করে তারা শতাধিক নৌকা দিয়ে বালু লুটপাট শুরু করলে যান্ত্রিক দানব বোমা মেশিনের শব্দে ঘুম ভাঙে এলাকার মানুষের। এ সময় গভীর রাতে এলাকার মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠলে পরে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ গিয়ে ওই বালু সিন্ডিকেটকে তাড়িয়ে দিয়েছে।
এ নিয়ে এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন- গোয়াইনঘাটে কেবলমাত্র গোয়াইন-১১৭ নামের একটি বালু মহালের বৈধ লিজ রয়েছে। এই বালু মহালের অবস্থান নন্দিরগাঁও ইউনিয়নে। এর বাইরে জৈন্তাপুর উপজেলায় সারি-১ ও সারি-২ নামে দুটি বালু মহাল লিজে আছে। বালুখেকো চক্রের সদস্যরা পার্শ্ববর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার বালু মহালের কাগজ ব্যবহার করে গোটা গোয়াইনঘাটে লুটপাট চালাচ্ছে। কয়েকদিন আগে বালুবাহী একটি কার্গোর ধাক্কায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গোয়াইনঘাট ব্রিজে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ। এবার বর্ষার মৌসুম শুরু হতেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা সুভাস, মুজিব ও রাসেলের নেতৃত্বে জাফলংয়ে ইসিএ জোন এলাকায় বালু লুট করা শুরু করে। ইতিমধ্যে তারা সংরক্ষিত এলাকা থেকে পরিবেশ ধ্বংস করে কয়েক কোটি টাকার বালু লুট করেছে। তাদের এই লুটপাটের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে কান্দুবস্তি, নয়াবস্তি, জাফলং চা বাগান, জাফলং ব্রিজসহ বিস্তীর্ণ এলাকা। এই অবস্থায় পরিবেশ অধিদপ্তর কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে জাফলং এলাকায় বালুবাহী নৌকা আটক করে জরিমানা করেছে। পুড়িয়ে দিয়েছে যন্ত্রদানব বোমা মেশিনও। এই অবস্থায় এখন আর জাফলং এলাকায় আর দেশের বিভিন্ন এলাকার আসা নৌকা কিংবা কার্গো নিয়ে উঠাতে চান না বালু ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় হাদারপাড় এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন- জাফলংয়ে প্রশাসনের কড়াকড়ির কারণে বালুখেকোদের চোখ পড়েছে হাদারপাড় এলাকায়। জাফলংয়ের বালুখেকো সিন্ডিকেটরা হাদারপাড়া এলাকায় গত বৃহস্পতিবার রাতে শতাধিক নৌকা নিয়ে বোমা মেশিন দিয়ে বালু ও পাথরে লুট চালায়। এ সময় মেশিনের শব্দে ঘুম ভাঙে এলাকাবাসীর। তারা জানান- সুভাস, মুজিব ও রাসেলের নেতৃত্বে তাদের এক আত্মীয় সাইচ্চা মিয়ার নেতৃত্বে ওই এলাকায় বালু লুটপাট চলছিলো। এমন সময় এলাকার মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। তারা লাঠিসোটা নিয়ে বাধা দিতে উদ্যত হলে খবর পেয়ে ভোররাতে সেখানে যায় গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ওই এলাকায় অবস্থান করা বালুখেকোদের তাড়িয়ে দিয়েছে। গোয়াইনঘাট থানার ওসি পরিমল দেব জানিয়েছেন- খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে বালু উত্তোলনকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। অবৈধভাবে যারাই বালু উত্তোলন করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। স্থানীয় আড়কান্দি এলাকার বাসিন্দা রূপক দেব জানিয়েছেন- আড়কান্দি নদীতে এবার মৌসুমের শুরুতেই সুভাস ও মুজিব নৌকা দিয়ে বালু লুটপাটের চেষ্টা চালায়। এতে এলাকার মানুষ প্রতিবাদী হয়ে উঠলে তারা সরে যায়। তবে- স্থানীয় এক বাসিন্দাদের দিয়ে ওই বালু সিন্ডিকেট নিরীহ এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করিয়েছিলো। পরে এলাকার মানুষ এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায়। পুলিশি তদন্তে বালুখেকো সিন্ডিকেটের অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। তিনি জানান- সুভাস, মুজিব ও রাসেল গোটা গোয়াইনঘাটে বালু লুটপাট চালাচ্ছে। যারা তাদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদী হচ্ছে তাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর