নথিভুক্ত কোভিড সংক্রমণের কেসে রাশিয়া গোটা দুনিয়ায় এই মুহূর্তে পাঁচ নম্বরে আছে। ভ্যাকসিন সহজলভ্য, তবুও কোভিড-১৯ বাগে আনতে পারছে না রাশিয়া। সর্বশেষ পরিসংখ্যান হলো, রাশিয়ায় কোভিড সংক্রমণ কেস নথিভুক্ত হয়েছে ৭০ লাখের বেশি, মারা গিয়েছেন ১ লাখ ৯৫হাজার ৪১ জন।, ইউরোপে যা সর্বোচ্চ। করোনাভাইরাস সংক্রমণে রাশ টেনে ধরতে রাশিয়ার তিনদিনের সংসদীয় নির্বাচন শুরু হওয়ার আগের দিনই ক্রেমলিনে মারণ ভাইরাস ছড়ানোর খবর ছড়িয়ে পড়েছে। এদিকে ক্রেমলিনে নিজের একেবারে কাছের লোকজন কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় স্বেচ্ছা নিভৃতাবাসে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ৬৮ বছরের রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পুতিনকে সুরক্ষিত রাখতে মহামারীর শুরু থেকে তৎপর রুশ কর্তৃপক্ষ। তিনি রাশিয়ার ঘরের তৈরি স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। বিদেশি নেতা, সাংবাদিক, সরকারি কর্তাদের সবাইকেই পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে স্বেচছা নিভৃতাবাসে থাকতে হয়েছে।
তিনি যে সেলফ আইসোলেশনে যাচ্ছেন, ক্রেমলিনের এহেন ঘোষণার আগে চলতি সপ্তাহেই পুতিন বৈঠক করেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল-আসাদ ও টোকিও প্যারালিম্পিক গেমস থেকে ফেরা অ্যাথলেটদের সঙ্গে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের সাথে একটি দৈনিক সম্মেলন করার সময় বলেছিলেন যে ৬৮ বছর বয়সী পুতিন "একেবারে সুস্থ" কিন্তু ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন। পুতিন ভাইরাসের জন্য কোভিড পরীক্ষা করেছেন কিনা জানতে চাইলে পেসকভ বলেছিলেন "অবশ্যই, তিনি নিজের পরীক্ষা করিয়েছেন ।" তবে কতদিন পুতিন এভাবে স্বেচ্ছানিভৃতাবাসে থাকবেন সেবিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি পেসকভ। সরকারি কর্মকর্তাদের এবং ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির সদস্যদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের সময় পুতিন বলেছিলেন যে তার "ঘনিষ্ঠ বৃত্তে" বেশ কয়েকজন মানুষ ভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছেন , যার মধ্যে একজন স্টাফ সদস্যও ছিলেন যার সাথে তিনি সোমবার পর্যন্ত যোগাযোগ করেছিলেন। ইতিমধ্যেই করোনাকে বাগে না আনতে পারার জন্য সমালোচিত হয়েছে রুশ সরকার। রাশিয়ায় এই মহামারী সর্বোচ্চ স্তরে চলছে, যেখানে প্রতিদিন ৮০০ জন মারা যাচ্ছেন। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্টকে প্রকাশ্যে খুব সময়ের জন্যই মাস্ক পরতে দেখা গেছে , যদিও তিনি বেশ দূরে থেকেই কাজ করেছেন তবুও কোভিড বিধি না মানার জন্য প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। মস্কো ও আরও বেশ কয়েকটি এলাকায় ভ্যাকসিন নেওয়া বাধ্যতামূলক হয়েছে। পুতিনও দেশবাসীকে বারবার ভ্যাকসিন নিতে বলছেন। কিন্তু তাতে সাড়া মিলছে না। রাশিয়া অন্যান্য দেশের থেকে টিকার হারে পিছিয়ে রয়েছে। সাধারণভাবে বিধিনিষেধের অভাব থাকা সত্ত্বেও পুতিন মাঝে মাঝে নিজেকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে চরম পর্যায়ে চলে যান। পেসকভ মিডিয়া রিপোর্ট-এ নিশ্চিত করেছেন যে যারা পুতিনের সাথে ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেন বা তাঁর সাথে ইভেন্টগুলিতে উপস্থিত হন তাদের সময়ের আগে "কঠোর পরীক্ষা" বা পৃথকীকরণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। কর্মকর্তারা গত বছর তার বাসভবন এবং ক্রেমলিনে বিশেষ "জীবাণুমুক্তকরণ টানেল" স্থাপন করেছিলেন, যেখান দিয়ে প্রবেশ করে যে কেউ পুতিনের সাথে দেখা করতে পারতেন। এতো আঁটোসাঁটো ব্যবস্থা থাকলেও এবার পুতিনের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে ঢুকে পড়লো করোনা।
সূত্র : apnews.com