প্রতারণার মামলায় ইভ্যালির চেয়ারম্যান ও এমডিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)। গতকাল প্রতিষ্ঠানটির একজন সংক্ষুব্ধ গ্রাহক মামলা করার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইভ্যালির এমডি মোহাম্মদ রাসেলের বাসায় অভিযান চালায়। চমকপ্রদ ও লোভনীয় অফারে পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশে ই-কমার্স জগতে বছর দু’য়েক আগে আত্মপ্রকাশ করেছিল ই-ভ্যালি। বহু বেকার যুবক ই-ভ্যালিতে বিনিয়োগ করে জীবিকা উপার্জনের পথ তৈরি করেছিল। প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারে তাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। গতকাল র্যাবের অভিযানের সংবাদ শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন গ্রাহকরা। অভিযান চলাকালীন তারা ইভ্যালির এমডির বাসার বাইরে অবস্থান করেন। গ্রাহকদের চোখে মুখে ছিল দুশ্চিন্তার ছাপ।
সবার মধ্যেই এখন পণ্য বা টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এমডির পক্ষে সেøাগান দিয়েছেন। প্রশ্ন উঠেছে, এমডি ও চেয়ারম্যানের গ্রেপ্তারের পর ইভ্যালির গ্রাহকদের ভাগ্যে কী ঘটতে চলেছে? বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, ই-কমার্স খাতে বিনিয়োগ করে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের দায় সরকার নেবে না। কারণ, ক্ষতিগ্রস্তরা খোঁজখবর না নিয়েই বিনিয়োগ করেছেন। বাংলাদেশে ই-কর্মাস খাত নতুন ও সম্ভাবনাময় একটি খাত। এর বিকাশ ঘটেছে মূলত করোনা মহামারির মধ্যে। এর আগে ছোট ছোট গ্রুপ আকারে প্রচলতি কোম্পনি আইনে ই-কর্মাসগুলো পরিচালিত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য পৃথক কোনো নীতিমালা ছিল না। এই সুযোগে কিছু প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এ রকম ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে আর্থিক অসঙ্গতি থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সুপারিশ করেছে মন্ত্রণালয়। যার প্রেক্ষিতে গতকাল ইভ্যালি চেয়ারম্যান ও এমডির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির একজন গ্রাহক এবং তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানে নেমেছে র্যাব। প্রতারণার ঘটনায় ইভ্যালির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা কী হবে এমন প্রশ্নে ওই কর্মকর্তা বলেন, এটা আইনি প্রক্রিয়ায় সমাধান হতে হবে। কারণ, যারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা লোভের বশবর্তী হয়েই সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। এখানে সরকারের করণীয় কিছুই নেই।