লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পায়ে শিকল পরিয়ে নানাভাবে নির্যাতনের ঘটনায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পানপাড়া বাজার দারুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসায়। খবর পেয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে মাদ্রাসায় গেলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এমন সংবাদ উপজেলাব্যাপী ছড়িয়ে পড়লে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলামকে অপসারণের দাবি জানিয়ে সর্বত্র চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সৃষ্ট ঘটনায় ১৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে স্থানীয় মোহাম্মদীয়া বাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ইং সনে স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী নিয়ে শহীদুল ইসলাম উপজেলার পানপাড়া বাজারে দারুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসা নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরু হয়। শহীদুলের নিজ বাবা মফিজুল ইসলামকে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি, নিজ স্ত্রী রাশেদ বেগম ও নিজের নিকট আত্বীয়কে নিয়ে একটি পরিচালনা কমিটি করে ১১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দিয়ে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করে আসছেন। এরই সুবাদে শিক্ষক গত ১১ই সেপ্টেম্বর মাদ্রাসার নাজেরা বিভাগের ছাত্র আরমানের পায়ে শিকল পরিয়ে সপ্তাহব্যাপী তার উপর অমানবিক নির্যাতন চালায়। এ ছাড়াও একই বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদ হোসেন কে দিয়ে শহীদুল শরীর ম্যাসেজ করিয়েও বর্বর নির্যাতন করেন।
একপর্যায়ে বিষয়গুলি জানাজানি হলে শহীদুল শিক্ষার্থী আরমান ও জাহিদের পরিবারের কাউকে কথা না বলার পরামর্শ দেন।
শিক্ষার্থী জাহিদের পিতা জানান, বাচ্চাদের আরবি শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষ করার জন্য মাদ্রাসায় পড়তে দিয়েছি। হুজুরের এমন কর্মকান্ডের অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। চিন্তাভাবনা করে দেখি জাহিদকে ওখান থেকে নিয়ে আসবো।
শিকল পরা আরমান হোসেনের পরিবারের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ শহীদুল ইসলাম জানান, ঘটনা সঠিক নয়। মূলত আমার মাদ্রাসা থেকে কিছুদিন আগে শিক্ষক আশেক এলাহী তারেককে চাকরিচ্যুত করার কারণে তার সহযোগী আবদুল কাইয়ুমসহ পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। এছাড়াও ভবিষ্যতে আমার এ মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেলে তারেক ও কাইয়ুম আরেকটি নতুন মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্রের জাল তৈরি করেছেন।
রামগঞ্জ মোহাম্মদীয়া বাজার পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এটা গত ২১দিন আগের ঘটনা। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত ছাড়া বিস্তারিত বলা যাবে না।