১৪ মার্চ যখন কাবুল বিমানবন্দর থেকে কলকাতার বিমানে উঠেছিলেন আসাফ খান, তিনি কল্পনা করতে পারেননি দেশটায় পালাবদলের পালা ঘটবে কয়েকমাসের মধ্যে। রুটি রুজির টানে কলকাতায় থাকেন আসাফ। স্ত্রী ও তিন সন্তান থাকে আফগানিস্তান এর গজনিতে। মার্চে কন্যাসন্তানের মুখ দেখতে গজনিতে গিয়েছিলেন আসাফ। কলকাতায় ফিরে এসে স্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ১২ অগাস্ট তালেবানরা গজনিতে ঢোকার পর কলকাতা-গজনি টেলি যোগাযোগ বিপর্যস্ত হয়ে যায়। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে প্রায় উন্মাদ হয়ে যান তিন দশকের কলকাতার বাসিন্দা আসাফ। এই কলকাতাই তো তাকে তার প্রেমিকার সন্ধান দিয়েছিল।
মায়ের চিকিৎসা করাতে কলকাতার হাসপাতালে এসেছিল তার স্ত্রী। আসাফ তখন হাসপাতাল আর রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে সমন্বয়কের কাজ করে। প্রথম দর্শনেই গজনির মেয়ের প্রেমে পড়ে কলকাতার আফগান যুবক আসাফ। তারপর ২০১৪ সালে বিয়ে। এই সাত বছরে ছ বার গজনিতে গেছে আসাফ। কখনও মনে হয়নি এই গজনি বদলে যাবে। ১২ আগস্ট গজনিতে ঢুকেই গ্রামপ্রধানকে তুলে নিয়ে যায় তালেবান। একদিন পরে তাকে ছেড়ে দিলেও টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ফেরেনি। কলকাতায় গ্রিন টি এর ব্যবসা করে আসাফ। প্রায় তাকে আসামের তিনসুকিয়ায় যেতে হয়। তার তিনসুকিয়া সফর মাথায় ওঠে। বারবার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করে সে উত্তর পেয়েছে- অল দা লাইনস ইন দিস রুট ইস বিজি... শুধু শুক্রবার, জুম্মাবারে গজনি থেকে সেই নারীকণ্ঠ তার কানে যেন মধু ঢেলে দিল... ক্যায়সে হ্যায় আপ?