রাজারবাগ পীর ও তার চক্র কর্তৃক দেশব্যাপী দায়েরকৃত গায়েবি মামলার তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেছে ভুক্তভোগী ৮ পরিবার। বুধবার ৭ বছরের শিশু, মহিলা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মাদ্রাসার শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ ৮ জন ভুক্তভোগী আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী শিশির মনির এ রিট দায়ের করেন।
আবেদনে রাজারবাগ পীর ও তার চক্র দ্বারা দেশব্যাপী আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর, মানহানিকর মামলা দায়েরের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে না- এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। এছাড়া রাজারবাগ শরীফ ও পীর দিল্লুর রহমানের সম্পত্তি এবং ব্যাংক হিসাব তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে দুদক চেয়ারম্যানের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে সারা দেশে করা মামলার বিষয়ে একটি তদন্ত চাওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা প্রদানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন। রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইজিপিসহ ২০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিশির মনির বলেন, রিট আবেদনটি বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হবে। তিনি আরও জানান, এই সম্পর্কিত অপর একটি মামলা এই কোর্টেই চলমান।
সামনে শুনানির তারিখ রয়েছে, ওইদিন আমাদের মামলাটি শুনানির আর্জি জানাবো। এসব পরিবারের বিরুদ্ধে যারা মামলা করেছেন, তারা কেউ এক মামলায় বাদী, অন্য মামলায় সাক্ষী।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ৮ পরিবার উপস্থিত ছিল। এদের মধ্যে ছিলেন শিশু আলাউদ্দিন ও তার মা রেজিয়া খাতুন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পঙ্গু জিন্নাত আলী কুতুবী এবং নাজমা আক্তার। জিন্নাত আলী কুতুবী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে বান্দরবানের লামায় তাদের দেয়া জমি দখল করতে রাজারবাগ পীর তার বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করছেন। এক পর্যায়ে তিনি কান্নাকাটি করে বলেন, পঙ্গু হয়েও দীর্ঘ ৮ বছর আমাকে কারাগারে থাকতে হয়েছে। আবার কবে যেন নতুন কি মামলায় কারাগারে যেতে হয়। মামলার বাদীদের কাউকেই চিনি না। অপর ভুক্তভোগী নাজমা আক্তার বলেন, রাজারবাগ পীর চক্রের মিথ্যা মামলায় আমার স্বামী এবং সন্তান আজ জেলে। সন্তান সবেমাত্র উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেছে। ওর ভবিষ্যৎ আজ কারাগারে। ৯০ মিনিটের মধ্যে ভিন্ন দুটি জেলায় তার ছেলের নামে এই চক্রটি মামলা করেছে। মামলাগুলোর ঘটনা একসঙ্গে পড়লেই বোঝা যাবে মামলাগুলো সাজানো।